ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি কি চালু হবেনা?

আব্দুল  আউয়াল, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
১৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি। একের পর এক শুধু মিটিং হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোন ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। কবে হবে এটা চালু? নাকি একেবারেই বন্ধ.? বলতে পাড়ছেনা কেউ। চালু হলে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু আশার যেন শেষ নেই। আর কতো দিন আশা নিয়ে থাকতে হবে যানেন না কেউ। আশারা কোন মুখ দেখতে না পেয়ে আবারো  ঠাকুরগাঁও রেশম বোর্ড চালু করার ব্যাপারে গত ১১ সেপ্টম্বর রাজশাহী রেশম বোর্ডে একটি মির্টিং করা হয়েছে বলে যানা যায়। শুধু চলছে এই সব মিটিং । কিন্তু বাস্তবে এটার কোন পক্রিয়া দেখা যাচ্ছেনা বলে অনেকের অভিযোগ। এর আগেও ২০১৭ সালের ০৩ এপ্রিল বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি মালিকানাধীন ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা পুনরায় চালু করার উদ্যোগে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁওয়ে রেশম বোর্ড চালুর বিষয়ে ১১ সদস্যের একটি দল কারখানাটি পরিদর্শন করেছিলেন।  সে সময় পরিদর্শকরা বলেছিলেন,এই রেশম কারখানাটি চালুর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে গঠন করা কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিলে যে কোন সময় কারখানাটি চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। কিন্তু এখন পর্যন্তকোন আশার আলো পড়েনি এই কারখানাটির উপরে। আশা যেন আশাই রয়ে গেলো। কবে চালু হবে.? কোন সময় গরীবরে মুখে সুখের হাসি ফুটবে? এমন অনেক প্রশ্নই উঠেছে অনেক চাষীর মুখে।  জেলা রেশম বোর্ডের তথ্য মতে, ১৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে  রেশম কারখানাটি। ক্রমাগত লোকসানের ফলে এটি ২০০১ সালে বন্ধ ঘোষণা করার পর আর চালু করা হয়নি। এতে কারখানাটির ১৩৪ জন শ্রমিক ও প্রায় ১০ হাজার রেশম চাষি বেকার হয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়ন, যন্ত্রপাতি পুনরায় স্থাপন ও সম্প্রসারণ (বিএমআরই) করার পরও কারখানাটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে।  ১৯৭৭-৭৮ সালে আরডিআরএস নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ঠাকুরগাঁওয়ের দুরামারি নামক জায়গায় (বর্তমানে বিশিক শিল্প নগরীতে) এই রেশম কারখানাটি স্থাপন করে। পরবর্তীতে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ১৯৮১ সালে কারখানাটি রেশম বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।এরপর কারখানাটি গত ২৬ বছরে পর্যায়ক্রমে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা লোকসান দেয়। এ লোকসানের অজুহাতে ২০০১ সালে কারখনাটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। যার ফলে এতে কর্মরত ১৩৪ জন শ্রমিক ও প্রায় ১০ হাজার স্থানীয় রেশম চাষি বেকার হয়ে পড়েন।  নূরে আলম নামে এক চাষি জানান, অন্য ফসল ফলিয়ে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করতে হয়। কারখানাটি চালু হলে তারা আবারও একটু স্বচ্ছলতার মুখ দেখবেন বলে আশা করেন তিনি। শাহ আলম নামে আরেক চাষি বলেন, কারখানাটি বন্ধ হবার কারনে আমাদের জীবনটি থোমকে গেছে। যানিনা কবে আবারো আগের মতো একটু শান্তিতে জীবনযাপন করবো। চালু হলে আমার মতো অনেক গরীবের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তা ছাড়া এখানকার কাপড় অত্যন্ত মূল্যবান। কাঁচামালের কোনো অভাব হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।  এ ব্যাপরে ঠাকুরগাঁও রেশম বোর্ডের উপ-পরিচালক সুলতান আলী জানান, শ্রমিক ও চাষিদের কথা ভেবে অবিলম্বে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি পুনরায় চালু করা হলে ভালো হয়। কারখানাটি চালু হলে রেশম চাষের সাথে যুক্ত  হাজার রেশম চাষী পুনরায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। কারখানাটি বন্ধ হওয়ার পরেও অনেক চাষি গুটি উৎপাদন করছেন। কাজেই কারখানাটি পুনরায় চালু করা উচিৎ। অপরদিকে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে কারখানাটি চালু করার ব্যাপারে সকলে মতামত দিয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে আগামী ২ তারিখে রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান ঠাকুরগাঁওয়ে এসে একটি ফাইনাল সিদ্ধান্ত দিবেন। আশা করি এবারে রেশম কারখানাটি চালু হবে।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 84388082362313417

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item