একজন বিদ্রোহী কবি আরেকজন রাজনৈতিক কবি॥ নীলফামারীতে তিনদিন ব্যাপী শেষ হলো জাতীয় নজরুল সম্মেলন

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ২১ এপ্রিল॥
রক্ত-লীলার মধ্যে বাঙলার তরুণরা শুনেছে রুদ্র-বিধাতার অট্ট্রহাসি, কাল-ভৈরবের ভয়াল গর্জন নজরুলের জীবনে কাব্যে, সংগীতে ও তাঁর কন্ঠে। প্রচন্ড সামুদ্রিক জলোচ্ছাসের মতো, লেলিহান অগ্নিশিখার মতো, পরাধীন জাতির তিমির-ঘন অন্ধকারে বিশ্ববিধাতা নজরুলকে এক স্বতন্ত্র ছাঁচে গড়ে পাঠিয়েছিলেন এই ধরার ধূলায়। ১৯৭২ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে কবি নজরুলের প্রথম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ওই “বাণী” দেন। আর এটিই হলো বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল স¤পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রথম তাৎপর্যপূর্ণ উক্তি। বঙ্গবন্ধুর কী অপূর্ব কথামালা! আর কী তার ব্যঞ্জনা! যেনো- কবি নজরুলকে নিয়ে আরেক বিপ্ল¬বী-সত্তার দৃপ্ত উচ্চারণ এবং প্রত্যয়। তাই আমি উচ্চকণ্ঠে আজ বলতে পারি, বঙ্গবন্ধুর উক্ত বক্তব্যর সমান্তরাল আরেকটি বাক্য কারো পক্ষেই লেখা সম্ভব নয়; এবং এর হেতু এই যে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “সত্তা” অভিন্ন। একজন হলেন বিদ্রোহী ও মানবতার কবি, আরেকজন হলেন দেশপ্রেমী ও রাজনীতির কবি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি নজরুলের সৃজনশীল মানসকে ধারণ করেছিলেন আর মনে-প্রাণে ভালোবেসেছিলেন বলেই তো আজ বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল।
একুশ শতকে নজরুল- এ শ্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, দর্শন এবং তার সমস্ত সৃষ্টিকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে নীলফামারীতে  তিন দিন ব্যাপী  জাতীয় নজরুল সম্মেলন-২০১৮ এর সমাপনী অন্ষ্ঠুানে আজ শনিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা তুলে ধরেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর।

সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীমের সভাপতিত্বে ‘বিদ্রোহী কবি ও বঙ্গবন্ধু’ বিষয়ক আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন নজরুল একাডেমীর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা, একাডেমীর অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম, সৈয়দপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. আমির আলী আল আজাদ, নীলফামারী জেলা স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক ডা. মুজিবুর হাসান চৌধুরী শাহিন।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আরও বলেন নজরুল ও বঙ্গবন্ধুর অভিন্ন “সত্তা” কে আমরা দেশের তৃণমুল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে চাই। তাই  দেশের প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নজরুল সম্মেলন। যেমনটি নীলফামারীতে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো। আমরা মনে করি নতুন প্রজন্মের আজকের কিশোরী কিশোরী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কবি নজরুল ও রাজনৈতিক কবি বঙ্গবন্ধু জীবনী তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাবে।


নজরুল একাডেমীর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা তার আলোচনায় উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রবল প্রজ্ঞা পরম মানবিকতা মহত্তম উদারতার ফলে আজ বাংলাদেশের জাতীয় কবির সর্বোচ্চ সম্মানিত আসন অলঙ্কৃত করেছেন নজরুল। যা সমগ্র জাতির কাছে অতীব গৌরবের বিষয়। নজরুলের কবিতা আজ বাংলাদেশের রণসংগীত আর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আমাদের জাতীয় সংগীত, এসবই হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম আর মানবপ্রেমের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের শুভলগ্নেÑ সুনির্দিষ্ট নির্দেশে। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান কবিতায় যেভাবে মুগ্ধ হয়েছেন কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান কবিতায়ও দারুণভাবে উজ্জীবিত অনুপ্রাণিত হয়েছেন বিধায় মহান মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতা অর্জনের সাথে সাথে অমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেননি।

সৈয়দপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. আমির আলী আল আজাদ তার আলোচনায় বলেন, পরাধীন বৃটিশ-ভারতে সাহিত্যের আকাশে কবি নজরুলের আবির্ভাব একেবারে ধূমকেতুর মতো; ১৯১৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে ‘হাবিলদার কাজী নজরুল ইসলাম’ পরিচয়ে লিখতে শুরু করে রাতারাতি বনে গেলেন,“বিদ্রোহী কবি”। এরপর লিখলেন মাত্র ২২ বছরের একটু বেশি। আর তাতেই হলো কিস্তিমাৎ। গোটা ভারতবর্ষ ছাপিয়ে তার অকুণ্ঠ সাহসী উচ্চারণ ছড়িয়ে পড়লো বিশ্বময়- আমি চির বিদ্রোহী বীর,- বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা, চির-উন্নত শির। তখনকার উচ্চবর্ণের কবি-সাহিত্যিকরা এতে প্রমাদ গুনলেন; নজরুল-বিরোধিতার ঝড় উঠলো! 

আমাদের দেশের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, ভারতের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামের কাজী ফকির আহমদের ঘরে জন্ম নেয়া একদার দুখু মিয়া কাজী নজরুল ইসলাম কেনো এবং কী প্রকারে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবি হলেন? তাঁকে কেনোইবা এদেশে এনে জাতীয় কবি মর্যাদায় ভূষিত করা হলো? এসব প্রশ্ন অবশ্যই শুরুত্বপূর্ণ। আমরা এর সহজ এবং ¯পষ্ট সমাধান খুঁজে পাই- বাঙালি জাতির পিতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি অবিস্মরণীয় ঐতিহাসিক রাজনৈতিক মন্তব্যে। আমাদের জানতে হবে, বিদ্রোহী নজরুলের প্রতি বঙ্গবন্ধু মুজিবের হিমালয়সম শ্রদ্ধা-ভালোবাসার উৎস বা কারণগুলো। আর সে সমস্ত বিষয় নতুন প্রজন্মের সামনে ¯পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে- একটি কল্যাণময় রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের নিমিত্তে। বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য বঙ্গবন্ধু যে অমূল্য অবদান রেখে গেছেন তা কেউ কোনোদিন ভুলতে পারবে না। অনন্তকাল বাঙালি জাতির ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এদেশের মাটি মানুষের গণদুশমনরা আজও ইতিহাস বিকৃতির ঘৃণ্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যাদের কোনো অতীত ইতিহাস নেই, রাজনৈতিক আদর্শ নেই। যারা এদেশের কল্যাণ চায় না, এদেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু ধ্বংস করে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় সারাক্ষণ সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত থাকতে চায়। জাতির পিতা আর জাতীয় কবির সুদীর্ঘ অহিংস রক্তপাতহীন মানবিক আন্দোলন সংগ্রামের মূল সুরই ছিল অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন সাম্য-শান্তি আর প্রগতির চিন্তা-চেতনায় কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন।

নীলফামারী জেলা স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক ডা. মুজিবুর হাসান চৌধুরী শাহিন তার অলোচনায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম আর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে প্রিয় স্বাধীনতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে বড় বিনয়ের সাথে অনুরোধ করে বলেছিলেন, মাইডিয়ার সিস্টার আপনার কাছে আমার একটি আবদার আছে আপনি যদি রাখেন তা হলে বলতে পারি। নিশ্চয়ই বলবেনÑ আমি অবশ্যই তা রাখব। সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু বললেন, বিদ্রোহী কবিকে আমাকে দিতে হবে। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীও সাথে সাথে বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই আপনি চাইলে তা-ই হবে, কবে কীভাবে আনতে চান সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ওপর বিশ্বাস রেখে বঙ্গবন্ধু সেভাবেই বাংলাদেশ থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক স¤পাদক মুস্তাফা সারওয়ারকে প্রধান করে একটি কমিটি ভারতে পাঠিয়ে দিলেন ১৯৭২ সালের মে মাসে। ৭২ এর  ২৪ মে রাতে কবির ৭৩তম জন্মদিনে বাংলাদেশে এসে পৌঁছলে বঙ্গবন্ধু কবিকে জন্মদিনের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নিলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে কবির সম্মুখে অনেকক্ষণ বসেছিলেন। বাকরুদ্ধ কবির অসুস্থতা দেখে বঙ্গবন্ধুর অনেক খারাপ লেগেছিল। কবিও তখন দীর্ঘসময় ধরে অবাক দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকিয়েছিলেন। অনেক রাজনৈতিক নেতা, জ্ঞানী-গুণীরা বলে থাকেন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ কখনও এভাবে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারত না। আমার কথা হলো বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে এবং বঙ্গবন্ধু না থাকলে কবি নজরুল কখনও বাংলাদেশের জাতীয় কবি হতে পারতেন? না, অবশ্যই না। আজ সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো মহান স্বাধীনতার দীর্ঘ প্রায় ৪৭ বছর গত হতে চলল, অথচ আজও আমরা দল মত নির্বিশেষে জাতির পিতাকে যথাযথ তার প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন করতে শিখিনি।
যারা পঁচাত্তরের মধ্য আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ড সংঘটিত করার মধ্য দিয়ে, জাতির মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিভাজনের বিষবা®প, সে কারণেই রাতারাতি বাঙালি জাতীয়তাবাদ মুছে ফেলে হয়ে যায় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এসব ঘৃণ্য চক্রান্ত হয়েছিল পাক-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ গোষ্ঠীর দ্বারা। যা ছিল বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবন রাজনৈতিক প্রবল প্রজ্ঞাকে অস্বীকার করার অশুভ অপকৌশল। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিকদের মাঝে এমন সব জঘন্য মিথ্যাচারের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে বিভ্রান্তির শেষ সীমান্তে নিক্ষেপ করার কারণে আজও আমাদের জাতির পিতাকে খাটো করার, তার অমূল্য অবদানকে অস্বীকার করার দেশীয় আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারী গোষ্ঠী অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আলোচনা সভার সভাপতি নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জেলা পর্যায়ে জাতীয় নজরুল সম্মেলনের গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে কিশোরী কিশোরী, শিক্ষার্থী সহ আমরা কাজী নজরুল ও বঙ্গবন্ধুর এক সুত্রে গাঁথার অভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। এ জন্য নীলফামারীবাসীর পক্ষ হতে এই সম্মেলনের আয়োজনকারী  নজরুল একাডেমী ও সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়কে ধন্যাবদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা পর্ব শেষে এই নজরুল সম্মেলন ঘিরে নীলফামারীতে ৫দিন ব্যাপী শুদ্ধ বাণী ও সুরে নজরুল-সংগীত প্রশিক্ষক সৃজনের প্রশিক্ষণ কোর্সের ৫০ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। এরপর নজরুলের জীবন-পরিক্রমার উপর তথ্যচিত্র প্রর্দশন করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়।
জাতীয় নজরুল সম্মেলনের সর্বশেষ আয়োজন ছিল ঢাকা আর্ট থিয়েটারের পরিবেশনায় কবি নজরুলের নাটক ‘পুতুলের বিয়ে’।

তিনদিন ব্যাপী নজরুল সম্মেলনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষজনের উপচে পড়া ভিড় ছিলো। সকল বয়সের মানুষজন উৎসাহের সাথে কবি নজরুল ইসলামের জীবনী সম্পর্কে নতুন ভাবে না জানা কথা উপলন্ধী করতে পেরে নিজেদের ধন্যমনে করেছে।
উল্লেখ যে গত বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এই সম্মেলনের উদ্ধোধন করেছিলেন কবি পৌত্রী ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খিলখিল কাজী।এ ছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত থেকে  সংগীত পরিবেশন করেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ,ফাতেমাতুজ জোহরা, অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল ও জান্নাতুল ইসলাম কবীর। ইয়াকুব আলী খান, আফসানা রুনা, মিতা চক্রবর্তী, রুমি আজনবী ও নীলফামারী জেলার শিল্পীবৃন্দ।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 6348087934491265383

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item