ডিমলায় যুবলীগের রাজনৈতিক সভায় বিএনপি নেতার বক্তব্য প্রদান॥এলাকাজুড়ে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
নীলফামারীর জলঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের আলোচনা সভায় জামায়াত নেতা উপস্থিতির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার একই জেলার  ডিমলা উপজেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের রাজনৈতিক আলোচনা  সভায় উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক,বর্তমান যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মনোয়ার হোসেনের বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে এলাকাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড়।
আ.লীগের অনেক ত্যাগী-তৃনমুল নেতাকর্মী প্রকাশ্যেই কিছু  না বললেও তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ধরনের বেমানান র্কমকান্ড শুধুমাত্র দলটির গঠনতন্ত্র পরিপন্থিই নয় বরং স্থানীয় যুবলীগ সহ আ.লীগের সকল অঙ্গসংগঠনের জন্য অনেকখানি লজ্জাস্কর, আত্মঘাতী সিদ্ধান্তরই সামিল হিসেবে দেখছেন তারা ।

জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়ন যুবলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠতা শেখ ফজলুল হক মনির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পনের মধ্য দিয়ে কর্মসুচি শুর করে একটি বনাঢ্য র‌্যালী বাজারের প্রধান প্রধান মোড় প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা মিলিত হয়।
এ সময়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক- বাবু চিত্তরঞ্জন রায়ের সঞ্চালনায় , প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি-মোজাম্মেল হক,বিশেষ অতিথি, সাধারন সম্পাদক  বাবু সুনীল কুমার সরকার, আমন্ত্রিত অতিথি,ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রুহুল আমীন,শহিদ জিয়াউর রহমান মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন (বিএনপি নেতা), উক্ত ইউনিয়ন আ.লীগের উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম, আ.লীগ সহ-সভাপতি রেজাউল ,সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার সরকার,সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মনিরুউজ্জামান মানিক সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড আ.লীগ ও যুবলীগ নেতৃত্ববৃন্দ।
এসব বক্তব্যের মাঝ পর্যায়ে আকস্মিক ভাবে ওই পুর্ব নিমন্ত্রিত বিএনপি নেতা মঞ্চে উপস্থিত হলে অল্প সময়ের মধ্যে সরকারদলীয় নেতারা তাকে বক্তব্য দেবার অনুরোধ জানালে তিনি বক্তব্য প্রদান শেষে বিএনপি’র শ্লোগান “বাংলাদেশ-জিন্দাবাদ”শহিদ জিয়া অমর হোক বলে তার ইতি টানেন ।
এ সময়ে লজ্জায় বাধ্য হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন সরকারদলীয় বিক্ষুদ্ধ অনেক  নেতাকর্মীগন ।
পরে ঘটনাটি নিয়ে অনেক তৃনমুল,ত্যাগী নেতাকর্মীরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলে শুরু হয় আলোচনা-সমলোচনার ঝড় ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত ইউনিয়নটির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত ঘৃনিত হয়েছে। আমাদের ইউনিয়ন আ.লীগ সহ-সভাপতি রেজাউল করিম তার(বিএনপি নেতার) চাকুরীরত কলেজের সভাপতি হওয়ায় তিনি ও ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারন সম্পাদকসহ সভায় উপস্থিত বেশকিছু আ.লী নেতাদের অনুরোধে বিএনপি নেতা সেখানে বক্তব্য দেবার সুযোগ পেয়েছেন ।
উক্ত ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারন সম্পাদক বাবু সুনীল কুমার সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিএনপি নেতার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, এটা দোষের কিছু নয়,তিনি আজ আ.লীগের সভায় বক্তব্য রেখেছেন আর আমিও বিএনপি-জামায়াত ৪দলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন অনেকবার বিএনপি’র সভায় বক্তব্য রেখেছি ! তাছাড়া যুবলীগের ওই সভায় আমন্ত্রনপত্র পেয়ে তিনি সেখানে এসেছিলেন, আমি সেখানে শুধুমাত্র বিশেষ অথিতি ছিলাম মাত্র।
উপজেলা যুবলীগ সভাপতি-শৈলেন চন্দ্র রায় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই ,তবে এ ধরনের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কর্মকান্ড সেখানে হয়ে থাকলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।
 আর বৃহৎ এই সংগঠনটির উপজেলা সাধারন সম্পাদক-আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু- ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি ইতিপুর্বে আমি জেনেছি, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করব ।
 এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী যুবলীগ সাধারন সম্পাদক-সাহিদ মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে যা সংগঠনের বিপক্ষে চলে যায় তবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে অবশ্যই আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করব ।
অপরদিকে বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আমি যুবলীগের আমন্ত্রনপত্র পেয়েই সেখানে গিয়েছি । তবে আমন্ত্রনপত্র পেয়ে তিনি কত টাকা দিয়েছেন সে ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, দান করতে হলে গোপনে করতে হয়,আমি দান দেয়া টাকার পরিমান কাওকে বলিনা !

নাম প্রকাশ না করবার শর্তে স্থানীয় আ.লীগের একাধিক ত্যাগী-তৃনমুল নেতাকর্মীরা জানান,এই বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন বিএনপি-জামায়াত ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে ব্যাপক সুবিধাভোগী,প্রভাবশালী,দাপটে নেতা ছিলেন।
কারন,বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পুরো উপজেলা বিএনপি সহ সকল অঙ্গসংগঠনের প্রভাবশালী ১০জন নেতৃত্বকারীর নাম তালিকা করলে সেখানে এই মনোয়ার হোসেনকে বাদ দেবার কোনো সুযোগ নেই! তাই তাকে আ.লীগের রাজনৈতিক সভায় যারা আমন্ত্রন জানিয়ে বক্তব্য
 দেবার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববৃন্দের কাছে জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন তারা । যাতে করে এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি  আর কখনোই না ঘটে ।

পুরোনো সংবাদ

সমাজ-সংগঠন 7367931045214695073

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item