অর্থাভাবে মেধাবী পরিমল রায়ের মেডিক্যালে ভর্তি অনিশ্চিত

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

 সৈয়দপুর সরকারি কারিগরী মহাবিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র পরিমল রায়। এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে সে। কিন্তু অর্থাভাবে তাঁর ভর্তি এখন প্রায় অনিশ্চিত। গতকালও ভর্তির টাকা সংগ্রহে সৈয়দপুর সরকারি কারিগরী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ বিভিন্ন জায়গায় দৌঁড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে তাকে।
 তাঁর ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নীলফামারী সদরে টুপামারী ইউনিয়নের দাউদ গ্রামের স্বগীয় জ্যোতিশ চন্দ্র রায়ের দ্বিতীয় পুত্র পরিমল রায়। তাঁর জন্মের ৩/৪ বছরের মাথায়  বাবা জ্যোতিশ চন্দ্র রায় আকস্মিক মারা যান। তাঁরই  বিধবা মা ললিতা রাণী রায় ও বড় ভাই নিপুন চন্দ্র রায়ই অনেক কষ্ট করে লালন পালন করে এ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে এসেছেন পরিমলকে। তাদের নিজের ভিটেবাড়ি ছাড়া তেমন কোন জায়গায় জমি নেই। বড় ভাই নিপুল চন্দ্র রায় এক সময়ে এলাকায় দিন মজুরী করতেন। বর্তমানে তিনি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর যৎসামান্য আয়েই তাদের তিন সদস্যের পরিবারের ভরণপোষন চলে না।  পরিমল জানায়, তাদের অভাব-অনটনের সংসারে তাকে লেখাপড়ার করানোর মতো সামর্থ্য ছিল না তাঁর দরিদ্র পরিবারের। কিন্তু তারপর লেখাপড়ার প্রতি পরিমলের প্রবল আগ্রহ আর ঝোঁক দেখে তাকে বাড়ি পাশের রামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয় তার বিধ্বা মা ও  বড় ভাই। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে ভর্তি পেয়ে নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় পরিমল রায়। সেখানে ভর্তির পর লেখাপড়ার প্রতি তাঁর মনযোগ ও আগ্রহ দেখে  অল্পদিনেই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের নজরে আসে সে। তাঁর পরিবারের  চরম অভাব অনটনের কথা জানতে পেরে বিনা পয়সা প্রাইভেট পড়ানোসহ নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পরিবারের শত দারিদ্র্যের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে যায় সে। এভাবে দুইবেলা খেয়ে না খেয়ে পড়ালেখা করে পরিমল রায় নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে এবং ২০১৫ সালের এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। এসএসসিতে সাধারণ বৃত্তিও লাভ করে পরিমল। পরবর্তীতে সৈয়দপুর সরকারী কারিগরী মহাবিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীণ হয় সে। গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২০১৭- ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সুযোগ লাভ করে সে। তাঁর মেরিট পজিশন ২০৫৮ এবং মেধা স্কোর ৭২.২৫। কিন্তু বর্তমানে ভর্তির টাকা অভাবে তাঁর মেডিক্যালে ভর্তি ও ভবিষ্যতের অধ্যয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শনিবার সৈয়দপুর সরকারি কারিগরী মাহবিদ্যালয়ের বিদ্যালয় শাখার শিক্ষক কমনরুমে বসে কথা হয় তাঁর সঙ্গে এ প্রতিনিধির। সে জানায়, বিধবা মা ও বড় ভাই অনেক কষ্ট করে তাকে লেখাপড়ার খরচ যোগান। বিদ্যালয় ও কলেজের স্যাররাও তাকে অনেক সাহায্যসহযোগিতায় দিয়েছেন। আজ আমি মেডিক্যালে ভর্তি সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারব কিনা জানি না। তারপরও সে জানায়, মেডিক্যালে অধ্যায়ন করে সে একজন বড় চিকিৎসক হয়ে তাঁর মতো অসহায় গবীরদুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান। জানি না আমার সে স্বপ্ন আদৌ পূরণ হবে কিনা ? তাছাড়া শুনেছি মেডিক্যালে লেখাপড়ার জন্য অনেক খরচ লাগবে। সেই খরচ আমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে মোটেই যোগান দেওয়া সম্ভব হবে না।
দরিদ্র  পরিবারের সন্তান মেধাবী পরিমল রায়কে সাহায্য করতে চাইলে তাঁর ০১৭৬৫-২৩৩৮৮৬ নম্বর মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে পারেন। 

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 5485991411140695694

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item