ফুলবাড়ীতে বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির মাছ


মেহেদী হাছান উজ্জ্বল ফুলবাড়ী(দিনাজপুর)প্রতিনিধি

‘‘বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ’’ এ কথাটি যেমন সত্যি,তেমনি সত্যি হচ্ছে‘‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি’’। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে কথাটি। ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন প্রকার মাছ। 
দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ান,মোট সরকারী পুকুর সংখ্যা ৮৭টি, বেসরকারী পুকুর সংখ্যা ১৭শত ৩৬টি,বিলে সংখ্যা ২টি,নদীর সংখ্যা ১টি থাকায় প্রায় সারাটা বছরজুড়ে দেশি মাছ ভর্তি ছিল প্রায় উপজেলার সব নদ,নদী ও খাল-বিলে।  বর্তমানে আবহাওয়া পরির্বতন ও জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি পুকুর,নালা,খাল-বিল,ডোবা ও বড় বড় পুকুর ভরাট করে বসত বাড়ী নির্মান করায় বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ। 
এই এলাকায় এক দশকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। এতে করে দেশের অর্থনীতিতে মাছের অবদান যেমন কমছে, তেমনি ব্যাপকভাবে সংকুচিত হয়ে গেছে জেলেদের আয়-রোজগার।  এক সময়ের পুটি,টেংরা,ময়া,ইছলা,সাটি,কই,মাগুর,ভুরাই,চেং ,বোয়াল এধরনের দেশিও মাছের এখন আর দেখা যায়না ছোট বড় হাট বাজার গুলোতে। দেশি মাছের জায়গায় এখন বিদেশী সিলভারকার্প,মিনারকার্প,গ্রাসকার্প,তেলাপিয়া,বিদেশী মাগুর,থাই কৈ,বাটা,সরপুটি সব্বত্র কেনা-বেচা হচ্ছে। অধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে রুই,কাতলা,মৃগেল,পাংগাস,টেংরা,মলা,কৈ,শিং ও মাগুর জাতীয় মাছ পুকুর জলাশয়ে চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে রুই,কাতলা,মৃগেল ও পাংগাস মাছের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। তাই ফুলবাড়ীর গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোতে চাষের মাছ দিয়ে ভরে যাচ্ছে। তাই আমরা ভুলতে বসেছি দেশী মাছের চেনা স্বাদ।
উপজেলার পৌর এলাকার চকচকা গ্রামের আতাউর রহমান জানান,ছোটকালে নদী-নালায় মাছ ধরতে ধরতে বড় হয়েছি। কিন্তু এখন আর আগের মত মাছ চোখে পড়েনা। উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়ানের আবু শহীদ বলেন,অধিক ফলনের আশায় জমিতে নানা ধরনের কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করায় এসব মাছ মারা যাচ্ছে। বংশ বিস্তার হচ্ছে না। নদী-নালা ও খাল-বিলে এক শ্রেনীর জেলে দাড়কি,কারেন্ট জাল,ফাঁসিজাল,ঘেরজালসহ ছোট ফাঁসের বিভিন্ন ধরণের জাল ব্যবহার করে রেনুপোনা নিধন করায় মাছের বংশ বিন্তার বাধা গ্রস্ত হচ্ছে। 
উপজেলার বর্তমান ছোট বড় মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায় দেশীয় প্রজাতির মাছের সংখ্যা খুবই সীমিত। যা আছে তার চড়া দাম হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কিনতে হিমসিম খাচ্ছে। যদিও কিছু সুস্বাদু মাছ হাটবাজারে ওঠে তাও চলে যায় বিত্ত্ববানদের হাতে। ফলে সাধারণ মানুষের কপালে এসব মাছ আর জোটে না। 
উপজেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন,দেশের জলবায়ূ পরির্বতনের প্রভাবেও নদ-নদীতে মাছের প্রজননে অন্তরায় হচ্ছে। এছাড়াও তিনি মাছের মজুদ কমে যাওয়ায় ওভারফিশিংকে দায়ী করেন।
উপজেলার  এম,এ কাইয়ুম বলেন,ছোট যমুনা নদীর দুষন ঠেকাতে এলাকার সকলকে সচেতন হতে হবে। ছোট যমুনা নদীর নিয়মিত ড্রেজিং এবং নদীর পাড়ে কোন-কল-কারখানা স্থাপন না করার উপর গুরুপ্তরোপ করতে হবে এবং ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলা যাবে না এতে নদী দুষন হবে ।

ফুলবাড়ী উপজেলা মৎস্য অফিসার জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ৮৭টি সরকারী পুকুররের মধ্যে ৪টি পুকুর আমার দপ্তরের জন্য লিজের প্রস্তাব দিয়েছি। পুকুর গুলি পেলে নিজস্ব উদ্যোগে সেখানে আমরা বিলু্িপ্ত হওয়া দেশীয় মাছের পোনা তৈরী করে উপজেলার মাছ চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরন করে  দেশি মাছ চাষের প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তোলার চেষ্টা কবরো।এতে কিছুটা হলেও দেশী মাছের চাহিদা পুরন হবে ।

পুরোনো সংবাদ

দিনাজপুর 4268993856195447417

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item