শীতের নতুন ইনিংস ॥ থরথরে কাঁপছে উত্তরবঙ্গ

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ৮ জানুয়ারী॥
নতুন ইনিংস খেলছে শীত। সর্বকালের সর্বরেকর্ড ভেঙ্গে এই দেশে নতুন রেকর্ড গড়েছে শীতের মারকাটালী। শীতে থরথর করে কাঁপছে উত্তরবঙ্গের নীলফামারী সহ রংপুর বিভগের আট জেলা। হাত ও পা জমাট বাঁধার উপক্রম। ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজের শীতলভাব হাড় মেনেছে এই শীত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সুত্র মতে, উত্তরবঙ্গের রংপুর বিভাগের আট জেলার সব্বোর্চ ও সর্ব নি¤œ তাপমাত্রার পার্থক্যটা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সৃস্টি হয়েছে। আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) এ বিভাগের ৬টি আবহাওয়া অফিস হতে প্রাপ্ত তাপমাত্রার অংকের দিকে তাকালে দেখা যায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বকালের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেম আসে। আর সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপর দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিনাজপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও রংপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং  সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রিসেলসিয়াস।
সুত্র মতে, উত্তুরী হিমশীতল বায়ু ঘন্টায় ১৮ কিলোমিটার বেগে চলছে।
পূর্বের রেকর্ড বলছে, ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি নীলফামারী সৈয়দপুরের সর্ব নি¤œ তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। চার বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ২০১৮ সালের আজ ৮ জানুয়ারী সোমবার সৈয়দপুরে তাপমাত্রা এসেছে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাধীনতার আগে ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সময় সর্বনি¤œ ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
এবার সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়ে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা নেমে এলো দুই দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে তাপমাত্রা ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এলে আবহাওয়াবিদরা একে বলেন তীব্র শৈত্য প্রবাহ।  আবহাওয়া অফিস বলছে, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা উপজেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, এখানে তাপমাত্রা ৩ নেমেছে। গত কয়েকদিন ধরেই সারাদেশে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব দেশের উত্তরের জেলাগুলোতেই বেশি। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এই শীতে শুধু মানুষের জীবনযাত্রাই ব্যাহত হচ্ছে না, সেইসঙ্গে ক্ষেত্রের ফসল বিশেষ করে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, সৈয়দপুরে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া নীলফামারীর ডোমার, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও সদর উপজেলার মানুষও কনকনে ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছেন। শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে শহরে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। কনকনে ঠান্ডার কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলছেন নাশীতজনিত রোগে হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ দিলিপ কুমার রায় জানান, শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শীতে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া খাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে রোগীদের।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে মনিটরিং করাসহ শীতার্তদের পাশে থাকতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।#

পুরোনো সংবাদ

লালমনিরহাট 3072052973554054826

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item