নীলফামারীতে উন্নয়ন মেলা সমাপ্ত


ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৩ জানুয়ারী॥
নীলফামারীতে সমাপ্ত হয়েছে তিন দিনের উন্নয়ন মেলা।  শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শহরের বড়মাঠে অনুষ্ঠিত ওই মেলার সমাপণী অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেক রহীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক আফরোজা বেগম, জেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম।
বক্তারা সরকারের উন্নয়নের ১০টি বিষয়, একটি বাড়ি একটি খামার, কমিউনিটি ক্লিনিক, নারী ক্ষমতায়ন, সবার জন্য বাসস্থান, শিক্ষা সহায়তা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, পরিবেশ সুরক্ষা, বিনিয়োগ বিকাশ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।আলোচনা সভা শেষে মেলায় অংশগ্রহনকারী শ্রেষ্ঠ স্টল ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী ও সাধারন জ্ঞান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়।
মেলায় অংশগ্রহনকারী শ্রেষ্ঠ স্টলের মধ্যে ১ম নীলফামারী উত্তরা ইপিজেড, ২য় গণপূর্ত বিভাগ ও টিটিসি নীলফামারী এবং ৩য় নীলফামারী কৃষি মন্ত্রনালয় বিভাগ ও মৎস্য গবেষনা ইনসটিটিউট স্থান অধিকার করে।
এছাড়াও সরকারের উন্নয়ন ও সাফলতার বিষয় তুলে ধরা এবং তথ্য ও সেবা প্রদান করায় নীলফামারী জেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা হিসাবরক্ষন অফিস, সড়ক ও জনপদ বিভাগ, আরআডিআরএস, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ব্যাংক সমুহ, সিভিল সার্জেন অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নীলফামারী সরকারী কলেজকে বিশেষ শুভেচ্ছা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপনী ঘটে। 
জেলা প্রশাসন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় সরকারি-বেসরকারী ৮০ টি স্টল স্থান পায়। গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) মেলার শুরুর দিনে বিকেলে আলোচনা সভায় অংশগ্রহন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
শিল্প উন্নয়নে এজেলার ব্রান্ডিং নামক করন করা হয়েছে “উত্তরের শিল্প নগরী দীপ্তিমান নীলফামারী”।
ফলে উন্নয়ন মেলায় এ জেলার কলকারখানার চিত্র ফুটে উঠেছে। এ ছাড়া মেলায় সংস্থাপন মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, অর্থমন্ত্রনালয়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বেপজা, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, জেলা সমবায় অফিস, কৃষি মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, জেলা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, পৌরসভা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের স্টল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ও গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে তুলে ধরতে এবং সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা অবহিতকরণ, এমডিজি অর্জনে সরকারের সাফল্য প্রচার এবং এসডিজি কার্যক্রমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে এই উন্নয়ন মেলা।
মেলায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, ব্যাংক বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং স্থানীয় নানা উন্নয়ন সংস্থা অংশ নেয়। জেলা সদরের মেলায় ৮০টি এবং উপজেলা পর্যায়ের মেলায় ৪০টি করে স্টল বসে। সরকারের নানা সংস্থার বাইরে পাট ও পাটজাত পণ্যসামগ্রী, খাবারের স্টলও বসে।
মেলার বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের স্টলে মেলে ধরা হয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে বিদ্যুত ব্যবস্থার নানা উন্নয়নের চিত্র। এতে লোড শেডিং এর কবল থেকে বের হয়ে আসার নানামুখী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়। গত ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ২৭টি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র। গত ২০১৭ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১২টি। নতুন নতুন বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দূর করা হয়েছে লোড শেডিং। সংযোগ সুবিধাও সহজিকরণ করা হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রনালয়ের স্টলে সারা দেশের রেলওয়ের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একজন রেলযাত্রী সারা দেশের ট্রেণ চলাচলের সময়সূচি, ভাড়া সহ যে কোন অভিযোগের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। মেলায় স্থানীয় জেলা প্রশাসন সহ অন্যান্য দপ্তরের সেবা সমুহ তুলে ধরা হয়েছে। সাধারন জনগণ যে এসব সেবা এখন প্রতিনিয়ত পেয়ে থাকে তা টরম সত্য হিসাবে গন্য হয়েছে।
এ ছাড়া চিকিৎসা সেবার বৈপ্ল¬বিক পরিবর্তনকেও মেলায় তুলে ধরা হয় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের স্টলে। বিশেষ করে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হারও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
মাছে ভাতে যে বাঙালী তা জেলা মৎস্য বিভাগের স্টলেও ছিল সরকারের সাফল্য। বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় শিং, টেংরা, পাবদা মাছ ফিরে এসেছে। বর্তমান সরকার মেয়াদে সারা বিশ্বে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ ।
এসব উন্নয়নের বাইরে সরকারের নানা প্রতিষ্ঠানের সেবাদান নিয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা গেছে মেলার স্টলগুলোতে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি-বিআরটিএ, পাসপোর্ট অফিস, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলোতে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এসব স্টলে আসা দর্শনার্থীরা জেনে নেয়, দ্রুততম সময়ে অনলাইনে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, করপ্রদান ও বিদেশ যাওয়াসহ কীভাবে নানা সেবা মিলবে।



পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5196739303181451218

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item