সৈয়দপুর কারখানায় মেরামতকৃত রেলকোচের পরীক্ষামুলক যাত্রা

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২ ফ্রেরুয়ারি॥
দেখে মনে মনে হবে সদ্য বিদেশ থেকে আমদানী করা ঝকঝকে যাত্রীবাহী রেলকোচ। আসলে তা নয়, মিটারগেজের এই রেলকোচগুলো দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পড়েছিল। যার সংখ্যা ১৮টি। নব্বই দশকে এই রেলকোচগুলো ইরান হতে আমদানী করা হয়েছিল। এই রেলকোচের মধ্যে তিনটি কোচ মেরামত করে পরীক্ষামুলক যাত্রা  শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে পার্ব্বতীপুর জংসন হয়ে দিনাজপুর,ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল শুরু হয়। ধবধবে সাদা জমিনে জাতীয় পতাকার রঙ লাল-সবুজ রেখায় সজ্জিত করে বিশ্বমানে রুপান্তর করা হয়েছে কোচগুলো বাংলাদেশের সৈয়দপুর কারখানায়।
সকালে মোনাজাতের মাধ্যমে মেরামতে সচল করা তিনটি কোচ নিয়ে সৈয়দপুর থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে পরীক্ষামুলক ট্রেনটি। ১৫২ কিলোমিটারের এ রুটে কোচগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পথে  ক্রটি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা সমাধান করা হয়।
পরীক্ষামূলক এ ট্রেনের যাত্রী ছিলেন সৈয়দপুর কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা, রেলওয়ে কারখানার ওয়ার্কস ম্যানেজার আমিনুল হাসান, রেলওয়ে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একদল সাংবাদিক। দিনাজপুর রেলষ্টেশনের পর ট্রেনটি যখন ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় অভিমুখে ছুটে চলছিল ৮০ কিলোমিটার বেগে তখন রেললাইনের দুই ধারে  বিভিন্ন গ্রারে মাানুষজন নতুন ট্রেন দেখতে ছুটে আসতে থাকে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ইরানি ১৮টি কোচের সুপার স্ট্রাকচার (মূল কাঠামো) নষ্ট হলেও এর আন্ডারফ্রেম বা বগি ছিল মোটামুটি সচল। ফলে ওই কোচগুলো নতুনরূপে পুনর্বাসনের (রিহ্যাবিলিটেশন) উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বর্তমান বিশ্ব বাজার দর অনুসারে একটি মিটারগেজ কোচের দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। রাজস্ব খাতে সেগুলোর পুনর্নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে গড়ে মাত্র ৮০ লাখ টাকা করে। সেক্ষেত্রে কোচপ্রতি সাশ্রয় হচ্ছে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১৮টি কোচ সচলে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচবে ৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো। প্রায় ৭৬ কোটি টাকা সাশ্রয় করে নির্মাণ করা এসব কোচের পরীক্ষামূলক দৌড় স¤পন্ন করে লালমনি এক্সপ্রেসে যোগ করা হবে।
কোচগুলোতে অত্যাধুনিক ও আরামদায়ক চেয়ার (আসন) ও আধুনিক লাইট সংযোজন এবং মেঝেতে মাইল্ড স্টিলের পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিল ও ফ্লোরম্যাট ব্যবহার করা হচ্ছে। অসৎ উদ্দেশ্যে চেইন টেনে কেউ যেন ট্রেন থামাতে না পারেন, সেজন্য মান্ধাতা আমলের ব্যবস্থার পরিবর্তে অ্যালার্ম চেইন পুলিং কন্ট্রোলার ও টয়লেটে আধুনিক কমোডের ব্যবহারসহ মুঠোফোন ও ল্যাপটপ চার্জের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সৈয়দপুর কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা জানান, ১৮টি কোচের মধ্যে পরীক্ষামূলক দৌড় স¤পন্ন করা তিনটিসহ ১২টি সংযোজিত হবে লালমনিরহাট-ঢাকা  রেলকোচের ট্রায়াল রান রুটের লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে। পুরনো কোচ পাল্টে ট্রেনটি চলবে নতুনগুলো দিয়ে। বাকি ৬টি রিজার্ভ থাকবে। আগে লালমনি এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার। আধুনিকায়নে কোচের বগিগুলোর গতি ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে ট্রেনটি। তিনি বলেন, শিগগিরই আমরা আরও বেশি সংখ্যক কোচ নির্মাণ করতে পারবো। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4869667339172571088

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item