অস্ট্রেলিয়ার সর্বোত্তম জ্ঞান আহরণে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান


অস্ট্রেলিয়ার সর্বোত্তম জ্ঞান অর্জনের সুযোগ গ্রহণের জন্য সেদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অস্ট্রেলিয়া সফররত প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি (ডব্লিউএসইউ) পরিদর্শনকালে পরমাত্তা সাউথ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া একটি প্রিয় গন্তব্যস্থল । প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের মাধ্যমে উন্নয়নের পরবর্তী পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, আমাদের আরও বেশি মানবিক ক্ষমতা দরকার। অস্ট্রেলিয়া এক্ষেত্রে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দান এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় প্রশিক্ষণ দিয়ে অবদান রাখতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সভাপতি প্রফেসর বার্নি গ্লোভার, শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ডব্লিউএসইউ বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের বিচার ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্য প্রশিক্ষণদান কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করছে।

অস্ট্রেলিয়া সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। পরমাত্তা সাউথ ক্যাম্পাস, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বাংলাদেশি প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যারা এখানে আছেন তাদের অস্ট্রেলিয়া থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। সমুদ্রসীমার যে সম্পদ আছে সেই সম্পদকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সম্পদ অনেক অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। দেশের সব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাসহ সবকিছু দিতে হবে। দেশ হিসেবে আমরা ছোট, মানুষ হিসেবে বেশি। কাজেই সমুদ্রসম্পদ কিভাবে আমরা কাজে লাগাতে পারি সেজন্য আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। এখানে ব্যবসায়ীরা আছেন, শিক্ষকরা আছেন। এব্যাপারে আপনাদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া উচিত। এখান থেকে শুধু ডিগ্রি নিয়ে যাওয়া না, অনেক কিছু শিখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্লু-ইকোনোমির ব্যাপক উন্নয়নে বাংলাদেশের পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী অর্থায়ন, ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি বিনিময়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মানবসম্পদ সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। যেখানে অস্ট্রেলিয়া প্রশিক্ষণ ও ভোকেশনাল শিক্ষার মাধ্যমে অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী যারা আছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া জ্ঞান তাদের ভালোভাবে অর্জন করতে হবে।

জ্ঞান বিনিময় ও সমুদ্র শাসনে জুডিশিয়ারি ম্যানেজমেন্ট এবং ওশানোগ্রাফিতে প্রশিক্ষণ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়কে ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা করছে।

ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন আমার জন্য আনন্দের, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি আমার হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

১৯৭৪ সালে সংসদে সমুদ্রসীমানা নির্ধারণ আইনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তাভাবনা স্বীকৃতি হিসেবে ইনস্টিটিউট অব ওশান গভর্নেন্সের সামনে জাতির পিতার এই প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার যারা সহযোগিতা করেছিলেন সে কথা বিশেষভাবে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দারুণ সর্ম্পক উপভোগ করছে। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ।

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রথম দিকে যেসব বিশ্বনেতা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব বিশ্বনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন এডওয়ার্ড গফ হুইটলাম। তিনি ১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দুইদেশের সর্ম্পক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোসহ অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে লবিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৯ জানুয়ারি এডওয়ার্ড গফ হুইটলাম বাংলাদেশ সফর করেন। এটি ছিলো অস্ট্রেলিয়ান কোনো সরকার প্রধানের প্রথম ও শেষ সফর।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির কাছে যান এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি সেখানে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। এদিকে ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠনের ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 8106312372912149832

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item