সন্তান কোলে নিয়ে স্বামীকে খুঁজে ফিরছে অসহায় স্ত্রী
https://www.obolokon24.com/2017/11/jaldhaka_28.html
বিশেষ প্রতিনিধি ১৮ নভেম্বর॥
স্বামীকে খুঁজতে একস্থান হতে অন্যস্থানে ছুটে বেড়াচ্ছে আড়াই বছরের ছেলে সন্তানকে কোলে নিয়ে এক অসহায় স্ত্রী। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বাসষ্ট্যান্ডে দেখা মেলে সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার কালীপুর খুকনি বাজার গ্রামের দোকান কর্মচারী সকিমুদ্দীন আকন্দের মেয়ে চায়না খাতুনের (২০)। আজ শনিবার কথা বলার সময় চায়না জানায়, তার স্বামী রেজাউল করিম পারভেজ (২৮)। গত ৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। ওই সময় তার স্বামী তাদের এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে এসেছিল। তাকে পছন্দ হওয়ায় বিয়ে করে। বিয়ের সময় কাবিন নামায় ঠিকানা দেয় নোয়াখালী জেলার চাটখালি উপজেলার মধ্যম দিলিয়া বাজার গ্রামের সে নুরনবীর ছেলে। বিয়ের পর সুখেই দিন কাটছিল। ছেলে সন্তানের জন্মের পর দেড় বছর এক সঙ্গে ছিল। অন্য স্থানে কাজ করার নাম করে ওই যে চলে যায় আর ফিরেনি। তবে যাওয়ার সময় একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে গিয়েছিল। চায়না জানায় তার কাছে মোবাইল নেই। তবে বিভিন্নজনের মোবাইল নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ০১৯০৪২২০৭৭৮ নম্বরে কথা বলতো। সে নম্বরটি এখনও চালু আছে। স্বামীর সঙ্গে কথা বললেও স্বামী দেশের কোথায় থাকে তা ঠিক মতো বলেনা। এরমধ্যে চায়না জানতে পারে তার স্বামীর পূর্বের প্রথম স্ত্রী রয়েছে। তাকে (চায়না) তার বাবার বাড়িতে রেখে অন্যত্র কাজে যাওয়ার পর স্বামী তৃতীয় বিয়ে করেছে। এখন সে তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকে।গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় স্বামী তাকে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় আসতে পারে। এখানে সে রাজমিন্ত্রীর কাজ করছে বলে জানায়। জলঢাকা বাসষ্ট্যান্ডে স্বামীর অপেক্ষা করার কথা ছিল। তাই গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে ছেলে সন্তানকে কোলে নিয়ে চায়না জলঢাকা বাসস্ট্যান্ডে নামে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও স্বামীকে খুঁজে পায়না। একজনের মোবাইল নিয়ে স্বামীকে কল দিলে অপর প্রান্তে এক নারী কলটি রিসিভ করে। রেজাউল করিম পারভেজের নাম বলতে ওই নারী জানায় এই নামে এখানে কেউ থাকেনা। স্থানটির নাম জানতে চাইলে বলা হয় ঢাকার নবীনগর।
জলঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক সহৃদয় ব্যাক্তি চায়না অবস্থা জানতে পেরে তাকে তার বাসায় আশ্রয় দেয়। ওই ব্যাক্তি বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে চায়না বেগমের সঙ্গে কথা বলে তার এই কাহিনী উঠে আসে।
এখন চায়না তার স্বামীকে ফিরে পেতে ঢাকার সেই নবীনগর যেতে চায়। এ সময় চায়না তার ছেলে সন্তান কোলে স্বামীর ছবি দেখায়। চায়না এখন বুঝতে পারছে তার স্বামী যেখানে কাজ করে সেখানেই একটি করে বিয়ে করে। ওই এলাকার কাজ শেষ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় স্ত্রী সন্তান রেখে পালিয়ে যায়।
তবে চায়না তার স্বামীর নোয়াখালীর বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তাকে স্বামীর পরিবার গ্রহন না করে তাড়িয়ে দেয়। অসহায় সরল সহজ চায়না এখন দুই চোখে অন্ধকার দেখছে। সে স্বামীতে ফিরে পেতে চায়। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন অসহায় চায়না কোলের সন্তানকে নিয়ে স্বামীকে ফিরে পেতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াবে। এর শেষ কোথায়?