প্রধানমন্ত্রীর স্বামীর ভাতিজি পরিচয়ে তদবির, অভিযোগ করলেন ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল-
প্রধানমন্ত্রীর স্বামী প্রয়াত পরমানু বিজ্ঞানী ডঃ এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ভাতিজি পরিচয়ে পীরগঞ্জ আ’লীগের সাবেক নেত্রী মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অফিসপাড়ায় দালালী-তদবির করছে বলে জানা গেছে। এতে ওয়াজেদ মিয়ার মান ক্ষুন্ন হওয়ায় ডঃ ওয়াজেদ মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল অভিযোগ করেছেন। ওই নেত্রী পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
অভিযোগে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের বহি®কৃত নেত্রী মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ভাতিজি পরিচয় দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় অফিসপাড়ায় বদলীসহ নানান বিষয়ে দালালী-তদবির করছেন। সম্প্রতি তিনি ওই পরিচয় দিয়ে রংপুর শিক্ষা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে বদলীর করার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে যান। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলার শিক্ষা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে রংপুরে বদলী করে আনার জন্যও তদবির করেন বলে জানা যায়। একপর্যায়ে মুক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে ওই প্রধান প্রকৌশলী রংপুরের পীরগঞ্জে ওয়াজেদ মিয়া পবিারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তার পরিচয় ভুয়া বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ ব্যাপারে রংপুরের শিক্ষা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি রংপুরে চাকরী করছি। আমাকে কে বদলী করতে গেল তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে জানতে প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোঃ হানজালাকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করেলও তিনি রিসিভ করেননি। অপরদিকে রংপুর নর্দার্ন মেডিকেলের স্থগিত শিক্ষার্থী ভর্তি চালু করার জন্য মুক্তি ড. ওয়াজেদ মিয়ার ভাতিজি পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আব্দুর রশিদ মিয়ার কাছে যান। পরে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে ঢাকা থেকে রংপুর নর্দার্ন মেডিকেলের ডাঃ দেলোয়ার হোসেনের কাছে ফোন করা হয়। এরপর ডাঃ দেলোয়ার হোসেনই প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা ও ওয়াজেদ মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি নামে ওয়াজেদ পরিবারে কোন সদস্য নেই বলে জানিয়ে দেয়া হয়। ওয়াজেদ মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা আ’লীগের সহসভাপতি একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, আমার চাচা পরমানু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া একজন নির্লোভ মানুষ ছিলেন। তার পরিচয় দিয়ে মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি বিভিন্ন দফতরে দালালী-তদবির ক রছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। এতে চাচার সম্মানও ক্ষুন্ন হচ্ছে। সে (মুক্তি) আমাদের পরিবারের কেউ না। সে তদবির-দালালী করতেই পারে। কিন্তু ওয়াজেদ মিয়ার ভাতিজি পরিচয় দিচ্ছে কেন? বিষয়টি পীরগঞ্জ থানার ওসি এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে জানিয়েছি। থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। এখনো লিখিত পাইনি। অপরদিকে মুক্তি জানান, আমি খালাম্মার পরিচয়ে বিভিন্ন দফতরে কাজ করি। আমরা তো পীরগঞ্জের মানুষ। পীরগঞ্জে একজন বিশিষ্ট মানুষের বাড়ী। আমরা কিন্তু একটা পরিচয়ই প্রয়োগ করি। তার পরিচয়েই আমরা কাজ করতে পারি, এটা কোন অপরাধ না। আর আমি ওয়াজেদ মিয়ার পরিচয় সরাসরি দেইনি। তিনি আরও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় আমাকে দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) চিঠি দিয়ে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেছেন।
জানা গেছে, মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি পীরগঞ্জের বড়দরগাহ ইউনিয়নের গুর্জিপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ওই নির্বাচনে তিনি পরাজিতও হন। মেশকোয়ারা হাবিব মুক্তি পুর্বের উপজেলা আ’লীগ কমিটির মহিলা সদস্য ও বড়দরগাহ ইউনিয়ন আ’লীগের সহসভাপতি ছিলেন। এবারে তিনি উপজেলা আ’লীগ কমিটির সদস্য নন বলে জানা গেছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1491196783765493705

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item