শীতের প্রকোপ কমছেনা উত্তরের জেলা নীলফামারীতে (ভিডিও সহ)


ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১২ জানুয়ারী॥
শীতের প্রকোপ কমছেনা উত্তরের জেলা নীলফামারীতে। টানা ১৩ দিন চলা শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। আজ শুক্রবারও নীলফামারীতে তাপমাত্রা ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিমলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন।
ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাস চরম বিপাকে ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। সেই সাথে কয়েকদিন থেকে সূর্যের দেখা না মেলায় স্থবিরতা নেমে এসেছে জনজীবনে।
কনকনে এই শীতে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেড় হচ্ছেনা মানুষ। এদিকে তীব্র শীতে চরম বিপাকে পড়েছে জেলার শ্রমজীবী মানুষেরা। ইচ্ছে না থাকলেও জীবনের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে প্রচন্ড এই শীতেও যেতে হচ্ছে কাজে।
এদিকে কনকনে এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ দিলিপ কুমার রায় জানান, সর্দি, কাশি, জ্বর ও মাথাব্যথাসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রকোপ বেড়েছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ারও। প্রতিদিন শত শত রোগী হাসপাতালে ভীড় করছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং ব্যবস্থাপত্র দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আবহাওয়া অফিসের সুত্র মতে, নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জেলার অপর ডিমলা উপজেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া দিনাজপুর ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রার হিসাবটি গত কয়েকদিন ধরেই এমনটি চলছে। ফলে শীতের তীব্রতা বেশী অনুভুত হচ্ছে। এ ছাড়া আকাশে মেঘ ও উত্তুরী হিম বাতাসের কামড়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, অফিসে হাজিরা কমেছে। উধাও হয়েছে হাটবাজার পথঘাটের বিভিন্ন স্থানের চেনা ভিড়।
এদিকে গত কয়েক দিনের অব্যাহত ঘন কুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলু ক্ষেতে ব্যাপক হারে আলুর মড়ক বা পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে এলাকার কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ফলে ওই রোগের কারণে আলুর পাতা ও কালো কালো ফোসকা পড়ে মরে যাচ্ছে তরতাজা সবুজ গাছ। এ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবেনা বলে ধারণা করছেন আলু চাষিরা।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নীলফামারীতে ২২ হাজার ২৭০ হেক্টর, রংপুর জেলায় ৫১ হাজার ২৭৫ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৫ হাজার ৩৮৫ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ৬ হাজার ২৩১ হেক্টর ও গাইবান্ধায় ৭ হাজার ৫৮৭ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশী। কৃষকরা ওই সব জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।
আজ শুক্রবার খোঁজ নিয়ে জানা যায় নীলফামারী সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা কিশোরীগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক আলুক্ষেত রক্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কৃষকরা আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাক নাশক ¯েপ্র করেও সুফল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
কিশোরীগঞ্জ উপজেলার আলু চাষী শামীম হোসেন বাবু, শাহজাহান, আজাদ, নুর আলম ও আইয়ুব আলী জানান, তারা প্রত্যেকে প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ বিঘা করে জমিতে আলু লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু এখন আলুর বাড়ন্ত মুহূর্তে বৈরী আবওহাওয়ার কারণে পচন রোগে আলুর ফলন নিয়ে শঙ্কিত তারা।

পুরোনো সংবাদ

ভিডিও 7027363099796576048

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item