মানুষের কল্যানে কাজ করে বাকী জীবন কাটাতে চান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মজিবুর রহমান বীরবল

হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

আলহাজ্ব মো. মজিবুর রহমান বীরবল। বীরবল স্যার নামেই বেশি পরিচিত সুধিমহলে। একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ। আওয়ামী রাজনীতি করেই জীবনটা পারি দিচ্ছেন ছাত্রকালীন সময় থেকেই। এ রাজনীতি করেই ব্যাপক পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করে সবার অন্তরে রয়েছেন বীরবল স্যার হিসেবে। শুধু রাজনীতি নয় একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি আনাচে কানাচে। রয়েছে অনেক ছাত্রছাত্রী। এক কথায় সকল মানুষের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নেয়া একজন সফল ব্যাক্তিত্ব তিনি। বহু ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়েও নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন প্রতিটি মানুষের অন্তরে। রাজনীতিক জীবনেও গেছে অনেক ধকল। সইতে হয়েছে কারাবরনও। তারপরও ছেড়ে দেননি আওয়ামী লীগের নৌকার হাল। সে প্রেক্ষিতেই কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী) আসনে নির্বাচন করে নৌকার হাল ধরেই তিনি।
শিক্ষা জীবনে তৎকালীন বি,এ পাশ, বিপিএড পাস করা এই ত্যাগী প্রবীণ নেতা ১৯৬৬/১৯৬৭ হতে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলা শাখা কৃষক লীগ এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন নিষ্ঠার সাথে। আর সেই থেকেই রাজনীতিতে যুদ্ধ করে আসছেন মানুষের কল্যাণে। তৎকালীন সময়ে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬ দফা প্রচারে গ্রামে গঞ্জে মিছিল মিটিং-এ অংশগ্রহণ করেন এবং রামখানা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে দলের কার্যক্রম চালিয়ে যান। ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে এম,এন,এ জনাব মোজাহার হোসেন চৌধুরী (নাগেশ্বরী) ও এম,পি শামসুল হক চৌধুরী (ভূরুঙ্গামারী) সাহেবের নৌকা মার্কা প্রচারে সমাবেশ, খুলি বৈঠকে অংশগ্রহণ করে জয় লাভ করতে সক্ষম হন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মোতাবেক গণ আন্দোলনে, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং ভারতের চৌধুরীহাট যুব শিবির স্থাপন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর স্মরণার্থী পুনর্বাসেেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পর আওয়ামীলীগের অনেক নেতৃবৃন্দ গা ঢাকা দিলেও এম,এন,এ মোজাহার চৌধুরী সাহেবের নেতৃত্বে নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী থানায় আওয়ামীলীগকে সংঘটিত করার কাজে ছুটে বেড়ান বুক ফুলিয়ে। নাগেশ্বরী থানায় গুটি কয়েকজন ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগকে সাথে নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলায় প্রথম বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবীতে রাজপথে মিছিল করে সাহসীকতার পরিচয় দেন। যে কারণে পরদিনই তাঁকে থানায় আটকে রেখে রাত ১০ টায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এমনকী ১৫ আগষ্ট তিনি সর্বপ্রথম তাঁর বাসায় বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া খায়ের ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন।
এছাড়াও এই ত্যাগী নেতা জোহরা তাজ উদ্দিন, সাজেদা চৌধুরী, আব্দুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে কুড়িগ্রাম জেলার এ্যাডভোকেট আমান উল্যাহ ও এ্যাডভোকেট নজির হোসেনের নির্দেশে কুড়িগ্রাম জেলার প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিটি মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৬ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন কুড়িগ্রাম-১ আসনে টুংকু মিয়াকে মনোনয়ন দিলে তিনি টাকার অভাব এবং দুর্দিনে আওয়ামীলীগের নড়বড়ে সংকটের অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন করতে অনীহা প্রকাশ করায় কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহবায়ক এ্যাডভোকেট আমান উল্যাহ ও যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট নজির হোসেন উক্ত আসনে কোন প্রার্থী না পেয়ে মজিবুর রহমান বীরবলকে ১৫ দলীয় ঐকজোটের নৌকা মার্কা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের ব্যবস্থা করলে তিনি সংসদ নির্বাচন করেন। মজিবুর রহমান বীরবল অভিযোগ করে বলেন ভোটে নৌকা মার্কা জয়ী হলেও একটা কেন্দ্রে গোলযোগের কারণে সেদিনের ভোট স্থগিত রাখা হয়। পরবর্তীতে একটি কেন্দ্রের পরিবর্তে ১৩টি কেন্দ্রে স্বৈরাচারীতার কারণে ১৩টি কেন্দ্রের নৌকা মার্কার ব্যালট পুড়িয়ে দিয়ে পরদিন ভোট গ্রহণ করে। পরে ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে তিনি মনোনয়ন চাইলেও জনসমর্থন থাকার পরেও জনসমর্থনহীন আব্দুস সবুর চৌধুরী হীরুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এভাবে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৫, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালেও মনোনয়ন চাইলে প্রতিবিারই বিভিন্ন কারনে মনোনয়ন হাতছাড়া হয় তাঁর।
শুধু তাই নয়, ১৯৮১ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনয়ন দেওয়ার দাবীতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও দলীয় অফিস হইতে হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণ সমাবেশ পর্যন্ত ঘন ঘন মিছিলেও অংশগ্রহণ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফেরার দিন কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৭Ñ১৯৮৮ সালে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী এলাকায় এরশাদ বিরোধী আন্দোলন উপজেলা অফিস ঘেরাও করতে গিয়েও গ্রেফতার হয়ে ১ বছর ডিটেনশন ২২ দিন কন্ডমসেলে অবস্থান করতে হয়। জেল হতে ছাড়া পেয়ে কুড়িগ্রাম জেলায় ৭৩ টি ইউনিয়নে স্বৈরাচার বিরোধী কৃষি ঋণ মওকুফের দাবীতে কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন করে জনসমর্থন বৃদ্ধি করেন এবং ২০০৬ সাল ৫ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিলে গ্রেফতার হয়ে আবারও দুই মাস কারাবরণের শিকার হন। ২০০৭ সাল ১৬ জুলাই শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে ১৮ই জুলাই শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করায় পুনরায় গ্রেফতার হয়ে থানায় আটক হয়ে পরে ছাড়া পান। এভাবে রাজনীতির পেছনে নিজেকে ক্ষয় করে প্রতিবারই মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করলেও মনোনয়ন পাওয়ায় পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। প্রবীন এই নেতা সামনের সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে আওয়ামীলীগ এর হাতকে শক্তিশালি করতে চান। সে প্রয়াসেই বর্তমানে ব্যাপক প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অংশগ্রহন করছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও। যাচ্ছেন মানুসের দ্বাড়ে দ্বাড়ে। সাংসদ নির্বাচিত হয়ে পাশে থাকতে চান নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী দুই উপজেলার মানুষের।

পুরোনো সংবাদ

নির্বাচিত 1006299592561236482

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item