বড় হয়ে অসহায়দের সেবা করতে চায় কৃপা

আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
ছোট্ট ছোট্ট ভাবনা আর ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন নিয়েই আমাদের এই জীবন। প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি স্বপ্ন প্রভাবিত করে আমাদের এই জীবনকে। তাই জীবনের চলার পথে প্রতিটি মানুষ স্বপ্ন দেখে। ঠিক তেমনি ভাবে স্বপ্ন দেখছেন ঠাকুরগাঁও শহরের হাজীপাড়া এলাকার কামরুল হাসানের মেয়ে সানজিদা মারিয়া কৃপা (৯)। সে ৩য় শ্রেণীতে ঠাকুরগাঁওয়ের সুনামধন্য বিদ্যাপিঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার স্বপ্ন সে ডাক্তার হবে অসহায় মানুষের সেবা করবে। বড় হয়ে সে তার বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরনের জন্য মেডিকেলে পড়তে চায়। তার ইচ্ছা বড় হয়ে সে হবে অনেক বড় একজন ডাক্তার। যার জন্য এখন থেকেই সে ভালো করেই তৈরী হচ্ছে সব দিক দিয়ে। লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিটি দিক দিয়ে সে প্রথম স্থান অধিকার করছে। কেননা তার স্বপ্ন পূরন করার লক্ষে প্রয়োজন অনেক মেধার।  জানা যায়, সানজিদা মারিয়া কৃপা ২০১১-১২ সালে প্রথম প্লে শ্রেণীতে ঠাকুরগাঁও রয়েল কিন্টার গার্ডেন স্কুলে ভর্তি হয়। এর পর প্রথম পরীক্ষায় রোল হয় ০৩। আস্তে আস্তে চলে আসে আরো সামনের দিকে। সেখান থেকেই শুরু হয় তার জীবনের পথ চলা। সেখান থেকেই সে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করা শুরু করে।  ২০১২ সালে সে নিজের হাতে প্রথম আর্ট করে সে চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে। তার এই আর্ট শেখার অবদান দিয়েছেন তার আর্ট শিক্ষক তার প্রিয় জাদু স্যারকে। এরপর থেকে সে আার্ট এর পাাপাশি কবিতা আবৃতি করা,সুন্দর হাতের লেখা সহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করা শুরু করে। তার প্রতিটি প্রতিযোগিতায় সে প্রথম স্থান অধিকার করতে করতে আজ তার কাছে প্রায় ৩০টির বেশি সার্টিফিকেট রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে তার হাতে সার্টিফিকেট তুলে দিয়েছেন প্রাক্তন জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস, কোনটি তুলে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও ১ আসনের এমপি বাংলাদশ আ;লীগের প্রেসিডিয়াম সমস্য রমেশ চন্দ্র সেন আবার কিছু কিছু তুলে দিয়েছেন বর্তমান জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল। এভাবে প্রতিটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করাতে যেমন বাড়ছে পরিচিতি তেমনি প্রিয় হতে চলছে প্রতিটি মানুষের কাছে কৃপা।  এরপরে ২০১৭ সালে সে ঠাকুরগাঁও সরকরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম বারেই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সেখানে ভর্তি হবার সুযোগ পায়। থেমে নেই কৃপা। দিনের পর দিন প্রতিটি জায়গায় অংশ গ্রহন করছে সে। বিদ্যালয়ের সে মেধাবী ও নর্ম ভদ্য চরিত্রের মেয়ে হিসেবেই পরিচিত বলে জানান স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তারা আরো বলেন কৃপা শুধু পড়াশুনা নয় সে প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে রয়েছে। আর্ট করা ,কবিতা আর্বিতি করা সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সে ভালো। কৃপা ২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও হাজীপাড়া এলাকায় মুসলিম সমভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কামরুল হাসান ও লুবনা আক্তারের দুই সন্তানের মধ্যে কৃপা ছোট। কিন্তু ছোট হলেও তার স্বপ্নটি অনেক বড়।  তার বড় ভাই লাবিব হোসেন ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।  মা লুবনা আক্তার জানান, প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে আমার মেয়েও দেখেছে। মানুষ যে স্বপ্ন দেখে তা কারও পূরন হয় আবার কারো হয়না। তবু বড় হওয়ার জন্য প্রতিটি মানুষেরই স্বপ্ন থাকা দরকার। তাই আামার মেয়েও তার স্বপ্ন পূরন করার লক্ষ্যে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আমরা তার এই স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে তার সাথে কাঁধে কাঁদ মিলিয়ে চলছি। ডাক্তার হবার ইচ্ছাটির কারন জানতে চাইলে কৃপা মুখে হাসি এনে বলে, ডাক্তার হয়ে আমি গরিব-দুখির সেবা করতে চাই। পড়ার ফাঁকে কৃপার সময় কাটে গল্পের বই,কার্টুন,আর্ট করা কবিতা পড়া নিয়ে। এসব করা অদম্য শখ তার।  পিতা কামরুল হাসান বলেন, প্রতিটি মানুষ দেখতে যেমন একরকম হয়না না, ঠিক তেমনি সকল মানুষের স্বপ্নও একরকম না। প্রতিটি মানুষ বিভিন্ন রকমের স্বপ্ন। কেউবা ইঞ্জিনিয়ার, কেউবা পাইলট, কেউবা পুলিশ, কেউবা হতে চায় ডাক্তার। এত স্বপ্নের মাঝেই আমার মেয়ে কৃপা বেছে নিয়েছে সে ডাক্তার হবে। আমরা তার ইচ্ছাকে সেলুট করি। জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেন, কৃপা অনেক মেধাবি একজন শিশু। আমি ঠাকুরগাঁওয়ে আসর পরে অনেকবার তার হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছি। খুব কম এমন শিশু দেখেছি যে নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তার করে এতো অল্প বয়সে। আমি তার ইচ্ছার কদর করি আর তার সাথে দুয়া করি সে যেন তার লক্ষ্যে পৌঁেছ যেতে পারে।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 5456652090418580992

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item