কিশোরগঞ্জ উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

 মোঃ শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রশিক্ষন, কম্পিউটার প্রশিক্ষন, মোবাইল সার্ভিসিং, সেলাই প্রশিক্ষন ও বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয়  নির্বাচনে আনছার নিয়োগে  হাজার টাকা টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ফলে অসহায় দর্রিদ্র পরিবারের সদস্যরা টাকা দিতে না পেরে বিভিন্ন প্রশিক্ষন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
 জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার বর্তমান আনছার ভিডিপি কমান্ডার( ভারপ্রাপ্ত) কল্পনা রানী দাস কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৬/১২/২০১২ সালে প্রশিক্ষিকা পদে যোগদান করেন। তৎকালিন উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তা রাজেন্দ্রনাথ সরকার অন্যত্র  বদলী হয়ে গেলে ৬/৯/২০১৫ সালে প্রশিক্ষিকা কল্পনা রানী দাস ভারপ্রাপ্ত আনছার ভিডিপি কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। দীর্ঘ তিন বছর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত আনছার ভিডিপির দায়িত্ব পালন করায় অফিসটিকে দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করেছেন।
জেলা আনছার কমান্ডেন্টের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে , কিশোরগঞ্জ উপজেলা আনছার ভিডিপি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত)কল্পনা রানী দাস দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০১৫ সালে আনছার প্রশিক্ষন পুরষ ১৫ জন, ২০১৬ সালে ১১ জন,২০১৭ সালে ২১ জন। মহিলা আনছার প্রশিক্ষনে ২০১৬ সালে ২ জন,২০১৭ সালে ২ জন। অস্ত্রসহ আনছার ভিডিপি প্রশিক্ষনে ২০১৬ সালে ২৩ জন, ২০১৭ সালে ৩০জন। গ্রাম প্রশিক্ষনে ২০১৫ সালে ৬৪ জন,২০১৬ সালে ১৯২ জন,২০১৭ সালে ৬৪ জন। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে অন্যান্য প্রশিক্ষন, যেমন সোয়েটার নেটিং প্রশিক্ষনে ২ জন, ওভেল মেশিন প্রশিক্ষনে ২ জন, সেলাই প্রশিক্ষনে ৪ জন,মোবাইল সার্ভিসিং প্রশিক্ষনে ১২ জন, কম্পিউটার প্রশিক্ষনে ১৬ জন, কারীগরি প্রশিক্ষনে ১৮ জন, মটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষনে ৪ জনের নাম পাঠান। এছাড়াও সাধারন প্রশিক্ষনে গাজীপুরে নাম পাঠানোর নামে তিনি প্রশিক্ষর্ণাথী নাম তালিকায় অন্তরভুক্ত করতে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন আদালত থেকে বিভিন্ন সময় অনেক মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তা । এসব মামলায় তিনি বাদী ও বিবাদীর কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে ঘুষ আদায় করে তদন্ত রিপোর্ট পাঠান। যে সমস্ত গরীব অসহায় মানুষ টাকা দিতে পারেননা তাদের দিনের পর দিন হয়রানী করেন।
২০১৭ সালে দিনাজপুর আনছার ভিডিপি আঞ্চলিক কার্যালয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষন নেওয়া কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পুষনা গ্রামের রবীন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে সবুজ রায় বলেন, আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষনে নাম অন্তরভুক্ত করার জন্য আনছার ভিডিপি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আমি কোন উপায়অন্তর না পেয়ে শরিফ মিয়া নামে আনছার ভিডিপি অফিসারের এক দালালের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা দিয়ে নাম অন্তরভুক্ত করি।
সবদুল ইসলাম নামে এক বৃদ্ধ অভিযোগ করে বলেন,  বাবা আমি কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার ছিলাম। নীলফামারীতে আনছার প্রশিক্ষনে আমার ছেলেসহ দুই জনের নাম দিয়েছি । আমি আনছার কমান্ডার থাকা সত্বেও কল্পনা রানী আমার কাছে ৪ হাজার করে  ৮ হাজার টাকা নিয়েছে।
বাহাগিলি ইউনিয়নের কমান্ডার আব্দুল জব্বার বলেন, ভাই উপজেলা অফিসারকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় মানানো যায়। কিন্তু গাজীপুরে সাধারন আনছার প্রশিক্ষনে জেলা অফিছাররা এক লাখ থেকে এক লাখ দশ হাজার টাকা নিয়ে প্রশিক্ষনে পাঠায়। তার কারন গাজীপুরে প্রশিক্ষন শেষ হওয়ার সাথে সাথে চাকরী পাওয়া যায়। এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ভাই ম্যাডামের স্বামীও দিনাজপুরের আনছার কর্মকর্তা। জেলা স্যারের সাথে তার ভাল সম্পর্ক তাই তিনি এখানে দীর্ঘদিন থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কল্পনা রানী দাস তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার নাম করে ইউনিয়ন কমান্ডাররা আনছার সদস্য নিয়োগের জন্য ৫ শ করে টাকা নিয়েছিল। কিন্তু আমি সে সম্পর্কে কিছু জানতামনা। অন্যান্য প্রশিক্ষনে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন প্রশিক্ষনে নাম দিলে তারা খুসি করে। সব জায়গায় এটা হয়।
জেলা আনছার কমান্ড্যেন্ট আসাদুজ্জামান গনীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, উপজেলা আনছার ভিডিপি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) কল্পনা রানীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 8471693293315596024

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item