পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পল্লী চিকিৎসকই ভরসা!

ফজলুর রহমান, পীরগাছা (রংপুর)

রংপুরের পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবায় বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরঞ্জমাদি থাকলেও জনবল না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়নি। চিকিৎসকের ৯টি পদের মধ্যে ৮টি পদই শূন্য থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে পল্লী চিকিৎসক দিয়ে চলছে রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ যে দু’জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন তারা অধিকাংশ সময় রংপুর বিভাগীয় শহরে অবস্থান করে প্রাইভেট চেম্বারে প্রাকটিস করে থাকেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদটি দীর্ঘ ১৯ বছর শূন্য থাকার পর গত ৬ জানুয়ারী ডাঃ রাকিবুল ইসলাম যোগদান করেন। আবার ওই দিনেই অন্যত্র প্রেষণে চলে যান। ফলে উপজেলার সাড়ে চার লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ৫০ শয্যার এ হাসপাতাল চালু করতে হলে এখানে মোট ২০ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন বলে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়। তবে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্রটির সব ধরনের ডিজিটাল সরঞ্জামাদি থাকলেও বর্তমানে ৩১ শয্যা চালু রয়েছে। ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুই জনসহ তিন জন পল্লী চিকিৎসক দিয়ে জোড়া তালির মাধ্যমে চলছে এখানকার চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ২০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ১৬টি পদে দীর্ঘদিন ধরে কোন চিকিৎসক নেই। এখানে চিৎিসকদের মধ্যে আবাসিক মেডিকেল অফিসার দীর্ঘ দিন ধরে প্রেষণে রয়েছেন। জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথেসিয়া) দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এবং ডেন্টাল সার্জন দীর্ঘ ১০ বছর ধরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন। জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
বর্তমানে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আবু আল হাজ্জাজ প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিসংখ্যানবিদ, ডেন্টাল সার্জন ও জুনিয়র মেকানিক পদও দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে শূন্য রয়েছে। এছাড়া প্রধান অফিস সহকারীসহ একজন অফিস সহকারী, একজন নৈশ প্রহরী,  দুই জন ওয়ার্ড বয়, ঝাড়–দার ও মালী পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
অপরদিকে ২০০৬ সালে ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করণসহ সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হয়। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন এক্স-রে মেশিনটি ২০০৬ সাল থেকে বিকল পড়ে রয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় ৫০ শয্যার জন্য সরবরাহ করা ডিজিটাল সরঞ্জামাদিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটিসহ বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ব্যবহার না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে। ডেন্টাল যন্ত্রপাতি থাকলেও ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে উপজেলার সাড়ে চার লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে চিকিৎসার জন্য রংপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকসহ রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যাচ্ছে।
উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু আল হাজ্জাজ চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুইজনসহ তিন জন চিকিৎসক দিয়ে জোড়া তালির মাধ্যমে এখানকার চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। চিকিৎসক ও জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে



পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 970780872157199327

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item