নীলফামারীতে মায়ের পা ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনায় তিন ছেলে ও দুই পুত্রবধুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়/শামীম হোসেন বাবু নীলফামারী ১৩ সেপ্টেম্বর॥ টাকার জন্য তিন ছেলে ও দুই পুত্রবধুর কর্তৃক বিধবা বৃদ্ধা মা হাছনা বেগম (৫৮) এর পা ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনায় অবশেষে আজ বুধবার সকালে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ প্রোটাল অবলোকনে “ নীলফামারীতে লোহার রড দিয়ে মাকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছে তিন ছেলে ও পুত্রবধুরা” শিরোনামে ১২ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত খবর প্রকাশের পর সেদিনই সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও একটি মানবাধিকার সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
তারা ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয়টি কিশোরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসানকে অবগত করে। পরে নির্যাতনের শিকার ওই মা-এর লিখিত অভিযোগটি কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশীদ বুধবার রেকর্ড করে (মামলা নম্বর ৭)। মামলায় তিন ছেলে হাসানুর রহমান, শাহিন আলম, নাজমুল হোসেন, পুত্রবধু পাখি বেগম ও মৌসুমি বেগম সহ ৫ জনকে আসামী করা হয়।
মামলার পর পরেরই একদল পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের দক্ষিন বড়ভিটা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে ব্যাপক অভিযান চালায়। কিন্তু আসামীরা পলাতক থাকায় বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কাউকেই ধরতে পারেনি বলে কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশীদ নিশ্চিত করেন।
এদিকে নির্যাতনের শিকার ওই বৃদ্ধা এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেটিকস বিভাগের ৩২ নম্বর ওয়াডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার ভেঙ্গে যাওয়া বাম পা-এ প্লাস্টার করা হয়েছে বলে জানায় ওই বৃদ্ধার ছোট ছেলে বদিউজ্জামান।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোছাঃ মমিমুন আক্তার বলেন, ঘটনাটি পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়।
তিনি এলাকাবাসীর অভিযোগের বরাদ দিয়ে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ঘটনাটি সমাধানের নামে নির্যাতিত মা-এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং মামলা নথিভুক্ত করতে বাধা সৃস্টি করে। তদন্তে ঘটনার সত্যতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে নির্যাতনের শিকার ওই মায়ের লিখিত অভিযোগটি বুধবার থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে।
কিশোরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মেহেদী হাসান বলেন ঘটনাটি বড়ই মর্মান্তিক। আমরা ওই বৃদ্ধা মা-এর খোঁজ খবর রাখছি। তাকে তার মামলায় সহায়তায় প্রদান করা হবে।
উল্লেখ যে, গত রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে দেড় লাখ টাকার কারনে ওই বৃদ্ধা বিধবা মা-কে মারধর ও পা ভেঙ্গে দেয় তিন ছেলে। বৃদ্ধাকে প্রথমে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি ও পরে তার আশংকাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ওই বৃদ্ধার স্বামী স্বামী জহির উদ্দিন  কিশোরীগঞ্জ  পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে পিয়ন পদে সরকারী চাকুরী করতেন। চাকুরী করা অবস্থায় ২০১৬ সালের পহেলা জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার পর সরকারী চাকুরীর এককালিন তার স্ত্রী ১৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে। সেই টাকা এই মা ৪ ছেলের মধ্যে দুই লাখ ৫০ হাজার করে মোট ১০ লাখ টাকা ভাগ করে দেন। বাকী ৬ লাখ টাকার মধ্যে ৪ লাখ টাকা তার একমাত্র মেয়ে শারমিনের বিয়ের জন্য খরচ করেন।  বাকী দুই লাখ টাকা এই মা তার নিজের নামে ব্যাংকে রেখে দেন। তিন ছেলে সু-কৌশলে ওই টাকার মধ্যে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনজন ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। যার প্রতিবাদ করতে গেলে তারা বৃদ্ধা মাকে পিটিয়ে বাম-পা ভেঙ্গে দেয়।
অবলোকনে প্রকাশিত সংবাদের লিঙ্কটি নিচে দেয়া হলো। কিশোরগঞ্জে লোহার রড দিয়ে মাকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছে পাষন্ড ছেলেরা

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 1867919559554730712

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item