‘দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত’-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডেস্ক-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের ইপিজেডগুলোকে ইতোমধ্যে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত করেছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। শিল্পের প্রসার, রফতানি খাত সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সরকার এ ক্ষেত্রে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘বেপজা ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টরস সামিট-২০১৮’ উদ্বোধনকালে তিনি কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি শিল্প-উৎপাদনের দিকে নজর দেন। তিনি পরিত্যক্ত কলকারখানাগুলো জাতীয়করণ করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৭ ভাগের উপরে উঠেছিলো। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো সেসব কলকারখানা পানির দামে বিক্রি করে দেয়। তারা মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যস্ত ছিল।

১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আমরা বেসরকারি খাতের উন্নয়নে কাজ শুরু করি। দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আমরাই প্রথম দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বেপজা ইনভেস্টরস্ কনফারেন্স করেছিলাম। সে সময় দেশে চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং স্বল্প পরিসরে ঢাকা ইপিজেড চালু ছিল। পরবর্তীকালে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের সম্প্রসারণ করি এবং কুমিল্লা ইপিজেড স্থাপন করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশে যেসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি সেখানে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। ফলে আমাদের দেশেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের মীরেরসরাইয়ে বেপজার এক হাজার ১৫০ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করেছি আজ। তা ছাড়া যারা যেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে জমি চাচ্ছেন, আমরা জমি দিয়ে দিচ্ছি। মীরেরসরাইয়ের ওই অর্থনৈতিক অঞ্চল চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে হওয়ায় পণ্য রফতানিতে বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া ঢাকার সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বের মধ্যে সস্তায় দক্ষ জনবল পাচ্ছেন। বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি জন্য আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার মধ্যে- ঢাকায় মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু ইত্যাদি অন্যতম। যা সারাদেশে অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় দেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। ইতোমধ্যে আমরা ১৬ হাজার ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। দেশে ৪৫ লাখ সোলার প্যানেল উৎপাদন হচ্ছে। এ ছাড়া ভারত থেকে ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করেছি। আর ভারত ও নেপাল থেকে আরও দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, নতুন নতুন পণ্য রফতানির জন্য বিশেষ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। তাছাড়া কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে তার খোঁজ খবর নিচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘নেপাল-ভারত-ভুটান-বাংলাদেশের মধ্যে রফতানি ও আমদানি বাড়াতে  চুক্তি করেছি। এসব দেশগুলোকে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহরের অনুমোদন দিয়েছি। তা ছাড়া ৪ দেশ মিলেও বিশেষ অর্থনৈতিক সড়ক করছি। ফলে পণ্য আমদানি-রফতানিতে সব দেশই সুবিধা পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ এশিয়ার রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগের উপর্যুক্ত স্থানে পরিণত হচ্ছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ সামিটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মুহম্মদ হাবিবুর রহমান খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 776662587939288624

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item