দেশের প্রথম বাণিজ্যিক উট পাখির খামার গড়ে উঠেছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে

মেহেদেী হাসান উজ্জ্বল, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে দেশের প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে গোড়ে তোলা হয়েছে উট পাখির খামার। উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মালিপাড়া (নয়াপাড়া) গ্রামে এই খামারটি গড়েছেন। নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের আঃ জলিলের মেয়ে আরজুমান আরা। আরজুমান আরা তার খামারের নাম রেখেছেন ইকো এগ্রো ফার্ম।
খামারের সত্ত্বাধিকারী আরজুমান আরা বলেন, দেশের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে প্রদর্শনের জন্য বা কোন প্রতিষ্ঠানে গবেষণার জন্য উট পাখি থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে দেশের কোথাও উটপাখি  লালন পালন হয় না। তাই বাণিজ্যিক ভাবে এ পাখির খামার গড়ে তুলতে। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার (মাদার ব্রিডার ফামর্) থেকে প্রতিটি উট পাখির বাচ্চার মুল্য ১৫হাজার টাকা করে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ২৪টি উট পাখির বাচ্চা আমদানি করেন তিনি। এর পর উট পাখি গুলি তিনি ইকো ফার্মে লালন পালন শুরু করেন। উট পাখিগুলোর বর্তমান বয়স ৬ মাস,বর্তমানে এর ওজন  হয়েছে এক একটি ৮০ থেকে ৯০ কেজি করে । কিছুদিন আগে একটি উট পাখি জবাই করা হয়েছিল তাতে প্রায় ৪০ কেজি মাংস হয়েছে।
এ ব্যপারে আরজুমান আরো জানান,  গরু-ছাগলের বিকল্প হিসেবে তিনি উট পাখি পালন করছেন। তার ভাষায় একটি গরু বছরে একটি মাত্র বাছুর দেয়। আর একটি উট পাখি বছরে প্রায় ৫০ থেকে ৭০টি ডিম দিয়ে থাকে, যা থেকে কমপক্ষে ৫০টি বাচ্চা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরজুমান আারা বলেন কোলেস্ট্রোল মুক্ত বর্তমানে উট পাখির মাংসের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৯০ ডলার । এর মাংসও অত্যান্ত সুস্বাদু। উটপাখি একটানা ৭০ কি.মি. গতিতে দৌড়াতে পারে। সাধারনত এরা আড়াই থেকে তিন বছর বয়সে ডিম দেয়া শুরু করে। এদের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে সবজি এবং ফিড।
আমার খামারে নিজস্ব ডিম ফুটানো মেশিন আছে তাই  উট পাখির ডিম আমার খামারের নিজস্ব মেশিনে বাচ্চা ফুটানোর পর এক একটি বাচ্চা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলে আমি মনে করি।
এ ব্যপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ  নাসিরুল ইসলাম জানান, উটপাখি পালনে তিনি চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন। তার ভাষায় উটপাখি পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।
কেন উটপাখির খামার করলেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে আরজুমান আরা জানান, তিনি মালয়েশিয়া ও নেপাল সফর করেছেন। সেখানে উটপাখি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেন।আর তিনি মনে করেন অন্যান্য ব্যাবসার চেয়ে এ ব্যাবসায় বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব এবং এর খাদ্য খুব সহজ লভ্য হওয়ায় তিনি উটপাখির খামার করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
উল্লেখ্য, আরজুমান আরা ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে  মাত্র ১০০ টার্কি মুরগি দিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে টার্কি মুরগি রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। এই খামারের পাশাপাশি তিনি উটপাখির খামার গড়ে তুলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসাবে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই আরজুমান আরাকে বিশেষ সম্মাননা সনদ কর্তৃক প্রদান করা হয়।

পুরোনো সংবাদ

দিনাজপুর 2646256792621777704

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item