পীরগঞ্জে করতোয়ার বালুচরে দিগন্ত জুড়ে দৃষ্টি জুড়ানো সবুজ ফসলের ক্ষেত!

মামুনরু রশিদ মেরাজুল, পীরগঞ্জ (রংপুর) ঃ
পীরগঞ্জে টুকুরিয়া, বড়আলমপুর চতরা ও কাবিলপুর এই ৪ ইউনিয়নের সিমান্ত ঘেষে প্রবাহিত করতোয়া নাদী। বর্নিত ইউনিয়ন গুলোর ওই নদীর তীরবর্তী গ্রাম সমুহের কৃষকের ফি বছরই জমি জিরাত, ঘরবাড়ি ভাঙ্গনের কারনে করতোয়ার গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় অনেক পরিবার নি:স্ব হয়ে পড়ে। অভাব অনাটন হয় তাদের নিত্যদিনের সাথী।
দীর্ঘ সময় পর সেই করতোয়ার জেগে ওঠা বালু চরে এখন সবুজের সমারোহ। ক’বছর আগেও যেখানে কোন ফসল ফলতোনা, সেখানে এখন দিগন্ত জুড়ে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। বালুচরের জমিগুলো এখন আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে করতোয়ার দ’ুপাড়ের তীরবর্তী গ্রামের কৃষকদের। গম, ভুট্রা, গোল আলু, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, টমেটোসহ বিভিন্ন প্রকার রবি ফসলের চাষাবাদ করে পরিবারে সচ্ছলতা এনেছে অনেকেই।
 চর এলাকার গ্রাম কুয়াতপুরের বাসিন্দা মমিনুর, হবিবর, গিলাবাড়ীর হাকিম, মাটিয়ালপাড়ার  মনসুর আলী, কুমারপুরের মোস্তাফিজার,ঘাষিপুরের নুর মোহাম্মদ,বোয়ালমারীর রহিম, জয়ন্তিপুরের ফুল মিয়া, শিমুলবাড়ি গ্রামের জহের আলী, বাঁশপুকুরিয়ার কৃষক  ফারুক, সহিদুল ইসলাম জানান-ক’বছর আগেও এলাকার মানুষের সংসারে অভাব-অনাটন লেগেই ছিল। বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। করতোয়া নদীর ধারে জেগে ওঠা বালুচরের জমিগুলোতে বন্যায় পলি জমে যাওয়ায় সেগুলো এখন কৃষি জমিতে পরিনত হয়েছে। রবি মওসুমে সেচের মাধ্যমে ওইসব জমিতে রবি ফসল চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেকেই। বর্তমানে উলে¬খিত গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে । গুরুত্বপুর্ন বেশ ক’টি রাস্তা পাকা হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ফলে করতোয়ার তীরবর্তী পিছিয়ে থাকা গ্রাম গুলো আলোকিত হচ্ছে। মানুষ এখন তাদের সন্তানদের স্কুল কলেজ মুখি করেছে।
উলে¬খিত গ্রামএলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক সময়ের ধূ-ধূ বালুচরে এখন সবুজের সমারোহ। কাঁচা মরিচ, টমেটো, গম, ভুট্রা, গোলআলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু বেগুনসহ নানা ধরনের রবি ফসলের চাষে ভরে গেছে। যেন দিগন্ত ছোয়া দৃষ্টি জুড়ানো সবুজ ফসলের ক্ষেত! যে জমিতে কোন ফসল ফলতো না । সেই জমিতে একরের পর একর ভুট্রার চাষ হয়েছে। গত বছর ভুট্রার বাম্পার ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় উপজেলার চাষিরা এবার বেশী করে ভূট্টার চাষ করেছে। গাছও ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়  ভূট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছে চাষীরা।
ঘাষিপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট কৃষক ও চতরা ইউপির সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন- শুধু বালু আর বালুর কারনে করতোয়ার পাড়ে আমাদের প্রায় ৪/৫একর জমিতে আগে কোন ফসল চাষ  হতোনা। এখন সেগুলোতে ভুট্টা, টমেটো, গোল আলু, মিষ্টি আলু, মরিচসহ ইত্যাদী  রবি শস্য চাষ হচ্ছে। প্রতি একরে প্রায় ১২০ মন ভুট্টা, ১২০ থেকে ১৩০ মন গোল আলু, প্রায় ১৩০ মন পর্যন্ত টমেটোর ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন- গোল আলুর জমিতে সাথী ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করে চর এলাকার কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছে এবং হচ্ছে। তারবাড়ি দেখিয়ে দিয়ে বলেন, বাড়ী ভেঙ্গে যাওয়ায় সরিয়েছি ৫/৬ বার। এখন যেখানে বাড়ি দেখছেন  এটিও কয়েক বছরের মধ্যে সরাতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র ঘোষ বলেন- এ বছর উপজেলায় ৯৩  প্রদর্শনী প¬টসহ সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। ভুট্রা,মরিচ টমেটো ও মিষ্টি আলুর চাষ করতোয়ার চর এলাকায় তুলনামূলক বেশী। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে উ্েল¬খিত জমি গুলোর উপযোগি অন্যান্য ফসল চাষে নানা ধরনের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে কৃষকদের উদসাহিত করা হচ্ছে। চিনা বাদাম ও মশুরের ডাল চাষও হচ্ছে। খাদ্যের মতো যাতে  অন্যান্য ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে কৃষকরা সফলতা অর্জন করতে পারে সেলক্ষ্যেই পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
আরও কয়েকটি গুরুত্ব পুর্ন রাস্তা পাকা করার দাবীও জানান তারা।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 8112733630092125158

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item