পীরগাছায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক জীবিত গাছকে মৃত দেখিয়ে কর্তন!

ফজলুর রহমান,পীরগাছা(রংপুর):
সরকার যখন দেশে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তখন রংপুরের পীরগাছায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষ নিধন কর্মসূচি হাতে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত এক মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজোসে উপজেলার ১৫ টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশতাধিক জীবিত মূল্যবান গাছ কর্তন করা হয়েছে।
একাধিক অভিযোগে জানা যায়, উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ কর্তন করা বন্ধ ছিল। হঠাৎ করে গত একমাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গাছ কর্তনের মহোৎসব শুরু হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা তাদের প্রতিষ্ঠানে থাকা অনেক মূল্যবান গাছ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কর্তনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা বন কর্মকর্তা গাছ কর্তনের বিষয়ে তদন্ত করে অযুক্তিক কারণ দেখিয়ে গাছ কর্তনের বিষয়ে সুপারিশ করেন। পরে গাছের প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দরপত্র আহবান করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা গাছগুলো ক্রয় করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তদন্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে নাম মাত্র মূল্য নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষকে দরপত্র আহবানের সুপারিশ করেন। পরে প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা কম মূল্যে গাছগুলো ক্রয় করে কালোবাজারে বিক্রি করেন। এতে লাখ টাকা মূল্যের গাছ ২০/২৫ হাজার টাকায় ক্রয় করা সম্ভব হয়। এর জন্য কর্তৃপক্ষকেও মোটা অংকের উৎকোচ দিতে হয়।
এলকাবাসীর অভিযোগ, কোন যুক্তিক কারণ ছাড়াই মাঠের ছায়াবর্ধক ও প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য বহনকারী জীবিত গাছগুলি কর্তন করা হচ্ছে। গত এক মাসে উপজেলার কান্দি আর আই ফাজিল মাদ্রাসা, সারা মেমোরিয়াল নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসা, চৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, পবিত্রঝার নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিমদেবু দাখিল মাদ্রাসাসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির জীবিত গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। আরো প্রায় ১২টি প্রতিষ্ঠানের জীবিত গাছ কর্তনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানা যায়।
উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্তৃপক্ষের নিকট করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার কান্দি আর আই ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গোপনে সাতটি জীবিত গাছ কোন কারণ ছাড়াই সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের যোগসাজোসে বিক্রি করেন। বিক্রয়কৃত অধিকাংশ গাছ পৈর্তৃক সূত্রে পাওয়া জমির উপর বলে আব্দুল মান্নান দাবী করেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে কর্তনের অপেক্ষায় থাকা গাছ ও জমি নিয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারনাধীন থাকার পরেও অধ্যক্ষ গাছগুলি গোপনে বিক্রি করেন বলে অভিযোগে জানা যায়।
এলাকার পরিবেশবাদী আব্দুল শেখ জানান, পীরগাছা উপজেলায় এক সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এতোগুলি গাছ কর্তন নজীর বিহীন। ইতোপূর্বে এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন জীবিত গাছ কর্তন করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবির জানান, নিয়ম মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 7048883287943419527

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item