রংপুর সওজ’র ঘাপলা, শুধু মেশিন ভাড়ার অর্ধ কোটি টাকা ভাগাভাগি!

মামুনুর রশিদ মেরাজুলঃ    

রংপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে একটি সড়কের কাজে অনুমোদিত মেশিনের পরিবর্তে অন্য মেশিন দিয়ে কাজ করায় কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি অর্ধ কোটি টাকা লাভবান হচ্ছে। ওই টাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের আগেই ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে অনুনোমিদত মেশিনের মাধ্যমে কাজ করায় সড়কটির স্থায়িত্ব কম হবে। সাদুল্লাপুর-পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ সড়কের ২৪ কিমি সড়কের কাজে ওই ঘাপলা করা হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রংপুর সওজ’র অধীনে ৩৯ কোটি বরাদ্দে ‘সাদুল্লাপুর-পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ’ সড়কের উভয়পাশে বর্ধিতকরণ, পাকাকরণ ও ড্রেন নির্মান কাজ করা হচ্ছে। কাজটি পেয়েছে রাজশাহীর ‘মেসার্স রানা বিল্ডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সড়কটির পীরগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর থেকে পূর্ব দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর পর্যন্ত ২৪ কিমি এলাকা কাজ করা হবে। এরমধ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলায় ১০ কিমি এবং পীরগঞ্জ উপজেলায় ১৫ কিমি সড়কের কাজ করা হবে। ওই সড়কে পীরগঞ্জের ফলিরবিল বাজার, পীরগঞ্জ উপজেলা সদর ও মাদারগঞ্জ সড়কে মোট ২ হাজার ২’শ মিটার ড্রেনও নির্মান করা হবে। কাজটি পাওয়ার পর থেকেই মাঠপর্যায়ে দুুর্নীতি করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি রংপুর সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এখলাছ হোসেন ও কার্য সহকারী মোশাররফ হোসেনকে ম্যানেজ করে। ফলে কাজটি নি¤œমানের হওয়ার অভিযোগে পীরগঞ্জ পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল কাজ বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ সভা করে। একপর্যায়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নির্মিত ড্রেন ভেঙ্গে পুনরায় নির্মান করে। নি¤œমানের কাজের অভিযোগে এলাকাবাসী কয়েকদফা কাজ আটকে দেয়।
অপরদিকে ২৪ কিমি সড়কের বর্ধিতকরণ ও পাকাকরণের জন্য পাথর, বালি, বিটুমিন (পিচ)সহ অন্যান্য উপকরন মিশ্রনের জন্য সওজ কর্তৃক অনুমোদিত ‘বেসিন বেজ প্লান্ট’ এর পরিবর্তে ‘ড্রাম মিক্সড’ মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ড্রাম মিক্সড মেশিনে উপকরণের সংমিশ্রনে কাজের মান খারাপ এবং উপকরনসমুহের মিশ্রন মানসম্মত হয় না। তারপরও গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর এলাকায় ১০ কিমি সড়কের পাকারন করা হয়েছে। অপরদিকে সওজ’র বিধিতে রয়েছে ১০ কোটি টাকার কাজের ক্ষেত্রে ‘বেসিন বেজ প্লান্ট’ মেশিন দিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ড্রাম মিক্সড মেশিন দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করছে বলে স্থানীয় ঠিকাদার ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
সুত্র জানায়, ড্রাম মিক্সড মেশিনের মাসে ভাড়া ৩০ লাখ থেকে ৩৫ লাখ। অপরদিকে বেসিন বেজ প্লান্টের ভাড়া মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা। শুধু ভাড়ার টাকা বাঁচাতেই বেসিন বেজ প্লান্টের পরিবর্তে ড্রাম মিক্সড মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ওই দুর্নীতি করতে সহায়তা করেছেন রংপুর সওজ’র সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম খান। তার সময়েই উল্লেখিত সড়কের প্রথম অংশে ২৯ কোটি টাকার কাজেও ড্রাম মিক্সড মেশিন দিয়ে ময়মনসিংহের ‘মেসার্স শামীম এন্টারপ্রাইজ’ কাজ করে চলে গেছে। এক্ষেত্রেও সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুল  আলম খান সায় দিয়েছেন বলে বিশ^স্ত সুত্র জানিয়েছে। মাহবুবুল আলম খানই দুর্নীতিতে সহযোগিতা করে মেশিন ভাড়ার লাখ লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। রংপুর সওজ’র বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, আমার আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তার সময়েই কাজ শুরু হয়েছে। আমি একমাস আগে এসেছি। ড্রাম মিক্সড মেশিন দিয়েও কাজ করা যাবে বলে তিনি দাবী করেন।



পুরোনো সংবাদ

রংপুর 4683813353043406272

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item