জলঢাকায় জামায়াত সমর্থকের বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে সভা বর্জন করলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী
https://www.obolokon24.com/2017/10/jaldhaka_22.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২১ অক্টোবর॥
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জামায়াত সমর্থিত জলঢাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলীর বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে সভা বর্জন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আজ শনিবার দুপুর ওই ঘটনাটি ঘটে।মন্ত্রীর সভাস্থল ত্যাগের পর জলঢাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুটি গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে মাহফুজার রহমান ফিলিপস (৪৫) আহত হয়। তাকে প্রথমে উপজেলা হাসপাতালে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ সব ঘটনার আগে মন্ত্রী ওই ভবনের ফলক উম্মোচন ও ফিতা কেটে ভবনের উদ্ধোধন করেন।
জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ রাশেদুল হক প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা-কিশোরীগঞ্জ আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুজিবুর রহমান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রিয় কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক সরকার ফারহানা আখতার, জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হামিদুর রহমান প্রমুখ।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের সভা শুরুর কিছু পরে সেখানে বক্তব্য দেন জামায়াত সমর্থিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী। বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আসলে মন্ত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চান কিভাবে এখানে জামায়াত সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান বক্তব্য দিলেন। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মন্ত্রী সভাস্থল ত্যাগ করেন। এতে সভা পন্ড হয়ে যায়। মন্ত্রী সভাস্থল ত্যাগের পর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও মাহফুজার রহমান ফিলিপস আহত হয়।
এ ঘটনায় জলঢাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলী বলেন, সভায় জামায়াত সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় মন্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে সভা বর্জণ করেন।
হাতাহাতির ঘটনার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি বক্তব্য দেওয়ার সময় এমপির লোকজন আমাকে নিয়ে কটাক্ষ করায় আমার সমর্থকরা এর প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দ্বন্দের সৃষ্ঠি হয়।
এ বিষয়ে কথা বললে সভার সভাপতি জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাশেদুল হক প্রধান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী বলেন, আমি দল করি না। জামায়াতের সমর্থকও না। আমি উপজেলা পরিষদের দেয়া আমন্ত্রন পত্র পেয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছি। আমাকে বক্তব্য দিতে বক্তব্যও দিয়েছি। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে আমাকে এরকম একটি পরিস্থিতিতে ফেলানো হয়েছে।
তবে নীলফামারী -৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে মন্ত্রী জেলার ডোমার উপজেলা শহরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্তাবধানে দুই কোটি ২২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যায়ে নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন।
ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নীলফামারী -১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ঠ সুত্র মতে জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে ব্যায় হয় এক কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।