পীরগঞ্জের আব্দুল হাকিম একজন সফল ফুলচাষী

মামুনুর রশিদ মেরাজুল ঃ

প্রেম ভালবাসা,ভাললাগা, শ্রদ্ধা এবং সৌন্দের্যের প্রতিক ফুল । মানুষ ফুলকে ভাল বাসে। ফুল ভাল বেসেছেন নবী রাসুল , অলি আউলিয়া,গাউস কুতুব, আব্দালগন। ফুলকে ঘিরে গান-গজল প্রবন্ধ লিখেছেন কবি সাহিত্যিকরা। ফুল ভালবাসেনা এমন লোক
খুজে পাওয়াদায়। ফুলের প্রতি আসক্ত হয়ে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর রচিত 'ফুলের ফসল' নামক কবিতায় লিখেছেন,'
‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা
খাদ্য কিনিয়ো ক্ষুধার লাগি,
দু'টি যদি জোটে অর্ধেকে তার 
ফুল কিনে নিয়ো হে অনুরাগী।’
এমনি একজন ফুল প্রিয় মানুষ আব্দুল হাকিম এখন একজন সফল ফুল চাষী। সে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার টুকুরিয়া ইউনিয়নের ছাতুয়া গ্রামের মোঃ আব্দুল জব্বার মিয়ার ছেলে । ফুলকে ভালবেসে চাষ শুরু করেন। প্রথমে সখের বসে, তাতে ভাল লাভ হওয়ায় পরে বাণিজ্যিক ভাবে। বর্তমানে হাকিম একজন সফল ফুল চাষী। ফুল চাষ আর বিক্রি করেই সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। আব্দুল হাকিম জানান, ৬/৭ বছর আগে তিনি বেড়াতে গিয়েছিলেন বগুড়ার ঐতিহাসিক স্থান মহাস্থান গড়ে। সেখানে সখের বশে বাগানে ফুল কিনতে গিয়ে বাগান মালিকের সাথে কথাবলে ফুল চাষে আকৃষ্ট হন তিনি। সিদ্ধান্ত নেন বাড়িতে গিয়ে ফুলের চাষ করার। বাধা হয়ে দাড়ায় জমি। নিজের আবাদী জমি মাত্র ৩৩ শতাংশ। প্রথম বছর ওই জমির একখন্ড অংশে ফুলচাষ শুরু করেন সখের বশবর্তী হয়ে। এতে  লাভ হওয়ায় পরের বছর ওই জমির অর্ধেকে এবং তার পরের বছর পুরো জমিতে ফুলচাষ করে লাভবান হন তিনি। এরপর শুধুই সফলতার গল্প। পৈত্রিক সুত্রে বসতভিটাসহ ৫৫ শতক জমির মালিক সে। ফুল চাষ ও বিক্রি করার পর থেকে তার অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আসতে শুরু করে। বিগত ৬/৭ বছরে ফুলচাষ ও বিক্রি করে ১ একর জমি বন্ধক এবং  ১ একর জমি লীজ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ৩টি পৃথক দাগে  প্রায় ১ একর জমিতে ফুলের নার্সারী করেছেন। অন্যান্য ফসল অপেক্ষা অধিক লাভজনক হওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদী জমি লীজ পেলে আগামীতে নার্সারীর পরিধি বাড়ানোর ইচ্ছে তার। আব্দুল হাকিম ফুল চাষ সম্পর্কে জানান, অগ্রাহায়নের শুরুতেই ফুলের চারা রোপন এবং বীজ ফেলতে হয়। বীজ নিজেও রাখেন এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন। ১ একর জমিতে ফুল চাষ করতে বছরে পর্যায়ক্রমে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০  হাজার টাকা । বিক্রি চলে বছর ধরে। এতে নীট আয় হয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। তিনি পীরগঞ্জ ছাড়াও দিনাজপুর জেলাশহর নবাবগঞ্জ, দাউদপুরসহ প্রায় প্রতিদিনই ফুল ও চারা বিক্রি করেন। এতে তার গড়ে প্রতিদিন প্রায় হাজার টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। হাকিমের ফুলের নার্সারীতে বিভিন্ন প্রকারের গোলাপ ,গাদা,ষ্টার,দোপাটি,ক্যালেন্ডুলা,ডালিয়া,রঙ্গন,হাসনা হেনা,ভারত থেকে আনা এ্যানকাসহ নানান প্রজাতীর ফুল ও ফুলের চারা এবং সাথী চারা হিসেবে উন্নত জাতের বিভিন্ প্রকার আম,পেপে,কাঠাল লিচু,থাই পেয়ারা, ডালিম নটকো, জাম্বুরার চারা তৈরী ও বিক্রি করেন। ফলের চারা থেকেও বাড়তি টাকা আয় হয় তার। এ আয় দিয়ে তিনি ইটের আধাপাকা ঘরবাড়ী, স্যানিটারী ল্যাট্রিন,বাথ, জমি বন্ধক ও লীজ নিয়েছেন। তার স্ত্রী,  দু’ পুত্র ও পুত্রবধূ, নাতী নাতনী সহ এখন পরিবারের সদস্য ৯ জন। ছেলে একজন এসএসসি ও অপরজন এইচএসসি পাশ। তারা সকলে নার্সারীতে কম বেশী শ্রম দেয়। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। মেয়ে জামাতাও তার দেখে ফুলের নার্সারী করেছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1959879081609910193

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item