"আমেনা বেওয়ার বয়স্ক ভাতার জন্য আকুতি"

আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি-
ভাবুনাই জীবনের শেষ বেলা মোক রাস্তাত নামিবা হবে। মোর বুড়ো স্বামী মরার পর মোক মানুষের থেকে চাহে বেড়াবা লাগিবে। এই শেষ বেলায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাহেনে কাম করিবা লাগিবে এটা ভাবুনাই। শুনেছু হাসিনা সরকার বুড়ো-বুড়িগো বয়স্ক ভাতা দেচ্চে,যার স্বামী মারা গেইছে তাক বিধবা ভাতা দেচ্চে। শুধু শুনি গেনু কই মোর তো এলাও হইলনি। তাহলে মোর কি বয়স হয়নি এলাও.? মোর তো স্বামী মইরে গেছে । মোক কি দিবেনি .? নাকি মরার পর পাম বয়স্ক ভাতা আর বিধবা ভাতা?
এমনি একজন অসহায় বৃদ্ধা ঠাকুরগাঁওয়ে আমেনা বেওয়া (৬২)। মনের মধ্যে অত্যন্ত দু:খ ও কান্নাভরা কন্ঠস্বড়ে তার কষ্টের কথা গুলো বলেন আমেনা। প্রায় সময় তিনি এক-পা দো-পা করে দ্বারে দ্বারে মানুষের বাসায় গিয়ে কাজ করছেন এই বয়সে সেই সাথে চাচ্ছেন ভিক্ষা। শুধু মাত্র একটি শান্তির জীবন যাপনের জন্য।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও শহরের পূর্ব গোয়ালপাড়ার ২ নং ওয়াডের্র নিবাসী মৃত  তোফির উদ্দিনের স্ত্রী আমেনা বেওয়া। স্বামী ছিলেন দিন মজুর। ৩৩ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। এই অভাবে সংসারে কিছু রেখে যেতে পারেননি তাদের জন্য। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৪ সন্তানের জননী। স্বামী থাকা অবস্থায় দুই ছেলে মারা যায় তার। বর্তমানে অন্য দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আমিনার(৪৫) রিকশা চালায়। যার বাসায় আমেনার আশ্রয় স্থল। যেখানে নেই কিছু সেখানে শত কষ্টের মাঝে মা’কে রেখেছেন আমিনার। ছোট মেয়েটির নাম রেখানা বেগম(৩৫)। অনেক কষ্ঠে পঞ্চগড় জেলায় তার বিয়ে দেন তিনি।
কার ভরসায় থাকবো.? নেই বয়স্ক ভাতা নেই কোন বিধবা ভাতা। সেটা হলে তো কিছুটা হলেও একটু শান্তি পেতাম। কিছুতেই আশার কোন প্রদিপ দেখতে না পেয়ে জীবনে চলার পথে একটু সুবিধার জন্য অবশেষে ভিক্ষা করা আর মানুষের বাসায় কাজ করার পেশাটাই বেছে নিয়েছেন আমেনা বেওয়া। 
সেই এলাকার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রায় দেখি এই বুড়িকে রাস্তায় যেখানে সেখানে বসে থাকতে। শুনেছি স্বামী নেই। অনেক গরীব। শুনেছি তার নাকি বয়স্ক ভাতা / বিধবা ভাতাও নেই। তার এই ভাতাগুলোর কোন ব্যবস্থা হলে হয়তো তাকে আর মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবেনা।
আমেনা বেওয়া আরো জানান, এই বুড়ো বয়সে প্রায় সময়ে পার্শবর্তী এলাকার মানুষদের দ্বারে দ্বারে যেতে হয় তাকে। যখন একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েন তখন রাস্তার যেখানে সেখানে বসে একটু বিশ্রাম নেন। আর খুদে লাগলে কোন দোকানে গিয়ে বলেন ভাই “একখানা বিস্কুট দিবো ক্ষুধা লাগিছে”। কেউ দিলে খেয়ে নেনে। আর না দিলে ঠিক আগের মতোই মানুষের দ্বারে চলে যান।
ভাতার পাওয়ার ব্যাপারে তিনি কারো কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন কিনা তা জানতে চাইলে আমেনা বলেন,হামার এইঠে কার আগে যে মেম্বার ছিল বাবলু। অয় মোক কহেছিল যে তোক দিম। কিন্তু পরে আর কোন খবর নাই। পরে আবার বর্তমান মেম্বারকে কহিছু অয় মোক কহিছে যে মোর কাছে অল্প কার্ড আসে কাকে দিবো আর কাকে দিবোনা। এইলা কহে মোক আর কিছু দেইনি।
তিনি আরো বলেন, মুই আজ দিয়ে হেনে বছর খানেক হয়ে গেল মানুষের দ্বারে দ্বারে যাইতে যাইতে হাপসে গেছু। আর ভাল্লাহে না। মোর শরীর খারাপ। সরকার কোনদিন মোক সাহায্য দিবে,ভাতা দিবে। যেদিন মুই মরে যাম সেলা দিবে।
এ ব্যাপারে ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, এই আমেনার নামে আমি শুনেছি। তবে আমাদের এইপাশে এমন আরো অনেক বৃদ্ধা আছে। আমি চেষ্টা করবো যেন তার একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 236177377634465808

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item