ঠাকুরগাঁওয়ের ১১টি নদী পরিণত হচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে

সফিকুল ইসলাম শিল্পী ,রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের ১১টি নদী। এর একটি রানীশংকৈল কুলিক নদী। এ নদীর বালু তুলে বিক্রি করছেন এলাকার প্রভাবশালীরা।একইভাবে এক শ্রেণীর ভুমিদস্যুর দখলে কুলিক নদী এখন ফসলের মাঠ ঞিসেবে পরিণত হয়েছে।আর এদিকে  টাংগন নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা ঠাকুরগাঁও শহর। এ নদী দখল হয়ে পরিণত হয়েছে  সুরু নালা খালে, শহর রক্ষা বাঁধের উপর নির্মান হচ্ছে বহুতল বাড়ি-ঘরও। এক সময়ের প্রানবন্ত এই নদীতে এখন বর্ষাতেও কেমন বেশি পানি থাকে না। শুধু টাংগন নয়, একই অবস্থা নালার মতো হয়ে যাওয়া টাংগন নদী দেখলেও বোঝার উপায় নেই সেটি এক সময়কার প্রানবন্ত টাংগন নদী। এর তীরে গড়ে উঠেছিল ঠাকুরগাঁও শহর।ঠাকুরগাঁওয়ে টাংগন নদীর তীরে এখন গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। নদী দখল করে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। নদীর রক্ষা বাঁধের উপর সম্প্রতি নির্মান করা হয়েছে বেশ কিছু পাকা বাড়ি ঘর। যা হুকমীর মুখে শহর রক্ষা বাঁধটিও।এছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালীরা কোন প্রকার নিয়মনীতি ছাড়াই নদী দখল করে বহুতল ভবন স্থপনা নির্মান করছে। একের পর এক নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা তোলায় ফলে জেলার অনেক নদী ভরাট হয়ে মরে যাচ্ছে।স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি এখনই এই দখল তান্ডব ঠেকানো প্রয়োজন নইলে নদী গুলোর অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। এক সময় অন্যান্য মানুষও নদী দখল করে স্থাপনা তোলার কাজ শুরু করে দিবেন এমন আসংকা ব্যত্দ করেন ঠাকুরগাঁয়ের সচেতন মহলটাংগন তীরে বসতবাড়ি তৈরি করা ব্যক্তিদের দাবি, যে জমির উপর বাড়ি নির্মান করছেন সেগুলো তাদের ক্রয়কৃত।নদী রক্ষা আইনে উল্লেখ্য রয়েছে নদীর সীমানার ৩০ ফিট জায়গা নদীর অর্ন্তভুক্ত। কিন্তু কেনইবা সেই আইন কেউ মানছে না ।আইন অনুসারে ‘পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’-এর মাধ্যমে সকল নদী, জলপথ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা বাপাউবো-এর উপর অর্পণ করা হয়। জাতীয় পানি নীতি এবং জাতীয় পানি পরিকল্পনার আলোকে পানি সম্পদ সেক্টরের প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মূল্যায়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণের দায়িত্বও এ সংস্থাকে দেওয়া হয়।কিন্তু এখন পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও নদী রক্ষার প্রশাসনে'র কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। ইতোমধ্যে প্রশাসনের নিরবতা নিয়ে জনমতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বার বার নদী রক্ষায় দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করেছেন। তবে নদী রক্ষায় প্রশাসনিক কাজে কোনো সাফল্য নেই বললেই চলে। ২০০৯ সালে দেশের উচ্চ আদালত থেকে নদী রক্ষায় একটি যুগান্তকারী রায় প্রদান করে যাতে বলা হয়, ‘নদী রক্ষার প্রথম কাজ হিসেবে নদীর সীমানা নির্ধারণ ও দখলমুক্ত করতে হবে’। নদী রক্ষার লক্ষ্যে নদী টাস্কফোর্স গঠন করা হলেও টাস্কফোর্স গত ৭,৮ বছরে একটি নদীও দখলমুক্ত করতে পারেনি।
বরং অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নদীর বিশাল আয়তনের জমি ছেড়ে দিয়ে ভুল স্থানে খুঁটি বসিয়ে দখলদারদের বৈধতা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ একটি নদী রক্ষা কমিশনও গঠন করা হলেও তার কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই, তাই একটি নির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী নদী কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।
দেশের পরিবেশ ও মানুষ রক্ষার স্বার্থে নদী বান্ধব নীতি ও কার্যক্রম গ্রহণ এবং সরকারি ও বেসরকারি দুই পক্ষ থেকেই নদী দখল, দূষণ ও ধ্বংসের সকল কর্মকান্ড এখনই বন্ধ করা অত্যান্ত জরুরী বলে মনে করছেন এ এলাকার সূধীসমাজ।
বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো পানিশূন্য হওয়ায় নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত কৃষি, মৎস, পশুসম্পদ, শিল্প-কারখানা, দেশের মানুষের জীবনযাত্রা, প্রকৃতি ও কৃষি হুমকির মুখে। আমাদের দেশ নদীমাতৃক, তাই নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে! তাই নদীর অস্তিত্বই আমাদের অস্তিত্ব!
ঠাকুরগাঁও শহরের সচেতন মানুষের এখন একটাই দাবি অচিরেই এই নদীগুলো দখলমুক্ত ও আবার খনন করে নদীকে তার পূর্বের প্রমত্তা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সকলেই।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 7583720312623775756

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item