ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকের সঙ্গে চারা রোপণে ব্যস্ত জেলা প্রশাসক
https://www.obolokon24.com/2017/08/dc-thakurgaon.html
আব্দুল আওয়াল ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি।। ঠাকুরগাঁওয়ে
বন্যায় অনেক ফসলি জমি প্লাবিত হয়। পানির নিচে ডুবে থাকে কয়েক হাজার ধানের
চারা। সেসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ফসলি জমি পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক
আব্দুল আওয়াল।
বুধবার
দুপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে সরকার রয়েছে বলে তাদের অনুপ্রাণিত
করতে নিজেই কাঁদামাখা ক্ষেতে ধানের চারা রোপণ করেছেন।
কৃষকের
সঙ্গে কাঁদামাটিতে জেলা প্রশাসক ধানের চারা রোপণ করায় এলাকার সাধারণ কৃষক
অবাক হয়েছেন। ডিসি সাহেব নিজে ধান লাগাচ্ছেন শুনে তাকে দেখার জন্য আশেপাশের
কয়েকটি গ্রামের মানুষ ছুটে আসেন।
কৃষকের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের ধানের চারা লাগানোর সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়ার পরেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
কৃষকের
সঙ্গে কাঁদামাটিতে চারা রোপণ করার ইচ্ছে কেন হলো? এমন প্রশ্ন করলে জেলা
প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, হঠাৎ বন্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার অনেক কৃষকের
রোপণকৃত জমি পানিতে প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারের নির্দেশনা এসেছে
কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ও অন্যান্য কৃষকদের অনুপ্রাণিত
করতে তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধানের চারা রোপণ করতে মাঠে নেমেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের
চাবি বা মেরুদণ্ড হচ্ছে- এদেশের কৃষক সমাজ। আদি মানুষের পেশা ছিল কৃষি।
আমাদের অধিকাংশ মানুষের বাপ-দাদার পেশাও কৃষি। কৃষির ওপরই আমাদের নির্ভরতা।
কৃষকের উন্নতি মানে দেশের উন্নতি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি। কৃষকের ক্ষতি মানে
দেশের ক্ষতি। শিল্পোন্নত দেশ গড়তে হলে কৃষির উপকরণ ছাড়া শিল্পকারখানা অচল।
কিন্তু যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে কৃষকের
সোনার ফসল ও সহায় সম্বল হারিয়ে কৃষক নির্বাক, নিঃস্ব হয়ে পড়েন, তখন হৃদয়বান
মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, কৃষক-কৃষাণীর বেদনার সুর মানব অনুভূতিকে
দুমড়ে-মুচড়ে দেয়। মানুষ একে নিয়তির তকদিরের লিখন বলে মানতে বাধ্য হয়। তাই
তাদের সামান্য অনুপ্রাণিত করতেই মনের অনুভূতি থেকে মাঠে নেমেছিলাম।
জেলা
প্রশাসক বলেন, মা, মাটি, দেশ মিলেই আমাদের এই সমাজব্যবস্থা। একজন কৃষক কত
কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করেন বর্তমানে সেটি আমরা অনুভব করি না। কেমন জানি আমরা
যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
এ
সময় ক্ষেতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কে
এম মাউদুদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বন্যার পানিতে নতুন করে রোপা আমনসহ ৩৭
হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে
প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
পরে
জেলা প্রশাসক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সরকার
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছে বলেও আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।