করতোয়া নদীর গর্ভে একটি গ্রাম,ভাঙ্গনের মুখে ৬ গ্রাম!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল   

পীরগঞ্জে বন্যার পানি কমার সাথে সাথে করতোয়া নদীর ভাঙ্গন বাড়ছে। ইতিমধ্যেই বিছনা, সুজারকুঠি, দুর্গামতি গ্রামের সিংহভাগ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে অর্ধ শতাধিক পরিবার আশ্রয়হীন হয়েছে। নদীটি গতিপথ পরিবর্তন করে পীরগঞ্জ সীমানার ভিতরে  প্রায় ১ কি.মি সরে আসায় কয়েকটি গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। যে ভাবে নদী ভাঙ্গছে, তাতে ৪/৫ দিনের মধ্যেই উপজেলার টুকুরিয়া ইউনিয়নের ৬ গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মাত্র ১ কি. মি এলাকা খনন করে নদীটি আগের পথে ফেরানো হলে গ্রামগুলো রক্ষা পাবে বলে জানা গেছে।
আতংকিত এলাকাবাসী ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রংপুর ও দিনাজপুর সীমানায় বয়ে যাওয়া করতোয়া নদী এবারের বন্যায় নদীটির বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় উপজেলার চৈত্রকোল, টুকুরিয়া, বড়আলমপুর, চতরা ও কাবিলপুর ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দী হয় এবং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পানি কমার সাথে সাথে নদীটির পাড় ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মহারাজপুর থেকে গতিপথ পরিবর্তন করে ১ কি. মি উত্তরে সরে এসে পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের বিছনা ও দুর্গামতি গ্রামে চলে আসে। ভাঙ্গনে নদীটির তলদেশে বিছনা গ্রামের একটি পাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের বসতভিটে বিলীন হওয়ায় পরিবারগুলো আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। আশ্রয়হীন মান্নান, রশিদা, সিদ্দিক, শাহজাহান, জালাল, জহুরুল জানায়, বাপ-দাদার বাড়ীঘর নদীভাঙ্গনে নদীর তলদেশে পড়ে গেছে। আবাদী জমি, ফসলও শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা মোনাইল মোড়ে রাস্তার পাশে বসবাস করছি। বিছনা গ্রামের আতংতিক রমিছা, শ্রী নিরব, মানিক, বকুল, রেজ্জাক জানায়, সারাজীবন খেটে ইটের বাড়ী করেছি। নদীটি আর ৫০ গজ ভাঙ্গলেই আমাদের বাড়ীগুলো এবং পাকা রাস্তা পুরোটাই বিলীন হয়ে যাবে। আগে নদীগর্ভে জমিজমাও গেছে। সুজারকুঠি গ্রামের প্রভাষক একরামুল হক, গন্ধ্রর্বপুরের সাদেকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে সুজারকুঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুজারকুঠি উচ্চ বিদ্যালয়সহ পুরো গ্রাম এবং দুধিয়াবড়ী, পারবোয়ালমারী গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই সুজারকুঠির রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। টুকুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যারম্যান আতাউর রহমান মন্ডল বলেন, এবারের বন্যায় করতোয়া নদীটি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মহারাজপুর থেকে ভেঙ্গে উত্তরে ১ কি. মি সরে এসে আমার ইউনিয়নের বিছনা ও দুর্গামতি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। এখনো নদী ভাঙ্গছে। এই ভাঙ্গন ঠেকাতে না পারলে ৪/৫ দিনের মধ্যেই বিছনা, দুর্গামতি, পারবোয়ালমারী, দুধিয়াবাড়ী, জয়ন্তীপুর ও সুজারকুঠি গ্রামের অসংখ্য বাড়ীঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমি সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। নদীটি মাত্র ১ কি.মি খনন করে আগের পথে নিলে গ্রামগুলো রক্ষা পাবে। এতে নতুন করে কোন ক্ষতি হবে না। কয়েকটি সুত্র জানিয়েছে, উলে¬খিত গ্রামগুলো ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ডিও লেটার দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি উর্ধ্বতন সুত্র নাম না প্রকাশের শর্তে জানায়, আমরা নদীটি পরিদর্শন করেছি। তবে এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 2281697474681568047

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item