রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ২৮ জাতের বোরো ক্ষেতে নেক ব্লাস্টের আক্রমণ

মোঃ শামীম হোসেন (বাবু) কিশোরগঞ্জ,(নীলফামারী)॥
আগাম জাতের ব্রী ধান ২৮ বোরো মৌসুমের  ক্ষেতে গতবারের ন্যায় এবারো নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার  বিভিন্ন এলাকায় নেক ব্লাস্টের (পচন) আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগটি। ধানের সোনালি রঙে কৃষকরা খুশি হলেও ধানের শীষ বের হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় রঙটি জ্বলে যাচ্ছে। নেক ব্লাস্টে আক্রান্ত ধানের সোনালি রঙেই শঙ্কিত কৃষকরা। তবে অন্য কোন জাতে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছেনা। শুধু মাত্র ব্রী ধান ২৮। ধানবীজটি রোগ প্রতিরোধ কমে যাওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবার চলতি বোরো মৌসুমে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার ১শ ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ১১ হাজার ২শ ৫ হেক্টর । এর মধ্যে ২৮ জাতের ধান ১৮০০ হেক্টর হাইব্রীট ৭০০০ হেক্টর বাকীগুলো অন্যান্য জাতের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় আগাম জাতের ব্রী  ২৮ বোরো মৌসুমের এই ধানটি আবাদ না করা বা কম করে আবাদের জন্য কৃষকদের কয়েক বছর ধরে কৃষি বিভাগের পক্ষে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কারন বীজটির মধ্যে রোগ প্রতিরোধে সমস্যা দেখা দিয়েছে । এ জন্য অন্য জাতের ধান আবাদে বলা হয়। কিন্তু কৃষকরা অন্য জাতের ধান আবাদ করলেও কোন ভাবেই  আগাম জাতের ব্রী ধান ২৮ হতে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারছে না।
কৃষি বিভাগের পরামর্শ উপেক্ষা করে কেন কৃষক আগাম জাতের ব্রী ধান ২৮ আবাদ করা অব্যাহত রেখেছে সে সর্ম্পকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পুষনা গ্রামের কৃষক অহেদুল ইসলাম বলেন,  এই ধানের  চাল মাঝারি, চিকন ও সাদা, ভাত ঝরঝরে ও ক্ষেতে সুস্বাদু ।স্বাভাবিক ফলন প্রতি হেক্টরে ৫.৫-৬.০ টন ।    এ ছাড়া   চাষের পর জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। তিনি আরো জানান গত ৪/৫ বছর আগে এই জাতে কোন রোগ ছিল না। গত তিন বছর ধরে রোগ দেখা দেয়। কৃষি বিভাগ এটি কম করে আবাদের পরামর্শ দিলেও আমরা কৃষকরা তা কর্ণপাত করছিনা। ফলে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। আমরা কৃষকরা যদি এই ধানের মতোই বিকল্প জাত পেতাম তাহলে উপক্রিত হতাম। তিনি বলেন আমি এবার এই আবাদ কমিয়ে দেড় বিঘা জমিতে আবাদ করেছিলাম। আমার মতো অনেক কৃষক আবাদ করেছে। সকলের একই অবস্থা। আমার পুরো দুই বিঘা জমির ধান আক্রান্ত।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাজেুিমরিয়া গ্রামের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, শুধু ২৮ জাতের ধান নয় আমি দুই বিঘা জমিতে ১১০৫ ও হিরা -২ জাতের ধান লাগিয়েছি। ওষুধ দিয়েও ওই ধান রক্ষা করতে পারলামনা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন ,  ধার-দেনা করে জমি বর্গা নিয়ে ৩০ শতাংশ জমিতে  বোরো চাষ করে এই রোগের আক্রমণে আমার ধান ক্ষেতের তিনভাগের দুই ভাগই নষ্ঠ হয়ে গেছে । জমির একপাশের ব্লাস্ট আক্রমণ কয়েক দিনে অন্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্ত ক্ষেতে ওষুধ ¯েপ্র করেও কাজ হচ্ছে না।
  উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আনিছার রহমান বলেন, এনজিও থেকে  ঋণ নিয়ে খাবার ধানের আশায় দেড় বিঘা বোরো ধান করেছি। ব্লাস্টে আমার পুরো ক্ষেত শেষ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা  কৃষি কর্মকতা এনামুল হক  জানান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় আঠাশ জাতের ধানেই নেক ব্লাস্ট সংক্রমণ হচ্ছে। এ জাতের ধান  জাতে কৃষকরা আবাদ না করে সেজন্য কৃষকদের না করার পরামর্শ দিয়েছি। ব্রি ধান-৫৮, ব্রি ধান-৮১সহ ভাল ভাল জাতের ধান তারা আবাদ করতে পারেন। নেক ব্লাস্ট বিষয়ে আমরা কৃষকদের লিফলেট বিতরণ করছি। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3121309991982571202

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item