ওষুধ সংকটে ঠাকুরগাঁওয়ের ১৪৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক
https://www.obolokon24.com/2017/07/thakurgaon_40.html
আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ওষুধ ভাণ্ডারে ওষুধ নেই ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামীণ জনপদে স্থাপিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে।
বিপি মেশিন-থার্মোমিটারও নষ্ট। শিশুদের ওজন মাপার মেশিনও বিকল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না নানা রোগে আক্রান্ত গ্রামীণ মানুষ। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গ্রামীণ মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে।
১৫টি রোগের চিকিৎসা দিতে এসব ক্লিনিকে কমপক্ষে ২৭ প্রকার ওষুধ থাকার কথা। তবে এ জেলার এক হাজার ১৬টি গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে পেটের ব্যথার ও আয়রন বড়ি ছাড়া আর কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার থুকরাবাড়ি গ্রামের জগেশ চন্দ্র সিংহের স্ত্রী খিলশ্বরী রানী (৫৫) জ্বর-সর্দি রোগে ভুগছেন। শনিবার ওই বৃদ্ধা হেঁটে রত্নাই কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা ও ওষুধ নিতে যান।
কিন্তু ওই ক্লিনিকের হেলথকেয়ার প্রোভাইটর তাকে বলেন, ভিটামিন ও পেটব্যথার ওষুধ ছাড়া কোনো সরবরাহ নেই। অবশেষে খিলশ্বরী খালি হাতে ফেরেন।
পাশের গ্রামের বাবুল অভিযোগ করে বলেন, ওষুধ তো দূরের কথা রত্নাই ক্লিনিকে বিপি মেশিন, থার্মোমিটার ও শিশুদের ওজন মাপার মেশিন নষ্ট।
একই অভিযোগ তারাঞ্জুবাড়ি গ্রামের ভুপেন্দ্র নাথ সিংহের। আমজানখোর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকালু এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওকে এ সমস্যা জানিয়েছেন।
ইউএনও আবদুল মান্নান বলেন, এ বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। তারাঞ্জুবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইটর হাফিজউদ্দিন জানান, রোগীদের ভয়ে তারা লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন।
একই সমস্যার কথা বলেন রত্নাই ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইটর আবদুস সালাম। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মিটিংয়ে তাদের বলা হয় স্থানীয়ভাবে ওষুধ ম্যানেজ করতে, তবে তাদের কথা কেউ শোনে না।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নাজিরুল আজিজ বলেন, জানুয়ারির পর ওষুধ সরবরাহ পাওয়া যায়নি। ফলে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিপি মেশিন পুরান হওয়ায় তা কার্যকারিতা হায়িছে।
সূত্র জানায়, জেলার ১৪৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে দু’এক ধরনের ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ নেই। এসব সমস্যা ছাড়া অধিকাংশ ক্লিনিকের ছাদ চুয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় গবাদি পশুর চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে ক্লিনিকগুলো। নৈশপ্রহরীও নেই। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আবু মো. খয়রুল কবির বলেন, প্রজেক্ট থেকে ওষুধ সরবরাহ হয়। তবে অচিরে চলে আসবে। বিপি মেশিন একটি এনজিও আগস্টের প্রথমে সরবরাহ দেবে বলে জানান তিনি।