অকেজো দশায় ঠাকুরগাঁওয়ের শিশু বিনোদন কেন্দ্রগুলো

আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও  প্র‌তি‌নি‌ধিঃ
যদি পার্কের সবকিছু ঠিক থাকত তাহলে আমাদের খেলাধুলার জন্য অনেক ভালো হত। জানি না এসব কবে ঠিক হবে।” ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রমপাড়া পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ময়মুনা মোস্তারিন মুমু।

বলা হয় আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের সঠিক মেধা বিকাশের জন্য যেমন শিক্ষার প্রয়োজন ঠিক তেমনি প্রয়োজন আনন্দ ও বিনোদনের। সেই বিনোদনের জন্য প্রয়োজন সুন্দর একটি পরিবেশের। এ লক্ষ্য নিয়েই নির্মিত হয়েছিল ঠাকুরগাঁওয়ের শিশু বিনোদন কেন্দ্রগুলো। কিন্তু নির্মাণের পর কোনো সংস্কার না হওয়ায় বিনোদন কেন্দ্রের জিনিসগুলো নষ্ট ও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এমনই অবস্থায় আছে ঠাকুরগাঁও আশ্রমপাড়ার পার্কটি।
১৯৬৫ সালে তৎকালীন সরকার শিশুদের বিনোদনের জন্য ৩১ শতাংশ জমির ওপর শহরের আশ্রমপাড়ায় নির্মাণ করে শিশুপার্কটি। কিন্তু জায়গা অল্প হওয়ায় এখানে তেমন কোনো খেলার সরঞ্জাম বসানো হয়নি। হাতেগোনা দুটি দোলনা, দুটি স্লিপার, দুটি স্প্রিং বোর্ড ছাড়া এখানে আর কিছুই নেই। বসার জন্য সিমেন্টের তৈরি কিছু বেঞ্চ থাকলেও সেগুলো ভেঙ্গে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে।
সারেজমিনে দেখা যায়, পার্কের বিনোদনের জন্য যে জিনিসপত্র ছিল, তার কোনোটি নেই আগের মতো। হয়নি কোনো সংস্কারও। লোহার খেলনাগুলো মরিচা ধরে খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভেঙ্গে পড়ে আছে প্রতিটি জিনিসের কিছু না কিছু। দেখাশুনার জন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পার্কের পুরো মাঠেই নোংরা আর আবর্জনায় ভর্তি। আর সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে কাদায় ভরে যায় পুরো এলাকা। পার্কের এমন বেহাল দশা সত্বেও আর কোনো বিকল্প না থাকায় অনেক শিশুই এখানে খেলতে যায়।
কথা হয় পার্কে আসা অভিভাবক আরিফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “প্রথম প্রথম পার্কে বিকেল হলেই অনেক বাচ্চারা এসে খেলাধুলা করতো। কিন্তু অবস্থা দিন দিন অবনতির কারণে ই পার্কে বলতে গেলে আগের মতো বাচ্চাদের আসতে দেখা যায় না।”
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, পার্কের ভেতর থেকে রড চুরি হচ্ছে। এটি দেখভালের কেউ নেই। তাই এখানে আধুনিক সরঞ্জাম বসিয়ে পার্কটি ঝকঝকে করারও দাবি জানান তিনি।
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া রাফিয়া তানজুম রাফির মা আতিয়া বেগম বলেন, “যেখানে খেলাধুলার মতো কিছুই নাই সেখানে বাচ্চাদের নিয়ে গিয়ে কী করবো। তাছাড়া সব সময় বখাটেদের আড্ডা বসে এখানে। তাই আর যাই না।”
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিন বলেন, “জায়গা স্বল্পতার কারণে শিশুপার্কে খেলার সামগ্রী বসানো যাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে সংস্কার করা হয়। বড় ধরনের জায়গা পাওয়া গেলে পৌরসভায় নতুনভাবে আধুনিক শিশুপার্ক তৈরি করা হবে।”
একই অবস্থায় আছে জেলা পরিষদের শিশু পার্কটি। শিশুদের বিনোদনের জন্য ২০১০-১১ অর্থ বছরে ২৪ লাখ টাকা খরচ করে শহরের টাঙ্গন নদীর ধারে শিশুপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে মাটি ভরাট, প্রাচীর নির্মাণ, প্রবেশ পথ এবং টিকেট ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুই বছরেও এখানে কোনো রাইডার ও খেলার অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়নি। পুরো মাঠ জঙ্গলে পরিণত হয়ে আছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ প্রশাসক সাদেক কুরাইশি জানান, চেষ্টা চলছে পার্কটি ভালোভাবে তৈরি করে জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করার। খুব তাড়াতাড়ি পার্কটি পুনঃনির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 702501088177983752

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item