নাগেশ্বরীতে মিথ্যা মামলায় নিঃস্ব হচ্ছে লাভলুর পরিবার পরিত্রাণের আশায় ঘুরছে দ্বারে দ্বারে

হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: 

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মিথ্যা মামলার জালে জড়িয়ে নিঃস্ব হয়ে পরিবার নিয়ে দুর্বীসহ জীবন কাটচ্ছে এক যুবক। পরিত্রাণের আশায় ঘুরছে দ্বারে দ্বারে।
উপজেলার সাঞ্জুয়ারভিটা গ্রামের মৃত মহাম্মদ আলীর ছেলে নাগেশ্বরী পুরাতন বাজারের স্টেশনারী ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসার আয়ে চলে তার স্ত্রী ও তিন মেয়াসহ ৫ সদস্যের সংসার চালিয়ে আসছিল। জানা গেছে গত ৩ বছর আগে রাসেল মন্ডল নামের এক ব্যাক্তি তার দোকান থেকে একটি পণ্য কিনে তাকে একটি ৫শ টাকার নোট দেয়। নোটটি দেখে জাল বলে সন্দেহ হলে সে পাশ্ববর্তী লোকজনকে তা দেখায়। এ সুযোগে রাসেল মন্ডল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে। পরে সে ও উপস্থিত লোকজন তাকে মারপিট করে ছেড়ে দেয়। এ সময় রাসেল মন্ডল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে সরে পরে। পরে ওই রাসেল মন্ডল বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া থানার বনতেতুলিয়া গ্রামের মৃত আশরাফ মন্ডলের ছেলে। সে জাল টাকার ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। বিভিন্ন সময় এভাবেই জালটাকাগুলো চালিয়ে আসছিল।
ওই দিনের পর থেকে রাসেল মন্ডল দেশের যেখানে জালটাকাসহ ধরা পড়েছে সেখানেই আক্রোশ মূলকভাবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাথে লাভলুর নাম জড়িয়ে দিত। গত ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট রাসেল মন্ডল বগুড়া দুপচাচিয়া থানায় জালনোটসহ আটক হয়। সেখানেও সে লাভলুকে ফাঁসাতে পুলিশকে তার নাম জানায়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠায়। পরে পুলিশি তদন্তে লাভলু জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় মামলা থেকে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। এভাবে সে গত ২০১৪ সালের ২৫ মে পঞ্চগড় ও গত বছর ৩১ জুলাই জামালপুরে জালটাকাসহ আটক হলে প্রতিবারই তাকে ফাঁসাতে পুলিশকে তার জড়িত থাকার কথা জানায়। একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বন্ধ হতে বসেছে তার জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন স্টেশনারী দোকানটি। ফলে অভাব অনটনে দিন কাটছে ৫ সদস্যের এ পরিবারটি। অর্থাভাবে নাগেশ্বরী ও কুড়িগ্রাম সরকারী মহিলা মহাবিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যায়নরত দুই মেধাবী মেয়ের পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে।
লাভলু মিয়া বলেন ছোট বেলা থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে অতি কষ্টে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছি। এ আয়ে তিন মেয়ের পড়ালেখার খরচ চালাই। উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর ও প্রতিবেশিরা সবাই জানেন আমি কখনোই এ সবের সাথে জড়িত নই। জালটাকাসহ তাকে আটক করে মারপিট করেছি। সেই আক্রোশ থেকে আমাকে ফাঁসাতে বার বার মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।
ওই ওয়ার্ড কমিশনার ও প্রতিবেশি আবু বকর সিদ্দিক জানান আমি তাকে ছোট থেকে দেখে আসছি। সে কখনো এসবের সাথে জড়িত নয়। কষ্ট করে সংসার চালায়। তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
একই কথা বলেন প্রতিবেশি ষাটোর্ধ মনছুর আলী, আমানত আলী, বাবলা মিয়া, নুর আলম ব্যাপারী, হাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকে। তারা বলেন এভাবে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে লাভলুর ব্যবসা আজ বন্ধের উপক্রম। সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি হওয়ায় তার এ অবস্থায় চরম অর্থ সংকটে পড়েছে পরিবারটি।
উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি নুরন নবী দুলাল বলেন আমি লাভলুকে একজন ভালো ব্যবসায়ী হিসেবে জানি। সে তার ছোট ব্যবসা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। আমার ধারনা পুর্ব শত্রুতার জেরে পুলিশকে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে তাকে ফাসানো হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

কুড়িগ্রাম 395054068141562384

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item