রংপুর কৃষি অঞ্চলের কৃষি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল

বিশেষ প্রতিনিধি ৪ মে॥
কৃষি বিভাগ রংপুর অঞ্চলের ৫জেলার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বোরো ধান ক্ষেতে  নেক ব্লাস্ট(শীষমরা রোগ) ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকদের পাশে থেকে সহায়তা প্রদানে  মন্ত্রনালয় হতে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদানে পাশাপাশি সকল ছুটি বাতিল করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
বোরো চাষীদের অভিযোগ ধানী জমি গুলোর পাতা জ্বলে যাচ্ছে এবং শীষ পুড়ে গেছে। কোন শীষে ধান নেই।ফলে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না। নেক ব্লাস্ট (শীষমরা রোগ) বিশেষ করে  কিছু ব্রী-২৮, ২৯, ৫৯ ও ৬১ জাতে দেখা দিলেও এর প্রভাব সব থেকে বেশী ব্রী-২৮শে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এখন অনেক এলাকায় ধান কর্তন শুরু করেছে কৃষক।
আজ বৃহস্পতিবার রংপুর কৃষি অঞ্চল অফিস সুত্রে জানা যায় এবার রংপুর কৃষি অঞ্চলে ৫ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ লাখ ২২৮৪ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়  বেশী ৫ লাখ ৫৩৪৯ হেক্টরে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে বেশী। এরমধ্যে নীলফামারীতে ৮২ হাজার ১১০ হেক্টরে, রংপুরে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০ হেক্টরে, গাইবান্ধায় ১ লাখ ৯৬১২ হেক্টরে, কুড়িগ্রামে ১ লাখ ১০ হাজার ৫০২ হেক্টরে ও লালমনিরহাটে ৫০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে।
কৃষকরা বলছে তাদের মোট বোরো আবাদের ৪০ ভাগ ব্রী-২৮ জাতের ধান আবাদ করে তারা। এবার বোরো ধান আবাদে  প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক ব্যবহারের পর ফলনও ভালোই হয়েছিল। কিন্তু  হঠাৎ করে বোরো ধান ক্ষেতে গাছ মরা রোগ দেখা দেয়। যা পরবর্তিতে ছড়িয়ে পড়ে ধানের শীষে। প্রথমে ধানের পাতা পুড়ে যাচ্ছে। ফলে ধানের শীষ গজানোর পরে শীষগুলো জ্বলে গেছে পাতানি হয়ে গেছে। ফলে ধান নেই ক্ষেতে। তাদের মতে প্রতিটি জেলায় শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ধানক্ষেত নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত। কৃষকরা বলছেন, এক জমিতেনেক ব্লাস্ট রোগ থাকলেও রাতারাতি পাশের ক্ষেতটিও আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। বেশির ভাগ শীষে ধান নেই। ফলে উপায় না দেখে কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন তারা। কৃষকদের ধারনা ছিল এবার তারা ব্রী-২৮ জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৮ হতে ৩৫ মন পেতো। এখন সে হিসাবে গুড়ে বালি।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের লোকজন সময় মতো ব্যবস্থাপত্র দিলে তারা হয়তো ধানক্ষেত রক্ষা করতে পারতেন।
তবে রংপুর কৃষি অঞ্চল অফিস সুত্র মতে নেক ব্লাস্ট  (শীষমরা রোগ) এখন নিয়ন্ত্রনে। যেভাবে মহামারী আকার বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। তাদের মাঠ পর্যায়ের হিসাব মতে এই রোগে নীলফামারীতে ২৯ দশমিক ৫ হেক্টর, লালমনিরহাটে ২২ দশমিক ১ হেক্টর, রংপুরে ৩০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ৩৯ দশমিক ৫ হেক্টর ও কুড়িগ্রামে ২৪ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়। যা নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে কৃষককুল ধান কর্তন শুরু করেছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত এই ৫ জেলায় কৃষকরা ধান কর্তন করে শতকরা ১০ ভাগ জমির। যা আজ বৃহস্পতিবার কর্তন চলছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ ইদ্রিস জানান, এপ্রিল মাসের টানা বেশ কিছুদিন অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় ধান গাছে দেওয়া কীটনাশক পানিতে ধুয়ে  যাওয়ায় ক্ষেতগুলোতে নেক ব্লাস্ট  রোগ দেখা দেয়।
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ধানক্ষেত রক্ষায় প্রয়োজনীয় কীটনাশকসহ পরামর্শদানের জন্য গ্রামে গ্রামে প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং করা হচ্ছে।#

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1955149678055097165

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item