কুড়িগ্রামে আইন প্রয়োগ করেও প্রতিরোধ হচ্ছে না বাল্য বিয়ে
https://www.obolokon24.com/2017/09/kurigram_14.html
হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে গোটা বিয়ে রেজিট্রারের ভূয়া সনদ ও জন্ম নিবন্ধনে বয়স বেশি দেখিয়ে অবাধে চলছে বাল্য বিয়ে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার সব উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের ভূয়া সনদ পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে ৫ শতাধিক বাল্য বিয়ে হয়েছে। তনন্মধ্যে ফুলবাড়ী ও উলিপুরে এ ধরনের বিয়ের প্রবনতা সব থেকে বেশি। উপজেলা দু’টির কয়েকটি গ্রামে বাল্যবিয়ের প্রস্ততি চলা কালে খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষনিক ঘটনা স্থলে এসে বিয়ে ভেঙ্গে ও জেল জরিমানাও পর্যন্ত করেছেন। এদিকে ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচীর আওতায় পল্লী সমাজসহ বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ মুলক প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সমুহের কঠোর প্রতিরোধের মধ্যদিয়েও নির্বিঘ্নে চালিয়ে আসা হচ্ছে বাল্য বিয়ে। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে এর প্রবনতা সবথেকে বেশি। আইন প্রনয়নে সরকারি ও বে-সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পরেও কুড়িগ্রামে বন্ধ হচ্ছেনা বাল্য বিয়ে। গত ৬ মাসে ৫শতাধীক বাল্য বিয়ে সংঘঠিত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ইউনিয়নে চলছে এরকম বিয়ের আয়োজন। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের কিশোরীরাই এর শিকার হচ্ছে বেশি। ফলে মাতৃ মৃত্যুর পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়সে মাতৃত্ব জনিত রোগ বালাইয়ের শিকার হচ্ছে তারা। সমাজে বৃদ্ধি পেয়েছে নারী নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্রবনতাসহ নানান সামাজিক অস্থিরতা। গত বছরের এপ্রিলে এক জরিপের তথ্যানুসারে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৮৮ টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৯৪টি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ঝরে পরার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, ঝরে পরা মেয়েদের শতকরা ৮০ ভাগই বাল্য বিয়ের শিকার। জেলা ও উপজেলার কয়েক জন বিবাহ রেজিষ্ট্রার ও হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক বলেন, অনেক সময় বর-কনের বয়স কম হলেও নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা প্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে থাকেন। অপর দিকে নিকটস্থ রেজিস্ট্রারেরা বিয়ে না পড়ালে পাত্র-পাত্রী আদালতে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে কয়েক জন আইন জীবির সাথে কথা হলে তারা বলেন, এফিডেভিট দেয়া একটি ঘোষনা মাত্র। নিজস্ব ঘোষনায় মেজিস্ট্রেটরা স্বাক্ষর করেন। তার পরও এফিডেভিটের ক্ষেত্রে মেজিস্ট্রেটদের বাল্য বিয়ের বিষয়টি অবশ্যই যথাযথ ভাবে বিচার করতে হবে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মো. ফেরদৌস খান বলেন, এলাকার কাজীদের বলা আছে বাল্য বিয়ের কাবীন না করতে। পুলিশকে বলা আছে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে পদক্ষেপ গ্রহন করতে।