ঠাকুরগাঁওয়ে ইট তৈরির কারিগরদের কষ্টে ভরা জীবন

আব্দুল আওয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে সময়ের সাথে গড়ে উঠেছে বহুতল দালান কোঠা। বলি আর সিমেন্টে ইটের পর ইট গাঁথুনি দিয়ে গড়ে উঠেছে এসকল ভবন। বিলাসী জীবন যাপনে ইটের তৈরী বাড়ি যেন অপনিহার্য। কিন্তু রোদে পুরে এই ইট যারা তৈরি করেন,সেই ইট শ্র্রমিকদের বইতে হয় দূর্বিষহ জীবন। স্বল্প মুজুরির পাশাপাশি বছরের ছয়মাস ইটভাটা বন্ধ থাকায় খুঁজতে হয় অন্য জীবিকা। তারপরও  পেশা আর  জীবিকার তাগিদে বার বার তার ফিরে আসেন এই পেশায়। অন্যের বাড়ির ইট বানালেও, নিজের বাড়ির জন্য সেই ইট যেন অধরায় থেকে যায় তাদের।
তেমনেই এক ইটের কারিগর কাদেরুল ইসলাম। গত ২০ বছর ধরে কাজ করছেন ঠাকুরগাঁও এম এম এস ভাটায় । নিজের কারিগরি দক্ষতায় জীবনে ইট বানিয়েছেন অনেক। কিন্তু সেই ইট নিজের বাড়ি বানাতে কাজে লাগেনি কখনো। এক সময় নিজের বাড়ি বানানোর  স্বপ্ন দেখলেও  আজ যেন তা মরিচীকা।

ইট শ্রমিকদের জীবন যাত্রা নিয়ে জানতে কথা হয় তার সাথে। সাম্প্রতি দেশ কালকে  তিনি বলেন, গত ২০ বছর ধরে বছরের ৬ মাস করে এমন, ইট ভাটায় কাজ করছি। এই দু’হাতে দিয়ে লক্ষ লক্ষ ইট বানিয়েছি। আর সেই ইট গিয়েছে অন্যের  বাড়ির উপকরণ হিসেবে। কিন্তু এতো ইট বানিয়েও কখনো নিজের বাড়ির ইট বানানোর সৌভাগ্য হয়নি।বাড়ির ইট  তো দুরের কথা,খাটের নীচেও কোন ইট দিয়ে ঠিকা দিতে পারি না। এখন কাজ করে যে মুজুরি পাই,সেই টাকা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোন রকম ডাল-ভাট খেয়ে জীবন চলে। অর্থের অভাবে তিন ছেলে মেয়েকেও লেখাপড়া করতে পারিনি। নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই ইট ভাটায় কাজ করি। আর বাকি সময় অন্যের ভ্যান চারিয়ে সংসার চালাই।

ভাটার কাজ করতে আসতে হয় সর্দারের মাধ্যমে। পুরো ৬ মাসের জন্য সর্দারই শ্রমিকের সঙ্গে চুক্তি করেন। কাজ শুরু হওয়ার আগে সর্দার কিছু টাকা অগ্রীম দিয়ে শ্র্রমিককে দাদন দিয়ে রাখেন। ইট বানানোর কারিগরদের দেয়া হয় সবচেয়ে বেশি টাকা। ৬ মাসের জন্য  কারিগর প্রতিদিন ১৭-১৮ ঘন্টা কাজ করে ১ লাখ, জোগালি ৪৭ হাজার , আগাটক  ৭০ থেকে ৮০ হাজার ,গোড়ারটাক ৭০ থেকে ৮০ হাজার মাটি বহনকারী ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। আবার প্রতিদিন কাজ শেষে দেওয়া হয খোরাকি। সাতদিন এই খোরাকি জনপ্রতি শ্রমিক পান ৩০০-৫০০ টাকা করে।
পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুদেরও কাজ করতে দেখা যায় এই সকল ইট ভাটায়। শেফালী বেগম নামের এক ইট প্রমিক বলেন, স্বমী আর সন্তানদের নিয়ে নিজেও কাজ করেন এই ভাটায়। ভাটার আগুনে ইট পোড়ার মতো তাদের জীবনও যে পুড়ে শেষের পথে। একসময় অন্যের মাধ্যমে এই কাজ পেতেন। কয়েক বছর ধরে নিজে সর্দার হয়েছেন।



শুধু নারীরাই নয়,১৩ বছর বয়সী আশিক নামের এক শিশু প্রমিকের দেখা মেলে এক ইট ভাটায়। স্কুর ছেড়ে তিন সপ্তাহ ধরে ইট বানানোর কাজে যোগ দিয়েছে সে।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 4644243598142145075

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item