পীরগঞ্জে ঈদপুর্ব ভিজিএফ নিয়ে ইউএনও’র লুকোচুরি!

৪০৯ বস্তা গম জব্দ, ৫ দিনেও মামলা হয়নি

মামুনুর রশীদ মেরাজুল.পীরগঞ্জঃ

রংপুরের পীরগঞ্জে ঈদপূর্ব ভিজিএফ নিয়ে ইউএনও লুকোচুরি খেলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি এ পর্যন্ত ৪০৯ বস্তা গম উদ্ধার করলেও ৫ দিনেও মামলা করেননি। অপরদিকে চৈত্রকোল ইউপিতে ভিজিএফ’র খাদ্যশষ্য বিতরনের কোন স্লিপ না দিয়ে গম বিতরন দেখানো হয়েছে। ফলে অনেক দরিদ্র পরিবার গম পায়নি বলে বঞ্চিতরা অভিযোগ করেছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে ঈদপূর্ব ভিজিএফ এর আওতায় ৬৭ হাজার ৭৫০টি পরিবারের মাঝে চাল বিতরনের নির্দেশ দেয়া হয়। প্রতি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট ৬৯২ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হলে খাদ্য বিভাগ চালের পরিবর্তে গম বরাদ্দ দেয়। প্রতিটি ইউনিয়নের পুরোনো তালিকা অনুযায়ী ভিজিএফ বিতরনের কথা থাকলেও অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার উদ্দেশ্যমুলকভাবে নামে-বেনামে তালিকা করে গম বিতরনের স্লিপ ইস্যু করে বিতরনের সময় হরিলুটের ঘটনা ঘটায়। অপরদিকে চৈত্রকোল ইউপিতে তালিকা তৈরী করা হলেও সুবিধাভোগী দরিদ্র পরিবারের মাঝে স্লিপ দেয়া হয়নি। ফলে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগের ২ শতাধিক দরিদ্র পরিবার গম পায়নি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল বলেন, চৈত্রকোল ইউপিতে আমার ভাগে বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফ’র তালিকার গম অনেকেই পায়নি বলে বঞ্চিতরা আমাকে জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঞ্চিতরা বলেন, ঈদের আগের দিন চৈত্রকোলের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সবুজ কিছু লোকের মাঝে গম বিতরন করে। পরে দুপুরের পর চেয়ারম্যান এবং সচিব দু’জনই অফিসে তালা দিয়ে চলে যায়। ফলে আমরা অনেকেই গম পাইনি। অপরদিকে টুকুরিয়া ইউপিতে ভিজিএফ’র বরাদ্দ পাওয়া প্রায় ৪৯ মে. টন গম নিয়ে লুকোচুরি চলছে। ঈদের আগের দিন উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী খাদ্যগুদাম থেকে টুকুরিয়া ইউপি কার্যালয়ে ২৫ মে. টন গম নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি ও অভিযোগ হলে ইউএনও অবশিষ্ট গম টুকুরিয়ায় নিয়ে যেতে বাধ্য করে। তবে অভিযোগ রয়েছে, এখনো প্রায় ১০ মে. টন গম টুকুরিয়া চেয়ারম্যান তার কার্যালয়ে নিয়ে যাননি। টুকুরিয়ার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মন্ডল জানান, বরাদ্দকৃত ৪৮ মে. টন গমই আনা হয়েছে। এখনো তা বিতরন করা হয়নি। গম বিতরনের আগে ও পরে বিভিন্ন ইউনিয়নে হরিলুট শুরু হলে ইউএনও এবং এসিল্যান্ড গম জব্দ অভিযানে নেমে গত মঙ্গলবার রায়পুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের নবাব আলীর বাড়ি থেকে ৫৬ বস্তা, পাচঁগাছি ইউনিয়নের দশমৌজা সাদুল্যাপুর গ্রামের আতাউর রহমান রুমনের গুদাম থেকে ৫৩ বস্তা এবং গত বৃহস্পতিবার কুমেদপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের বাসা, মাহমুদপুর গ্রামের শহিদুল, রসুলপুর গ্রামের লুলু ও মোস্তাফিজার রহমানের কাছ থেকে ৩’শ বস্তাসহ মোট ৪০৯ বস্তা গম জব্দ করেন। এ ব্যাপারে  ইউএনও কমল কুমার ঘোষ বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তির গুদামে থাকা গমগুলো অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে। গমগুলো লুটপাট করা হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীদেরকে জব্দ করা গমের ব্যাপারে মামলার কথা বললেও ৫ দিনেও তা হয়নি। অপরদিকে টুকুরিয়া ইউপি কার্যালয়ে গম কম এবং চৈত্রকোল ইউপিতে স্লিপ না দেয়ায় অনেক দরিদ্র পরিবার গম পায়নি এ অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন সব ঠিক আছে। তিনি আরও বলেন, চৈত্রকোল ইউপির চেয়ারম্যান তালিকার নাম ডেকে ডেকে গম দিয়েছে বলে চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছে। এতে দুর্নীতি হবে না বলে তিনি (চেয়ারম্যান) আমাকে জানান। ভিজিএফ নিয়ে ইউএনও লুকোচুরি করছেন বলে সচেতন মহল মনে করছেন। ওসি (তদন্ত) হারুন অর রশিদ বলেন, গম উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1526742800208740131

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item