ফলোআপ:ঠাকুরগাঁওয়ে নারীকে নগ্ন করে নির্যাতন: মামলা তুলে নিতে চাপ

আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় কতিপয় যুবলীগ নেতারা ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে শিউলি বেগম নামে নারীকে 'নগ্ন করে নির্যাতনের’ ঘটনায় মামলা করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ওই নির্যাতিতা নারী ও তার পরিবার।
অপর দিকে মামলা তুলে নিতে ঠাকুরগাঁও সদর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাকিলা ও চেয়ারম্যান চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা মহিলা ওই মামলার বাদী শিউলী বেগম।
শিউলী বেগম জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মাস্টারের পা ধরে বার বার আকুতি করলেও আমাকে ছাড়েননি। একের পর এক লাথি মেরেছেন। সকলের সামনে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য কেদার নাথ, যুবলীগ নেতা রায়হানসহ আমাকে নগ্ন করে নির্যাতন করেছে। আমি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের নাম উল্লেখ করলেও পুলিশ তার নাম কেটে দিয়ে অন্যজনের নাম দিয়েছে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশের পর চাপে পুলিশ ইউপি সদস্য কেদার নাথ, যুবলীগ নেতা রায়হানকে গ্রেফতার করে। আসামী দুইজন জামিন পাওয়ার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাকিলা ও চেয়ারম্যানের লোকজন মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে আমার মামলায় এক সাক্ষীকে ফাঁসানোর জন্য চেয়ারম্যানের লোকজন একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
নির্যাতিত নারীর ছোট মেয়ে বৃষ্টি জানায়, টিপ-সই দেয়ার নাম করে তার মাকে বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। মামলায় চেয়ারম্যানের নাম দেওয়া হয়েছিল কিন্তু পুলিশ চেয়ারম্যানের কাছে টাকা নিয়ে নাম কেটে দিয়েছে। আমরা গরিব বলে বিচার পাচ্ছি না। বিভিন্ন ভাবে আমাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মাস্টারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই মহিলা ভাল না। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মহল পায়তারা করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শাকিলার কাছে মামলা তুলে নেওয়ার চাপ সৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শিউলীকে মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলি নাই। আসামী গ্রেফতার নিয়ে শিউলী নিজেই বিরক্ত করছে। পুলিশ মামলার তদন্ত অনুযায়ী আসামীদের গ্রেফতার করবে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) এটিএম সিফাতুল মাজদার জানান, শিউলী বেগমের মামলাটি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। দ্রুত বাকী আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর খোঁচাবাড়ি এলাকায় শিউলী বেগম স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর বাড়ির সামনে একটি দোকান করত। ব্যবসার খাতিরে খোঁচাবাড়ী হাটের ব্যবসায়ী ও গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের মধ্যে ওই নারীর ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই নারী যে জমির ওপর বসতভিটা গড়ে তুলেছিল সেই জমির ওপর চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আনিসুরের নজর পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি দখলের জন্য নানাভাবে কৌশল করতে থাকেন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় যুবলীগ নেতারা। ভিটে মাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য ইতোপূর্বে একাধিকবার হুমকিও দেন চেয়ারম্যানের লোকজন। ছেড়ে না দিলে দুই লাখ টাকা দাবিও করা হয়। সেই কথায় রাজি না হলে গৌরীপুর গ্রামের প্রমথ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ওই নারীর অবৈধ সম্পর্ক বলে এলাকাবাসীর কাছে কিছু সুবিধাভোগী মানুষ নানা কথা ছড়ায় এলাকাবাসী। এরপর (১০ মে) রোববার রাতে জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলালের নির্দেশে যুবলীগ নেতা রায়হানের কর্মীরা তিন সন্তানের ওই জননীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিষদে তাকে নগ্ন করে নির্যাতন করা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন শিউলী বেগমকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় পরে শিউলি বেগম বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

পুরোনো সংবাদ

নির্বাচিত 1254942344120915384

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item