ঠাকুরগাঁওয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ৩ স্কুল শিক্ষার্থীর সাহসী দৃষ্টান্ত স্থাপন

আব্দুল আওয়াল, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এগিয়ে এসেছে স্কুল ছাত্রীরা । পনেরো দিনে ৩ জন স্কুল ছাত্রী সাহসী ভুমিকা রেখে নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করেছে । এরা হলেন দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তসলিমা ও হালিমা এবং মাছখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সানজু আক্তার মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হেল্প লাইন ১০৯ মোবাইল করে সাহসী হয়ে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালো ।গত বৃহস্পতিবার বিকালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের কার্তিকা পাড়া গ্রামের সমশের আলীর নাবালিকা কন্যা ও মাছখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সানজু আক্তার বাল্য বিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হেল্প লাইন ১০৯ মোবাইল করে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালো । সানজু আক্তার কে তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ।গত বুধবার বরের পক্ষের লোকজন সানজু কে দেখতে আসে । সব্ার পছন্দ হয় । সানজু আক্তার কোন মতে বিয়েতে বসবে না।সে লেখাপড়া করে নিজে সাবলম্বী দাড়াঁতে চাই। বিয়েতে সম্মতি না থাকায় হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন দেয় । এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে সমাজসেবা অফিসেকে ফোন দেয় । সমাজসেবা অফিসার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আ: মান্নান বিষয়টি পাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বুলবুলকে জানান । সমাজ সেবা অফিসার ও পাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বুলবুল, ইউপি সদস্য সহ সানজরু বাড়ীতে হাজির হয় ।বাল্য বিবাহ দেওয়া যাবেনা এ বিষয়ে বাবা মাকে বুঝানো হয় । সানজুর পিতার নিকট বাল্য দিবেনা এইমর্মে অঙ্গিকার নামা নেওয়া হয় । সানজু জানান, বিয়ে দেওয়ার জন্য বরের বাড়ির লোকজন কে দাওয়াত দেওয়া হয় । আমি পরিবার কে জানিয়েছি আমি লেখাপড়া করবো নিজে স্বাবলম্বী হয়ে তার পর বিয়েতে বসবো বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, ঈমাম, পুরোহিত, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে এটুআই প্রোগাম,প্লান ইন্টারন্যাশনাল সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ষ্টুডেন্টস ডাটাবেজ প্রকল্পের আওতায় সচেতনামূলক কাজ শুরু হয়েছে। বালবিবাহ প্রতিরোধ করতে স্কুলের শিক্ষার্থীর এগিয়ে এসেছে । এ প্রশিক্ষণ নেয় সানজু কেগম ।১৮ সেপ্টেম্বর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও বিদ্যালী পাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের কন্যা তসলিমা আক্তার (১৪ ) সে দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী , রোল নম্বর ১, জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে তসলিমা নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়েছে । তসলিমার পথ অনুসরন করে গত ২২ সেপ্টেম্বর ঐ স্কুলের আরেক নবম শ্রেণির ছাত্রী , রোল ৩, জিয়াখোর গ্রামের হারুন অর রশীদের মেয়ে হালিমা আকাতর হানি (১৪ ) কে তারঁ বাবা মা বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করে । এ বিয়েতে হালিমা রাজি না থাকায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আ: মান্নানের মোবাইল নাম্বারে বাল্য বিবাহ বিষয়টি এসএম এস মাধ্যমে জানায় । ইউএনও হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয় ।আর বাল্য বিবাহ দিবেনা এই মর্মে ইউএনওর নিকট মুচলেকা দেন । হালিমা জানান, আমাকে না জানিয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য বাবা মা দিনক্ষন ঠিক করলে আমি ইউ এনও স্যার কে মোবাইলে এস এম এস দিয়ে বাল্য বিব্হা বিষটি জানায় । স্যারের হস্ত ক্ষেপে আমি বাল্য বিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেলাম । বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ষ্টুডেন্টস ডাটাবেজ প্রকল্পটি এ উপজেলায় বেশ সাড়া জাগিয়েছে । স্কুলের শিক্ষাথীরা বাল্য বিবাহ হলে কুফল সম্পর্কে জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষন নিয়ে নিজের বাল্য বিয়ে নিজে ঠেকানো শুরু করেছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন শুরু হয়েছে । অভিভাবক গণ সচেতন না হওয়ার কারনে প্রতি বছর প্রায় দু শতাধিক বাল্য বিবাহ হতো । এদের স্কুলগ্রামী পঞ্চম শ্রেণির হতে নবম শ্রেণির ছাত্রীর সংখ্যায় বেশী । লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঝড়ে পড়তো । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আ: মান্নান জনান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে যে ভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব হবে ।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 6753411498419761148

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item