ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু-দেশের মিলন মেলা

সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ

প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে কোচল ও হরিপুর চাপসা সীমান্তে ১ডিসেম্বর (শুক্রবার) ভারত ও বাংলাদেশের ৪কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। প্রতি বছর পাথর কালীর মেলা উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশের মিলন মেলা বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই এই সাক্ষাতের সুযোগের সৃষ্টি হয়। কাঁটাতারের বেড়া তাদের আলাদা করে রাখলেও আবেগে পৌছে যায় পাথরকালী মেলা স্থলে, সুকে দঃুখের কথা হয় ভারত -বাংলাদেশের আতœীয় স্বজনদের সাথে। ভারবাসায় আপ্লুত হয়ে দীর্ঘদিন পর প্রিয় স্বজনদের কাছে পেয়ে চোখে আনন্দ যেন কোন ভাবেই বাঁধা মানছিল না। অনেক দিন দেখা না হলেও আজ রক্তের টান ঠিকই তাদের হাজির করেছে দু-দেশের সীমান্তে কাঁটাতারের দু-পারে।
বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর এবং ভারতে কোচবিহার, আসাম, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মালদা, কলকাতা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাইসাইকেল, অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, মিনিবাস যোগে মেলা স্থলে হাজির হয় ভারতে থাকা স্বজনরা । এরপর চলে প্রতিক্ষার প্রহর। শুক্রবার বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে সকাল সাড়ে ৯ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এ মিলন মেলা। সীমান্ত এলাকার স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা এসে জোরো হয় সীমান্তে, দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হবার এ সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায় না কেউ। প্রতি বছর দু-দেশের স্বজনদের  এ মিলন মেলা এখানে এক বিরল দৃশ্যের জন্ম দিয়ে চলছে। লাখো মানুষে কথা বলছে এই দিনে তাদের প্রিয়জনদের সাথে। দু-দেশের সীমানা রেখা কাঁটাতার দিয়ে আলাদা করা হলেও, আলাদা করা যায়নি তাদের ভালবাসার টান। দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ায় অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আবার কেউ প্রিয়জনদের দেখা না পেয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাড়ী ফিরে যায়।
দু-দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা সাধারণ মানুষ টাকা পয়সার অভাবে পাসপোর্ট ভিসা করতে পারে না, তারা এই দিনটির অপেক্ষায় থাকে। তারা সারা বছর অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আগে থেকেই জানিয়ে দেয় স্বজনরা। কে কোথায় দেখা করবে। ভারতীয় অধিবাসিরা কাঁটাতারের পাশে এলে সেখানে বাংলাদেশেরও লাখো মানুষ নারী পুরুষ সমবেত হয়। জামাই ও মেয়ের দেখা একে অপরকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা থাকলেও পারেনি। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া। ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছুঁয়ে দেখার কিন্ত ছুইতে পারেনি। জড়িয়ে একটু চিৎকার করে কান্না করি তবে হয়তো দীর্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো থেকে একটু রেহাই পেতাম বলছিলেন- ভারতের মাকড় হাটে থাকা ছোট বোন সেফালি। ছোটবোন সেফালিকে দেখতে আসা রাণীশংকৈল উপজেলা থেকে শামীম রেজা।
পাথর কালীর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নগেন কুমার পাল জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারেও দু-বাংলার মিলন মেলা পালিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালের পর উপজেলার সীমান্ত এলাকা পাক-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল । এ কারণে দেশ বিভক্তির হওয়ার পর আতœীয় স্বজনেরা দু-দেশে বিভক্ত হয়ে পরে। তাই সারা বছর কেউ কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারে না। তারা অপেক্ষা করে থাকে এই দিনটির জন্য। থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মান্নান বলেন, শৃংখলা রক্ষার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী সেখানে দায়িত্ব পালন করছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 3330165801360321446

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item