পূর্বতন ছিটমহলে দশদিন ব্যাপী শুমারী শুরু হয়েছে আজ

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ৫ অক্টোবর॥
উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলার ডিমলা,পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর, কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারি, সদর, রাজিবপুর ও রৌমারি লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, সদর ও পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত বিলুপ্ত ছিটমহলের শুমারী শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) হতে দশদিন ব্যাপী চলবে এই শুমারী ১৪ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত। এই শুমারীর নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে থাকা পূর্বতন ছিটমহলের অধিবাসীদের শুমারী/২০১৭।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্য রাতে দীর্ঘ ৬৮ বছর বন্দী জীবন হতে মুক্তি পাওয়ার পর এই প্রথম বিলুপ্ত ছিটমহলের এই  শুমারির কার্যক্রম শুরু করছে বাংলাদেশ  পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

এ ব্যাপারে আজ বুধবার ডিমলা উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এমদাদুল হক খান জানান, জরিপের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত জরিপ দল নির্দিষ্ট ফর্মে ছক অনুযায়ী পূর্বতন ছিটমহলবাসীদের পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করবে। ভবিষ্যতে জরিপ পরিচালনার নতুন কাঠামো প্রস্তুত, বিলুপ্ত ছিটমহলে বসবাসরত অধিবাসী ও পরিবারের সংখ্যা গণনা এবং তাদের ঘরের কাঠামো ও বিদ্যমান সুবিধাগুলো উল্লে¬খ থাকবে। সুবিধাবঞ্চিতদের তালিকা করে আয়ের উৎস, পেশা ও সাক্ষরতার কথা উল্লেখ করে এসব মানুষকে অর্থনীতির মূল ধারায় আনা হবে। অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা নিরুপণ করে এ সংক্রান্ত গঠনমূলক ডাটাবেজও তৈরি করা হবে। এ ছাড়া শুমারির ফলাফল দ্রুততম সময়ে প্রকাশ নিশ্চিত করা হবে।

সুত্রমতে, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর সঠিক তথ্য সরকারের কাছে থাকলে যেকোনো উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ দ্রুততম সময়ে নেয়া যাবে। তাদের আর্থিকভাবে সচ্ছল করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সেগুলোর বাস্তবায়নেই এ জরিপ।
তাই এই শুমারীর নাম দেয়া হয়েছে “বাংলাদেশের অভ্যান্তরে থাকা পূর্বতন ছিটমহলের অধিবাসীদের শুমারী/২০১৭”।

সুত্র জানায়, ৬৮ বছরের বন্দী জীবন কাটিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহল গুলোতে সরকার ইতোমধ্যে ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ শেষ করেছে এবং উন্নয়নের কাজ চলছে। এ সকল বিলুপ্ত ছিটমহলে ৩৭ হাজার ৫৩৫ জন নাগরিক। এরমধ্যে ভারতের নাগরিক হতে ৯৮৭ জন নাম লিখালেও দেশ পরিবর্তনে ভারত চলে যায়  ৯২২ জন।  বাকী ৬৫ জন   ভারতের তালিকা হতে নাম কেটে  বাংলাদেশে থেকে যায়।

প্রসঙ্গতঃ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থল সীমানা চুক্তি ও ২০১১ সালের প্রটোকল অনুসরণের মাধ্যমে উভয় দেশের স্থল সীমানা চুক্তি চূড়ান্ত ভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১ ছিটমহল বাংলাদেশের ভূখন্ড হয়ে গেছে। অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১ ছিটমহলও এখন ভারতের। ফলে বাংলাদেশের মধ্যে চলে এসেছে ১৭ হাজার ১৬০ একর জমি।এসব ভূখন্ডে অবস্থিত উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কসহ ছোট ছোট কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজার, কবরস্থান, মন্দির ও শ্মশানঘাট, কমিউনিটি সেন্টার, খাল, ঘাট ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে স¤পৃক্ত করার মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।প্রকল্পের আওতায় রয়েছে- ৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার উপজেলা, ১৭ দশমিক ১৯ কিলোমিটার ইউনিয়ন, ১৬৭ দশমিক ৮২ কিলোমিটার গ্রাম ও ২৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার মাটির সড়ক উন্নয়নের পাশাপাশি ইউনিয়ন সড়কে ২৭ মিটার কালভার্ট ও গ্রাম সড়কে ৬৮৪ মিটার কালভার্ট নির্মাণ। নির্মাণ করা হচ্ছে ১২টি মার্কেট, গ্রোথ সেন্টার, ১৫টি মসজিদ, আটটি কমিউনিটি সেন্টার, সাতটি মন্দির, আটটি পুকুর ঘাট, সাড়ে ১০ কিলোমিটার খাল, চারটি কবরস্থান ও তিনটি শ্মশানঘাটও। ২৩০ কিলোমিটার ¯ে¬াপ প্রটেকশনসহ বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হবে। #

পুরোনো সংবাদ

লালমনিরহাট 2513112813797146530

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item