কিশোরগঞ্জে ঠেঁকানো যাচ্ছেনা বাল্য বিয়ে, নিরব দর্শকের ভুমিকায় প্রশাসন

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ঠেঁকানো যাচ্ছেনা বাল্য বিয়ে ।প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে ও  নিকাহ রেজিষ্টারদের সহযোগিতায়  একর পর এক বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। ফলে কম বয়সে বিয়ের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়সের নববধুরা। আর এ বাল্য বিয়ের বলি হচ্ছে সমাজের অসহায় গরীব শেনীর অভিভাবকদের সন্তানরা।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের মুশরুত পানিয়াল পুকুর বানিয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর হেলাল মিয়ার কন্যা ও বর্তমানে  মুশরুত পানিয়াল পুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী হেলালী বেগম রোল নম্বর (১১৮)। সে মুশরুত পানিয়াল পুকুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুড়াকুটি কাচারীপাড়া গ্রামের মোকলেছার রহমানের ছেলে দুবাই প্রবাসী রাহিমুল ইসলাম (২৯) এর সাথে। দু পরিবারের মধ্যে কথাবার্তার এক পযার্য়ে চাঁখানা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও  হেলালীর ফুফা ফজলুল হকের বাড়িতে  ৫ লাখ টাকা দেন দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে হয়। কিন্তু অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বর রাহিমুল ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী  চট্রগ্রাম জেলার সদর উপজেলার বাসা/ হোল্ডিং বোরহান জমিদার বাড়ি আশরাফ আলী রোড । আর এ বিয়েটি রেজিষ্টি করেন চাঁদখানা ইউনিয়নের কাজী আব্দুল হামিদ। তবে মেয়ের বাবা জানিয়েছে বিয়ে রেজিষ্টি হলেও কাজী কাবিননামা দিতে চাননি।
একই ইউনিয়নে মেীলভীর হাট ডাঙ্গাপাড়া  গ্রামে গত একমাস আগে বিয়ে হয় কৃষক তাজুল ইসলাম (বাচ্চাবাউ) এর কন্যা তারাজিনা বেগম (১৫) সাথে চাঁদখানা ইউনিয়নের সরঞ্জাপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র আলামিনের (২৫) । নিতাই ইউনিয়নের কাজী জিগার আলী  এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর করে তাদের বিয়ে দেন।
এদিকে  গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম বৈদপাড়া গ্রামের সবুজ আলীর  মেয়ে ও শরীফাবাদ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী বর্ণা আক্তারের বিয়ে হয়  একই ইউনিয়নের পুর্ব দলিরাম চম্পাফুলপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামে ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৫) এর সাথে। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের কোল জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান । কিন্তু সন্তানটি প্রতিবন্ধি হয়।  সন্তান জ¤েœর পর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে  না পেরে  তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের কাজী হাইয়ুল ইসলামের  ভুয়া কাবিননামার কারনে মেয়েটি আইনের আশ্রয় নিতে না পেরে বর্তমানে তার পিতার আশ্রয়ে থেকে আবারো পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ , স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ও পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের ম্যানেজ করে বয়স বাড়িয়ে  জ¤œ সনদ নিয়ে বাল্য বিয়ে দিচ্ছেন । আর কাজীরা বিয়ে নিবন্ধনের নকল বহিতে বিয়ে নিবন্ধন করেন।
এ ব্যাপারে চাঁদখানা ইউনিয়নের কাজী আব্দুল হামিদ, নিতাই ইউনিয়নের কাজী জিগার আলী ও গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের কাজী হাইয়ুল ইসলামের সাথে কথা বললে তারা সকলেই বাল্য বিয়ে নিবন্ধনের কথা অস্বীকার করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেজবাউল হক চেীধুরী জানান, কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কম বয়সে বিয়ে মা ও শিশুর জন্য অত্যান্ত ঝুঁকিপুর্ন। অপাপ্ত বয়সে গর্ভধারন করলে পুষ্টিহীন ও কম ওজনের শিশু জ¤œ হয়। এমনকি গর্ভপাতের সময় মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসান বলেন, ২০১৭ সালের বাল্য বিবাহ আইনে ইউপি সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বাল্য বিবাহ বন্ধের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বাল্য বিয়ের নতুন আইন তফসিলভুক্ত না হওয়ার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে না পারার কারনে বাল্য বিয়ে বৃদ্ধির আশংক্ষা করা হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 3003716604830434877

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item