পীরগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিস গুরুত্বপূর্ন ফাইল সরিয়ে ফেলা হয়েছে!

এক সাথে ৫২ শিক্ষক বদলী ও ৫২ বিদ্যালয় জাতীয়করনের কোন উপজেলা অফিসে তথ্য নেই


মামুনুররশিদ মেরাজুল পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ

পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম গুরুত্বপূর্ন ফাইল সরিয়ে ফেলে বদলী নিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চলে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বদলীর আগে তিনি ৫২ জন শিক্ষককে সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে বদলী, ৫২টি রেজিষ্ট্রার্ড বিদ্যালয়কে ৩য় পর্যায়ে জাতীয়করনে অন্তর্ভুক্ত করার তথ্যাদি উপজেলা অফিসে রেখে যাননি।
সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭ বছর ধরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম। পীরগঞ্জে তার শ্বশুরবাড়ী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায়নি বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে। কোন শিক্ষা কর্মকর্তা পীরগঞ্জে বদলী হয়ে এলেও রেজাউল করিম লবিং করে ওই বদলী ঠেকিয়ে রাখতেন। পাশাপাশি তার নিজের বদলীও তিনি আটকে দিয়ে পীরগঞ্জে প্রায় ৭ বছর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই কর্মকর্তা অফিসের ৩ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, অফিসের কম্পিউটার অপারেটর,কে নিয়ে সিন্ডিকেট করেন। কোন শিক্ষক-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হলেই ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা সমস্যা সমাধানে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় বলে একাধিক ভুক্তভোগীর সুত্রে জানা গেছে। এ ছাড়াও ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বদলী ও ডেপুটেশন (ডিপিইডি- ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারী এডুকেশন) বাণিজ্য, যত্রতত্র গড়ে উঠা রেজিষ্ট্রার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে উৎকোচ নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষকদেরকে বঞ্চিত করেও কনিষ্ঠ শিক্ষককে বদলীর সুপারিশ করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা মোনতাহিনা বেগমের পরিবর্তে ওই বিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষিকা উম্মে হাওয়া বেগমকে পীরগঞ্জ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম সুপারিশ করেন। পরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তা অনুমোদন করলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সিনিয়র শিক্ষিকা মোনতাহিনা মৌখিকভাবে অভিযোগ করলে কনিষ্ঠ শিক্ষিকা উম্মে হাওয়াকে পরে সদরের প্রজাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। তার ওই সব কর্মকান্ডের নিরব স্বাক্ষী ছিলেন কম্পিউটার অপারেটর সুলতানুল আলম। সুলতানুল আলম বলেন, তিনি (রেজাউল) তো আমার অফিসের স্যার ছিলেন। স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী আমি কাজ করতাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক নেতা বলেন, রেজাউল স্যার পীরগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বনাশ করে গেছেন। এ জন্য আমাদেরকে বহুদিন গ্লানি টানতে হবে।
সুত্র জানায়, শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বদলীর আগে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ৫২ জন শিক্ষককে শিক্ষকদের সুবিধাজনক স্থানে বদলী করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর কোন তথ্যও তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসে রেখে যাননি। সেইসাথে উপজেলায়  যত্রতত্র গড়ে উঠা ৫২ টি রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য তথ্যাদি রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরন করলেও তারও কোন তথ্য-প্রমান রেখে যাননি। উপজেলা শিক্ষা কমিটিকে ম্যানেজ করেই ওইসব কর্মকান্ড করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। উপজেলার ৯টি ক্লাষ্টারের দায়িত্বে থাকা ৭ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে ৩ জন ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর। এদের মধ্যে পীরগঞ্জ ও চতরা ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, কুমেদপুর ও খালাশপীর ক্লাষ্টারের এটিইও শাহীনুর আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখিত অভিযোগের ব্যাপারে সদ্য বদলী হয়ে যাওয়া শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোন বদলী করা হয়নি। আর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫২টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করনের জন্য জেলা অফিসে তথ্য প্রেরন করা হয়েছে। তথ্যও আছে। পীরগঞ্জের জন্য অনেক কিছু করেও কারো মন পাইনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, স্যার কি করেছে, না করেছে, তা ফিরেও দেখিনি। কারণ তার মর্জি মতো তিনি অফিস চালিয়েছেন। ২/৩ জন ছাড়া তিনি কারো কথাও শুনতেন না। সম্প্রতি পীরগঞ্জে বদলী হয়ে আসা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা রওশন জাহান বলেন, আমি ৫২ শিক্ষকের বদলী এবং জাতীয়করণের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরিত ৫২ বিদ্যালয়ের কোন তথ্য বা ফাইলপত্র পাচ্ছি না।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 1702468211328272003

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item