ডিমলায় সেই শেফালীর নির্যাতনের মামলার প্রধান আসামী র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ২১ আগস্ট॥
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর কোলনঝাড় গ্রামে গরু চুরির মিথ্যা অভিযোগে গাছে বেঁধে নির্যাতনের শিকার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ শেফালী বেগমকে গাছের সঙ্গে নির্যাতনের ঘটনার মামলার হুকুমদাতা প্রধান আসামী নুর আলম শাহ (৫৮) গ্রেফতার হয়েছে। আজ সোমবার বিকালে সিপিসি-২, নীলফামারী, র‌্যাব ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে নীলফামারী রেলষ্টেশন এলাকা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত নুর আলম নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

সুত্র মতে ঘটনা ও মামলার পর উক্ত আসামী পলাতক ছিল। গোপন সংবাদে সিপিসি-২ নীলফামারী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী অধিনায়ক এএসপি মোঃ শাহীনুর কবির এর নেতৃত্বে উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায় গত শুক্রবার (৪ আগষ্ট) নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর কোলন ঝাড় গ্রামে লালন মিয়ার স্ত্রী শেফালী বেগম (৩২) নামের ওই গৃহবধুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শারিরিক নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রভাবশালী নেতারা দিনদুপুরে শেফালী বেগম গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মর্মে গরুসহ গাছে বেধে পুলিশকে সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে গরু চুরি ঘটনা মিথ্যে বুঝতে পেরে শেফালীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা প্রহনের পরামর্শ দেয়। কিন্তু নির্যাতনকারীরা শেফালীকে হুমকী দেয়ায় শেফালী ডিমলা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয়ে শনিবার (৫ আগষ্ট/২০১৭) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সময়ের আগে ৯০০ গ্রাম ওজন নিয়ে শেফালী নবজাতক কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। কিন্তু নবজাতক শিশুটির অবস্থা ছিল শংকটাপন্ন। নবজাতক কন্যাটিকে নিবিড় পরিচর্চ্চা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। এরপর ৯ আগষ্ট  সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবজাতকটিকে মারা যায়। কিন্তু এর আগে শেফালীর মামা  ভটভটি চালক সহিদুল ইসলাম ৬ আগষ্ট রাতে ডিমলা থানায় ১৯জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে(নম্বর ৬  ধারা-১৪৩/১৪১/৩৪২/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৫৪/৫০০/১১৪/৩৪ দঃ বিঃ)। ওই মামলায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরন করে। ওই মামলাটি নির্যাতনের শিকার শেফালীর সঙ্গে কথা না বলেই দায়ের করা হয়েছিল। রংপুর মেডিকেল হতে ফিরে শেফালী নিজে মোট ৩১ জন আসামী করে পূর্বের মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে ডিমলা থানায় আবেদন করে। সেটি আদালতে প্রেরন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করে। ওই মামলায় শেফালীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের হুকুমদাতা হিসাবে প্রধান আসামী করা হয় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার নুর আলম শাহ (৫৮)। এই মামলায় খালিশা চাঁপানী চাপানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তামজিদার রহমান, ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক শিমুল ইসলাম সংযুক্ত হয়েছে।  শেফালী জানায় তাকে নির্যাতনকারী সহ আরো অনেকে জমিজমা সংক্রান্ত এক বিবাদে তার বাবা মবিয়ার রহমানকে ২০১২ সালের ২৯ জুলাই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছিল। মামলায় এলাকার ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ চার্জশীট প্রদান করেন। মামলাটি বর্তমানে নীলফামারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। প্রভাবশালীরা ওই মামলা মিমাংসার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। তারা পিতার হত্যা মামলা আপোষ না করায় প্রতিপক্ষরা সম্প্রতি ডিমলা থানায় শেফালীর ভাই রমজানকে একটি মিথ্যা মামলায় জরিয়ে দিয়ে এলাকাছাড়া করে। ফলে শেফালীর একমাত্র ভাই রমজান পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছে। এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলেই শেফালী ও তার ভাইয়ের উপর নির্যাতনে খড়ক নেমে আসে।
শেফালীর ওই ঘটনা নিয়ে অবলোকন২৪ডটকম এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিঙ্কগুলো নি¤েœ উল্লেখ করা হলো। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4324316299651294046

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item