ফলোআপ-ডিমলায় অন্তঃসত্বা গৃহবধুকে গাছে বেধে নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৩
https://www.obolokon24.com/2017/08/dimla_6.html
বিশেষ প্রতিনিধি ৬ আগষ্ট॥
নীলফামারীর ডিমলায় অন্তঃসত্বা গৃহবধুকে গাছে বেধে নির্যাতন এর খবর প্রকাশিত হলে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর অভিযুক্ত প্রভাবশালী মহলটি গা ঢাকা দিয়েছে। আজ রবিবার সকাল থেকে বাইশপুকুর গ্রামে পুলিশ ঘটনাটি দফায় দফায় তদন্ত করেন। এ সময় জিজ্ঞাববাদের জন্য ৩জনকে আটক করা হয়েছে।
আটককুতরা হলেন- দেবারু মামুদের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫) তার মাতা অপেয়া বেগম (৫২) ও গ্রাম্য পুলিশ সদার রশিদুল ইসলাম। আজ রবিবার সকাল হতে বিকাল পর্যন্ত নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার সার্কেল) জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত করেন।
নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, প্রকাশিত সংবাদে ৭মাসের অন্তঃসত্ব গৃহবধুকে নির্যাতনের ঘটনা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তিনি বলেন, নির্যাতিতা শেফালীর বিরুদ্ধে গরু চুরির ঘটনাটি সাজানো মনে হচ্ছে। তিনি জানান নির্যাতনের শিকার শেফালী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার খোঁজ খবর প্রতিনিয়ত রাখা হচ্ছে।
এদিকে ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনা নিয়ে সাফাই গেয়েছেন। তিনি সাংবাকিদের বলেন ঘটনাটি যা সাংবাদিকরা লেখেছে তা সত্য নয় একটি পারিবারিক ঘটনা। গরু চুরিকে কেন্দ্র করে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটতে পারে।
গত শুক্রবার (৪ আগষ্ট) নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর কোলন ঝাড় গ্রামে। শেফালী বেগম (৩২) নামের এক গৃহবধুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শারিরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রভাবশালী নেতারা দিনদুপুরে শেফালী বেগম গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মর্মে গরুসহ গাছে বেধে পুলিশকে সংবাদ দেয়। নির্যাতনকারীদের হুমকীর কারনে ওই গৃহবধু ডিমলা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয়ে গতকাল শনিবার (৫ আগষ্ট) সকালে নীলফামারী জেলার বাহিরের এক হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু শেফালী বেগম (৩২) উক্ত গ্রামের লালন মিয়ার স্ত্রী ও একই গ্রামের মৃত. মবিয়ার রহমানের মেয়ে।
জমিজমা সংক্রান্ত এক বিবাদে শেফালীর বাবা মবিয়ার রহমানকে ২০১২ সালের ২৯ জুলাই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রতিপক্ষরা হত্যা করেছিল। মামলায় এলাকার ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ চার্জশীট প্রদান করেন। মামলাটি বর্তমানে নীলফামারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ২২ আগষ্ট হত্যার মামলা সাক্ষ্য রয়েছে। প্রভাবশালীরা ওই মামলা মিমাংসার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। তারা পিতার হত্যা মামলা আপোষ না করায় সম্প্রতি আরেকটি মিথ্যা মামলা করেছে প্রতিপক্ষরা। ফলে শেফালীর একমাত্র ভাই রমজান পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলেই শেফালী ও তার ভাইয়ের উপর নির্যাতনে খড়ক নেমে আসে।