অসাম্প্রদায়িক সমাজ রবীন্দ্রনাথের চেতনায় লালিত: রাষ্ট্রপতি

ডেস্কঃ

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আজ জোর দিয়ে বলেছেন, নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেতনা ও আদর্শই হচ্ছে সব ধরনের শোষণ, বঞ্চনা, চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদ মুক্ত একটি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা।

আজ সোমবার বিকেলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে জাতীয় কর্মসূচির উদ্বোধন কালে তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ নিছক একটি নির্দিষ্টকালের কবি নন; তিনি বাঙ্গালীর সর্বকালের গর্ব। তিনি আমাদের সীমাহীন অনুপ্রেরণার উৎস এবং দেশপ্রেম, মানবতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সার্বজনীন সচেতনতা প্রতিষ্ঠার এক দুঃসাহস।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িক শক্তির উত্থানের প্রেক্ষিতে রবীন্দ্র চর্চা এখনও খুবই প্রাসঙ্গিক। দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী উন্নয়ন, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিষয়ে তাঁর ভাবনা ও কাজ এখনও আমাদের অনেক ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা যোগায়।’

তিনি বলেন, কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ধারণা এসেছে তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘পতিসর কৃষি সমবায় ব্যাংক’ থেকে। রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে কৃষক ও শ্রমজীবী জনগণকে জমিদারদেও শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে এটি ছিল একটি মাইলফলক।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এই কৃষি ব্যাংকের জন্য রবীন্দ্রনাথ তাঁর নোবেল পুরস্কারের অর্থ থেকে এক লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি তাঁর পুত্র-পুত্রবধূ এবং অন্যদের কৃষি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে দেশের কৃষি উন্নয়নে কাজ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, নোবেল বিজয়ী এই কবি গ্রামের মানুষকে আত্মনির্ভরশীল ও শিক্ষিত দেখতে চেয়েছিলেন

এবং পরবর্তীতে তিনি গ্রাম সমাজ, সমবায় সমিতি, কৃষি গবেষণাগার, স্বাস্থ্য সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা শুরু করেন। তিনি কৃষির আধুনিকীকরণ এবং কুটির শিল্পের বিকাশে কাজ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষকদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের খুব গভীর সম্পর্ক ছিল এবং তিনি তাঁর জমিদারি দেখশোনার জন্য সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিশর এবং কুষ্টিয়া শিলাইদহে অবস্থানকালে এসব এলাকার মানুষের কাছে খুব কাছাকাছি এসেছিলেন।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমবায় ব্যবস্থার ধারণার আলোকে গ্রাম ও শহরের মধ্যকার ক্ষমতা ও সম্পদের ব্যবধান কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি এই মহান কবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্য গর্বিত যিনি বিশ্ব দরবারে আমাদের বাংলা সাংস্কৃতি ও সাহিত্যের মর্যাদা সমন্নত করেছেন। কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, সাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রকর, প্রবন্ধকার, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক হিসেবে তার অনবদ্য সৃষ্টির জন্য বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ তার কাছে ঋণী।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, পৃথিবী একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হওয়ায় রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও দর্শনের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে।

রবীন্দ্রনাথে স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকল বিশেষ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অন্যান্যের মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এমাজউদ্দিন প্রামানিক, মোহাম্মদ ইসরাফিল আলম এমপি, অধ্যাপক ড. হায়াত মামুদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন খান এবং সংশ্লিষ্ট সিনিয়র বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 4584679988434643355

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item