এ কি কান্ড! জলঢাকায় ছেলের অপহরনের নাটক

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১০ অক্টোবর॥
বাবার ভালবাসা কতখানী গভীর তা যাচাই করতে স্কুল ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী নিজের অপহরন নাটক সাজিয়ে নীলফামারীর জলঢাকায় তোলপাড় সৃস্টি করেছে। পুলিশের অভিযানে এই চাঞ্চল্যকর কাহিনী প্রকাশ পেয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী (১৬) জলঢাকা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মেসেঞ্জার আব্দুল আহাদ সরকারের ছেলে। তারা উপজেলার সরকারী কোয়ার্টারে স্বপরিবারে বসবাস করে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, জলঢাকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাজ্জাত হোসেন মেহেদী। সে চলতি মাসের ৭ অক্টোবর (শনিবার) বিকেলে বাসা থেকে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেনি। তার বাবা মা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে হন্য হয়ে খুঁজে না পেয়ে রাতে মোবাইলে একটি কল পায়। বলা হয় সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী অপহরন হয়েছে। তার মুক্তির জন্য টাকা লাগবে। এ ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেন মেহেদীর বাবা জলঢাকায় থানায় অভিযোগ দাখিল করে।
ওই অভিযোগ পেয়ে জলঢাকা থানা পুলিশ মাঠে নামে। পুলিশে জোড়ালো তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পায়। সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী প্রাইভেট শেষে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাথাভাঙ্গা ডাকবাংলো (ওয়াপদা পাড়া এলাকা সংলগ্ন) আব্দুর রহমানের বাড়িতে তার ছেলে আলী হোসেনের (১৬) কাছে আশ্রয় নেয় এবং তার সাথে পরামর্শ করে অপহরণ নাটক সাজায়। এরপর তার বাবার কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন চায়। মুক্তিপণ দাবি করে ফোন করে মেহেদীর বন্ধু আলী।

জলঢাকা থানা পুলিশ মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তাদের অবস্থান সনাক্ত করে আব্দুর রহমানের বাড়ী থেকে গত রবিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মেহেদীকে উদ্ধার করে। পরে মেহেদী পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, অপহরণের নাটক সাজিয়ে তার বন্ধু আলী হোসেনকে দিয়ে সে তার বাবাকে ফোন করিয়ে টাকা চেয়েছে।
কারন হিসাবে সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী জানায়, লিখাপড়া নিয়ে তারা বাবা তাকে শাসন করে বেশী। যা তার কাছে মনে হয়েছে তার বাবা তাকে ভালবাসেনা। তাই সে তার বাবার ভালবাসা পরীক্ষা করতে এই নাটক সাজায়। পরে পুলিশ তাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়।

এ ব্যাপারে জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সাজ্জাদ হোসেন মেহেদীর নিখোঁজের কথা উল্লেখ করে তার বাবা থানায় একটি জিডি করেছিল। যার নম্বর-২৯৯। তারিখ ০৭/১০/২০১৭ ইং। জিডি পাবার পর বিষয়টি নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু করলে এর নেপথ্যে থাকা অপহরণ নাটক বের হয়ে আসে।
ওসি আরো বলেন, সাজ্জাদ হোসেন মেহেদী ও তার বন্ধু আলী হোসেন তারা দুইজনই নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এমন ভুল করবে না বলে মুচলেকা লিখে দিলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

প্রসঙ্গতঃ বিষয়টি হেলাফেলা না করে শুধু জলঢাকা নয়, নীলফামারী জেলা সহ সারা দেশের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। কারন এমন ঘটনা নিয়ে কোন প্রতারক বা বন্ধু ঘটাতে না পারে। এর আগে আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল ডোমার উপজেলায়। সেখানে টাকার জন্য বন্ধুদের সহায়তায় নানাকে মেরে ফেলে নাতী। আসুন আমরা সকলে সচেতন হই। যাতে এমন ঘটনার আর না ঘটে। 

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4461440300318688060

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item