স্বাধীনতা বিরোধীর দোষররা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল-রামগঞ্জ ট্রাজেডির স্মরণসভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৪ ডিসেম্বর॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি বলেছেন, একাত্তর সালের পাকি সেনা ও তাদের দোষররা যেভাবে মানুষ হত্যা করেছিল, ঠিক একই কায়দায় কাদের দোষরা নীলফামারীর রামগঞ্জে চার আওয়ামী লীগ নেতা সহ এক পথচারীকে হত্যা করেছিল। সেদিন সেই স্বাধীনতা বিরোধীর দোষররা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল।
মন্ত্রী আরো বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীর পেত্বারা আজও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানো স্বপ্ন দেখে। যা কোন দিনও হতে দেয়া যাবেনা। এ জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পনঃরায় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
নীলফামারী সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ ট্রাজেডির চার বছর উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে চারটায় নিহতদের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম শাহ্রে সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলিমুদ্দিন বসুনিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুজার রহমান, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মমতাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হাসান চৌধুরী শাহিন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিদ মাহমুদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মসফিকুল ইসলাম, জেলা মহিলা যুবলীগের সভাপতি আরিফা সুলতানা লাভলী প্রমুখ।

টুপামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আয়োজনে উক্ত অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও এলাকার সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এর আগে নেতৃবর্গ নিহতদের কবর জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পন ও নিহতদের পরিবারের খোঁজ খবর নেন ও কথা বলে। 
উল্লেখ যে, ২০১৩ সালের এই দিনে জামাত শিবির ও বিএনপির হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ্য সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি পরিদর্শনে গেলে নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরকে হত্যা চেষ্টায় তার গাড়ীতে হামলা চালিয়েছিল জামাত শিবির ও বিএনপি। নুর প্রাণে বেঁচে গেলেও জামাত শিবির ও বিএনপির হামলায় নিহত হয় চার আওয়ামী লীগ নেতা ও এক পথচারী সহ ৫ জন। নিহতরা হলেন টুপামারী ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী, টুপামারী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ফরহাদ হক শাহ ও মুরাদ হক শাহ, আওয়ামী লীগ কর্মী লিটন হোসেন লেবু ও পথচারী আবুবক্কর সিদ্দিক। এদের মধ্যে ফরহাদ ও মুরাদ দুই সহোদর।

নিহতদের স্বজনের অভিযোগ, ওই হত্যার ঘটনার চার বছর অতিবাহিত হলেও গ্রেপ্তার হওয়া এবং আদালতে আত্মসমর্পণ করা আসামীরা জামিনে বেড়িয়ে প্রকাশ্যে দম্ভে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘটনারসাথে জড়িত ২০ আসামী এখনো অধরা রয়েছে।

বিচারের আশায় স্বজনরাঃ- ঘটনার চার বছর পেরিয়ে গেলেও স্বজন হারানোর শোক এখনও সামলাতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। নিহত যুবলীগ নেতা ফরহাদ এবং মুরাদের বাবা ফারুক হক শাহ বলেন, এক সঙ্গে দুই সন্তান হারিয়ে খুব কষ্টে আছি আমি। জামাত শিবিরের ক্যাডাররা আমার দুই ছেলের পায়ের ও হাতের রগ কেটে হত্যা করেছিল। তিনি বলেন পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে আমার ছেলে হত্যাকারীদের অনেকের নাম বাদ পড়েছে। তারা দম্ভে এখন চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

একই অভিযোগ করেন, নিহত খোরশেদ আলম চৌধুরী ও লিটন হোসেন লেবুর স্বজনরা। লিটন হোসেন লেবুর বৃদ্ধা মা মরিয়ম নেছা বলেন, ‘ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে চাই।’ অপর দিকে খোরশেদ আলম চৌধুরীর চাচাত ভাই রাশেদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘জামিনে বেড়িয়ে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের দম্ভে মামলার সাক্ষীরা অনেকই ভীত।’

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ মার্চ ২০৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজার রহমান।
আদালত সুত্র মতে, ২০৭ জনের মধ্যে পুলিশের অভিযোগ পত্রে এক নাম দুই বার ব্যবহার হওয়ায় প্রকৃত আসামী সংখ্যা ২০৬ জন। ওই ২০৬ জনের মধ্যে ১৮৬ জন আসামী জামিনে রয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন জেলা জজ আদালত থেকে, দুইজন নি¤œ আদালত থেকে এবং ১৮২জন উচ্চ আদালত থেকে জামি পায়। বাকি ২০ আসামী অদ্যাবধি পলাতক রয়েছেন।




পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 140520162421529241

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item