সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই . . . সৈয়দপুর সেনানিবাসে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

 তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ বলেছেন - বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীতে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জামাদি। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আধুুনিকায়নে বর্তমান সরকার বেশ কিছু যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।
তিনি  বুধবার (২৮ মার্চ) নীলফামারীর সৈয়দপুর সেনানিবাসে ৫ম ইএমই কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্যারেড শেষে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে একথাগুলো বলেন। বেলা সাড়ে ১১ টায় সৈয়দপুর সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন নুরুল আবছার প্যারেড গ্রান্ডে আয়োজিত প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে সীমিত সম্পদ দ্বারা জাতির পিতা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠনের উদ্যোগেী হন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই বর্তমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গোড়াপত্তন হয়। বঙ্গবন্ধু সব সময়ই আধুনিক, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সামরিক বাহিনী একটি চৌকস্, দক্ষ ও পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ইতোধ্যেই আমাদের সেনাবাহিনীতে নতুন নতুন সরঞ্জামাদি প্রবর্তন করা হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এ সব আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম মেরামত করতে গিয়ে ইএমই কোরের পেশাগত চ্যালেঞ্জ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এই কোরের সকল সদস্যকে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
দেশের যে কোন প্রয়োজনে মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ ও ‘অপারেশন  টোয়াইলাইট ’ এর মাধ্যমে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ যে কোন জাতীয় সমস্যা মোকাবেলায় সেনাবাহিনী তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে। সেনাবাহিনী মিয়ানমার হতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমারের নাগরিকদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে দায়িত্ব গ্রহনের পাশাপাশি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা ও চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতায় দিবা-রাত্রি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেনাবাহিনী ও দেশের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করে তুলেছে।
 তিনি সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণ সকলকে শৃংখলাবদ্ধ রাখে, পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, দক্ষতা বাড়ায়-সর্বোপরি আনুগত্য বাড়ায়। তাই আপনাদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে। ইএমই সেন্টার এন্ড স্কুল, ইএমই কোর সদস্যদের প্রাণকেন্দ্র। কোরের জন্য চৌকস্ সেনা সদস্য প্রস্তুত করতে এ প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০১৪ সাল থেকে পুরুষ রিক্রুটদের পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠান মহিলা রিক্রুটদেরও  প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলছে। তাদের এ অগ্রযাত্রা ভবিষ্যতেও  অব্যাহত থাকবে বলে আমার দৃঢ়  বিশ্বাস।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন বর্তমান সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে ইএমই কোরের সামগ্রিক সাংগঠনিক ও অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। নতুন ইউনিট স্থাপনসহ ইএমই কোরের জনবল বৃদ্ধির উদ্যোগ, বৈদেশিক মিশন ও প্রশিক্ষণের সুযোগদানের মাধ্যমে ইএমই কোরের কর্মকান্ড যথেষ্ঠ গতিময় হয়েছে। কার্যকরী কমান্ড চ্যানেলই সেনাবাহিনীর যে কোন কাজ সমাধনে সক্রিয় ভ’ূমিকা রাখে। সকল স্তরের কমান্ডারদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও তাদের প্রতি আনুগত্য থাকলে যে  কোন কাজ দক্ষতা ও শৃঙখলার সাথে সমাধা করা সম্ভব।  নেতৃত্বের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রেখে সকল কাজে আপনারা এগিয়ে যাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।
পুনর্মিলনী প্যারেডের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ “ইলেকট্রিক্যাল এন্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স সেন্টার এন্ড সউকল” এর প্রশিক্সণ এলাকায় একটি আম গাছ রোপন করেন। এরপর তিনি ইএমই কোরের কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য এবং শহীদ পরিবারবর্গের সাথে প্রীতিভোজে অংশ  গ্রহন করেন।
এর আগে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রাষ্ট্রপতি সৈয়দপুর এসে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, কর্নেল কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান, রংপুর ৬৬ পতাতিক ডিভিশন এর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং  (জিওসি) ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক, কমান্ড্যান্ট ইএমই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আনোয়ারসহ উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
 প্যারেড অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্যবৃন্দ, উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দসহ ইলেকট্রিক্যাল এন্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড স্কুল এর অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত এবং অন্যান্য পদবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৭ মার্চ সৈয়দপুর সেনানিবাসে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুই দিনব্যাপী  ইএমই কোরের কর্নেল কমান্ড্যান্ট অভিষেক অনুষ্ঠান, বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন - ২০১৮ এবং ৫ম ইএমই কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 5433423574545907727

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item