কৃষি আমাদের দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি : প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষি আমাদের দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। দেশের কৃষি উৎপাদনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বে আমরা জায়গা করে নিয়েছি। ধান, মাছ, মাংস, আম, পেয়ারা ও ছাগল উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ধান উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কৃষি খাত পিছিয়ে পড়েছিল। সার চাওয়ায় কৃষককে হত্যা করেছিল বিএনপি সরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কৃষকের ঘরে ঘরে সার পৌঁছে দিয়েছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বুধবার চালু করা কৃষি বাতায়ন ও কৃষক বন্ধু ফোন সেবার কথা উল্লেখ করে বলেন, এখন কোনো কৃষক চাইলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে তারা কৃষিকাজ করতে পারবেন।


সরকারের নানা ভর্তুকি ও প্রণোদনার ফলে কৃষি খাত দিনে দিনে অগ্রগতি লাভ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও গবেষণার ওপর বেশি জোর দিয়েছে সরকার। কৃষক চাইলে এখন সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে তার কৃষিকাজ করতে পারবেন। এ প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের কৃষকরা ধান উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছেন।  
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ করায় কৃষিতে আধুনিকায়ন ঘটছে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের কৃষি সমাদৃত হচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে কৃষিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন দৃশ্রমান হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি দেশে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। ’৯৮ সালের বন্যায় দেশের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। বিশ্বব্যাংক বলেছিল মানুষ খাবার না পেয়ে মারা যাবে। কিন্তু একটা মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। ’৯৮ সালেই ঘাটতি পূরণ করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরও বারবার বৃষ্টি ও বন্যায় হাওরে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখন আমরা মজুদের ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রত্যেক এলাকায় খাদ্য মজুদের ব্যবস্থার চিন্তা বঙ্গবন্ধুও করেছিলেন। আমরা নদীনালা ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। সব খাল, বিল, পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই কাজ করা হবে। ফলে জলাশয়গুলোর পানি ধারণের ক্ষমতা বাড়বে এবং মাছের উৎপাদনও বাড়বে। মৎস্য উৎপাদনেও আমরা এখন বিশ্বে চতুর্থ। আমরা সেচের জন্য মাটির ওপরের পানির ব্যবহারের দিকে নজর দিচ্ছি। সেচের জন্য বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছি।


তিনি বলেন, ২ কোটির বেশি কৃষক কার্ড পেয়েছেন। ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। গবেষণার ফলে সারা বছরই সব সবজি পাওয়া যায়। ১২ মাস সবকিছুই হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক শিল্পও আমাদের লক্ষ্য। যে এলাকায় যেটা ভালো হয় সেটার উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশে রফতানির ব্যবস্থাও করবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন কৃষিতে। এ করণে তিনি জানতেন, কৃষিই বদলে দিতে পারে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে কৃষি উন্নয়নে অনুপ্রেরণা জোগাতে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন। তিনি উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবদ, উন্নতবীজ, সার, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্ব-নির্ভরতা অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে কৃষির সার্বিক উন্নয়নে কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সার, বীজসহ সব কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস, কৃষকদের সহজ শর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ এর পদক পরিয়ে দেন। পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে ৫টি স্বর্ণ পদক, ৯টি রৌপ্য পদক এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক প্রদান করা হয়।



পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 6568872501047114402

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item