কিশোরগঞ্জে টাকা দিতে না পারায় দুস্থদের সুবিধা পাচ্ছেন স্বচ্ছলরা

মোঃ শামীম হোসেন (বাবু)কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ অফিতোন বেওয়া (৪৫) স্বামী দিনমজুর , অন্যের জমিতে ছাপরাঘরে মাঁথা গুজে দিন কাঁটান , দিনমজুরী করে চলে তাঁদের সংসার , স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে দুই মাস ধরনা দিয়েও চেয়ারম্যানের দাবিকৃত দুই হাজার টাকা দিতে না পারায় ভাগ্যে জোটেনি ভিজিডি কার্ড, এমনকি পাননি সরকারের বয়স্কভাতা,রেশনিং কার্ডসহ অন্যান্য কোন সুযোগ সুবিধা।
এদিকে রোকসানা আক্তার (৩০) তিনি পাকা বাড়ির মালিক ও চাঁদখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমানের ভাগনি। অথচ তিনি নিয়মিতই ভিজিডি কার্ডের চাল তুলছেন। ঘটনাটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের শাহপাড়া গ্রামের ।

গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদখানা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ছপিদ মামুদ (৬০)  ও তার স্ত্রী অফিতোন বেওয়া (৫৫) একটি ছাপড়া ঘরে শুয়ে আছে। এসময় তাদের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন , বাবা আমাদের এক ছেলে এক মেয়ে । কয়েক বছর আগে এলাকাবাসীর কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে  মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি । বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি । এই বুড়ো বয়সে মানুষের জমিতে কাজ করতে পারিনা। তাই স্থানীয় চেয়ারম্যান হাফিজার রহমানের কাছে  গিয়েছিলাম আমার স্ত্রী অফিতোনের নামে একটি ভিজিডি কার্ড কিংবা আমার নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য। কিন্তু চেয়ারম্যান হাজিজার রহমান আমাদের কাছে দুই হাজার করে টাকা চেয়েছে। চেয়ারম্যানের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় সরকারের কোন তালিকায় আমাদের নাম উঠেনি। তাছাড়া গেল কয়েকদিনের টানা বর্ষনে বৃষ্টির মধ্যে ঘরের ভিতর দাড়িয়ে দাড়িয়ে রাত কাঁটিয়েছি।
অপরদিকে দুস্থ নারীদের জন্য সরকারের দেওয়া ভিজিডি কার্ড (নম্বর-২৮৪) পেয়েছেন একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্বচ্ছল নারী পাকা বাড়ির মালিক ও একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমানের ভাগনি। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোকসানা ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের মেয়ে।  শুধু ভিজিডির কার্ড নয় চেয়ারম্যান তার বোন ছালেহা বেগমের নামে বিধবা ভাতা ও তার ভাগিনার নামে রেশনিং কার্ড সহ তার বোনের পরিবারের কমপক্ষে ১০ জনের নামে ভিজিডি কার্ডসহ সরকারী বিভিন্ন সযোগ সুবিধা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রোকসানার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার মামা চেয়ারম্যান আমরা সরকারী সুযোগ সুবিধা নেবনা তো কে নেবে।
নীতিমালা অনুযায়ী , দুস্থ , অসহায় ,অতিদরিদ্র, এবং ২৪ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বয়সের নারীদের ভিজিডি কার্ড পাওয়ার কথা । এ ছাড়া যেসব দুস্থ নারী সরকারের অন্য কোন সুবিধা পাননা , তারা ভিজিডি কার্ড পাবেন। এই কার্ডধারী প্রত্যোক সুবিধা ভোগী ব্যাক্তি মাসে ৩০ কেজি করে ২৪ মাস চাল পাবেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁদখানা ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডের সুবিধাভোগী ৩৫৪ জন অতিদরিদ্র নারীর তালিকায় অফিতোন বেওয়াসহ অনেক দরিদ্র নারীর নাম নেই। তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন রোকসানার মত শতাধীক স্বচ্ছল নারী। কার্ডপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা এসব কার্ড পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চাঁদখানা দুই নম্বর ওয়ার্ডের ভিজিডি কার্ড প্রাপ্ত কদবানু বেগম (কার্ড নম্বর ৮৮) নার্গিস বেগম (কার্ড নম্বর ৮৩) নুরী বেগম (কার্ড নম্বর ৮২) । তারা আরো জানান, কার্ড ইস্যু হওয়ার পর আগে টাকা বুঝে নিয়েছেন তার পর বই হাতে দিয়েছেন। এছাড়াও চাল বিতরনের সময় প্রতি বস্তা বাবদ ২৫ টাকা করে নিয়ে থাকেন চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান হাফিজার রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন , আমি বর্তমানে নীলফামারী কোর্টে অবস্থান করছি পরে কথা বলেন বলে তিনি লাইন কেঁটে দেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাঃ সাবিকুন্নাহারের সাথে কথা বলার জন্য তার অফিসে গেলে তিনি ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4069091811786870645

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item